ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলায় উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও মাদ্রাসা কমিটির সহ-সভাপতি রুহুল আমিনকে পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও পিবিআইয়ের পরিদর্শক শাহ আলম জানান, বৃহস্পতিবার বিকেলে ৫ দিনের রিমান্ড শেষে ফেনীর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাকির হোসাইন এর আদালতে হাজির করলে আদালত এ আদেশ দেন।
এর আগে রুহুল আমিনকে শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) সোনাগাজীর তাকিয়া রোড থেকে গ্রেফতার করা হয়। পরদিন শনিবার বিকেলে তাকে ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শরাফ উদ্দিন আহমেদের আদালতে তুলে সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক শাহ আলম। আদালত তার পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
গত ৬ এপ্রিল মাদ্রাসায় আলিম পরীক্ষার কেন্দ্রে গেলে ছাদে ডেকে নিয়ে নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে পালিয়ে যায় মুখোশধারীরা। এর আগে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলার বিরুদ্ধে করা শ্লীলতাহানির মামলা প্রত্যাহারের জন্য নুসরাতকে চাপ দেয় তারা। ২৭ মার্চ সিরাজের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির মামলা হয়েছিল।
দগ্ধ নুসরাতকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতাল এবং পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১০ এপ্রিল রাতে মারা যায় নুসরাত।
পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় প্রথম থেকেই আলোচনায় মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সহ-সভাপতি রুহুল আমিনের নাম। এ মামলায় গ্রেফতার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলার ঘনিষ্ঠ নুর উদ্দিন ও শাহাদাত হোসেন শামীম আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে জানান, নুসরাতকে পোড়ানোর ঘটনা শুরু থেকেই জানতেন রুহুল।
শামীম তার জবানবন্দিতে জানান, নুসরাতের শরীরে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার পর তিনি দৌড়ে নিচে নেমে উত্তর দিকের প্রাচীর টপকে বের হয়ে যান। বাইরে গিয়ে মোবাইল ফোনে বিষয়টি রুহুল আমিনকে জানান। প্রত্যুত্তরে রুহুল আমিন বলেন, ‘আমি জানি। তোমরা চলে যাও।’
এই হত্যা মামলায় এখন পর্যন্ত এজহারভুক্ত ৮ জনসহ মোট ১৯ জন গ্রেফতার হয়েছেন। স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন পাঁচ জন। ১৩ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। আদালতের নির্দেশে এ মামলার তদন্ত করছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন।
এছাড়া শ্লীলতাহানির অভিযোগ করতে থানায় যাওয়ার পর নুসরাতের ভিডিও ধারণ করে ছড়িয়ে দেওয়ায় ১৫ এপ্রিল সোনাগাজী থানার ওই সময়ের ওসি (পরে প্রত্যাহার) মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে আইসিটি আইনে মামলা করা হয়েছে। এ মামলাও তদন্তের জন্য পিবিআইকে দায়িত্ব দিয়েছেন আদালত।
বিএ-০৮/২৫-০৪ (আঞ্চলিক ডেস্ক)