দেশে প্রতিবছর জন্ম নেয়া ৩০ লাখ শিশুর মধ্যে ৪ লাখ অপরিণত

বাংলাদেশে প্রতিবছর জন্ম নেয়া ৩০ লাখ শিশুর মধ্যে প্রায় চার লাখ শিশু অপিরণত। এ সংখ্যা জন্ম নেওয়া শিশুর মোট সংখ্যার সাড়ে ১২ শতাশের বেশি। জন্মের ২০-৩০ দিনের মধ্যে চক্ষু পরিক্ষার মাধ্যমে চক্ষু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুয়ায়ী চিকিৎসা না করালে শিশু পুরোপুরি অন্ধ হয়ে যেতে পারে।

সোমবার দুপুরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের সেমিনার হলে রেটিনোপ্যাথি অব প্রিম্যাচিউরিটি (আরওপি) বিষয়ক সেমিনারে বক্তারা এ তথ্য প্রকাশ করেন। চমেক হাসপাতালের চক্ষু বিভাগের উদ্যোগ ও অরবিস ইন্টারন্যাশনালের সহযোগিতায় সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন চমেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. সাহেনা আক্তার। স্বাগত বক্তব্য রাখেন অরবিস ইন্টান্যাশনাল বাংলাদেশ এর ডিরেক্টর অব প্রোগ্রামস মোহাম্মদ আলাউদ্দিন, সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন চমেক হাসপাতালের চক্ষু বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. উৎপল সেন ও বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ উস্থাপন করেন চক্ষু হাসপাতালের এসোসিয়েট কনসালটেন্ট(রেটিনা) ডা. সাহেলা শারমিন।

হাসপাতালের চক্ষু বিভাগের প্রধান ডা. তনুজা তানজিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন চমেক হাসপাতালের গাইনী বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. শর্মিলা বড়–য়া, নবজাতক বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. জগদীশ চন্দ্র দাশ, শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. রাশেদা সামাদ এবং ডা. এস. এম তারেক। সেমিনার উপস্থাপনা করেন ডা. সৈয়দা ফারিয়া তুজ ফাতিমা ও ডা. অনিন্দিতা চৌধুরী।

প্রধান অতিথি ছিলেন চমেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. সাহেনা আক্তার বলেন, আরওপি এমন একটি রোগ, যা অপরিণত নবজাতক শিশুদের রেটিনায় রক্তক্ষরণ ও ক্ষত সৃষ্টি করে। এর পরিণাম আজীবনের জন্য অন্ধত্ব। তবে অপরিণত নবজাতক শিশুদের জন্মের এক মাসের মধ্যে সঠিক চিকিৎসা দেওয়া হলে খুব অল্প সময়ের মধ্যে এবং কম খরচেই এই অন্ধত্ব মোকাবিলা সম্ভব। চমেক হাসপাতালের চক্ষু ও নবজাতক বিভাগের যৌথ উদ্যোগে ও ইউনিসেফের সহায়তায় রেটিনোপ্যাথি অব প্রিম্যাচিউরিটি (আরওপি) সেবা চালু করা হয়েছে।

অরবিস ইন্টান্যাশনাল বাংলাদেশ এর ডিরেক্টর অব প্রোগ্রামস মোহাম্মদ আলাউদ্দিন বলেন, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অরবিস ইন্টারন্যাশনাল ১৯৮২ সালে তার যাত্রা শুরুর পর বাংলাদেশে ১৯৮৫ সাল থেকে কাজ করছে। অরবিস ২০১২ সালে ঢাকায় একটি হাসপাতালে আরওপি প্রকল্পের মাধ্যমে পরীক্ষা ও চিকিৎসাকেন্দ্র চালু করে। তবে সব জেলায় আরওপি চিকিৎসাসেবা পৌঁছানো প্রয়োজন। আরওপি সেবা প্রদানে কয়েকটি জেলাতে মানবসম্পদ তৈরি করা হয়েছে।

মূল প্রবন্ধে চমেক হাসপাতালের চক্ষু বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. উৎপল সেন বলেন, আরওপি প্রতিরোধ ও চিকিৎসার জন্য জনসচেতনতা, প্রয়োজনীয় অবকাঠামো ও দক্ষ জনশক্তি ও সমন্বিত নবজাতকের মানসম্মত সেবা খুব সীমিত সংখ্যক হাসপাতালে আছে। আরওপিজনিত অন্ধত্ব দূর করতে হলে সচেতনতার কোনো বিকল্প নেই। এভাবে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের দৃষ্টি সুরক্ষার মাধ্যমে আমরা তাদের সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে একটি উৎপাদনশীল জীবন উপহার দিতে পারি।

এসএইচ-১৭/১৩/২১ (ন্যাশনাল ডেস্ক)