বিএসএফের বাধায় ফের বন্ধ কসবা ও সালদা রেলস্টেশনের কাজ

ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) বাধার কারণে আবারও বন্ধ হয়ে গেল কসবা এবং সালদানদী রেলওয়ে স্টেশনের নির্মাণ কাজ। তবে সালদা নদীর ওপর নির্মিত রেলওয়ে সেতু নির্মাণে কোনো ধরনের বাধা নেই বলে বিএসএফের পক্ষ থেকে জানানো হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভারত-বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সীমান্তের কাছাকাছি হওয়ায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা রেলওয়ে স্টেশন, সালদা নদীর ওপর নির্মিতব্য সেতু এবং সালদা রেলওয়ে স্টেশনের কাজ গত এক বছর আগে বন্ধ করে দেয় বিএসএফ।

কারণ হিসেবে রেলসেতু ও রেলওয়ে স্টেশন নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স তমা কনস্ট্রাকশন লিমিটেড কর্মকর্তাদের জানান, ভারত সীমান্তের দেড়শ গজের মধ্যে রেলওয়ে স্টেশন, সেতুসহ স্থাপনাগুলো পড়েছে। এসব স্থাপনা নির্মাণে দুই দেশের আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে। তাই পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত কাজগুলো বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন। পরে গত কয়েকদিন আগে স্থাপনাগুলোর কাজ বন্ধ থাকার বিষয় নিয়ে একাধিক গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়।

সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর দুই দেশের সরকারের উচ্চ পর্যায়ের আলোচনা হয়। পরে চলতি বছরের ২৫ ডিসেম্বর স্থাপনাগুলো নির্মাণ কাজ আবারও চালু করার বিষয়ে গ্রিন সিগন্যাল দেয় বিএসএফ। কিন্তু এর দুইদিন পর গত ২৭ ডিসেম্বর বিকেলে আবারও কসবা এবং সালদা দুটি রেলওয়ে স্টেশনের কাজ বন্ধ করে দেয় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী।

তবে সালদা নদীর ওপর চলমান রেলওয়ে সেতু নির্মাণে বাধা নেই বলে বিএসএফের পক্ষ থেকে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে জানানো হয়। এ অবস্থায় আবারও থমকে গেল কসবা এবং সালদা রেলওয়ে স্টেশনের নির্মাণ কাজ।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে রেলসেতু ও রেলওয়ে স্টেশন নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স তমা কনস্ট্রাকশন লিমিটেডের একজন সাইড ইঞ্জিনিয়ার (সিভিল) জানান, বিএসএফের বাধার মুখে গত এক বছর ধরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা রেলওয়ে স্টেশন, সালদা রেলওয়ে সেতু এবং সালদানদী রেলস্টেশনের কাজ বন্ধ করে দেয় বিএসএফ। বন্ধ করার কারণ সম্পর্কে বিএসএফ আমাদেরকে জানান, নোম্যান্স ল্যান্ডের দেড়শ গজের মধ্যে স্থাপনাগুলো পড়েছে। আন্তর্জাতিক আইনি জটিলতার কথা বলে বিএসএফ কাজগুলো বন্ধ করে দেয়। পরে গণমাধ্যমে এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করার পর গত ২৫ ডিসেম্বর আবারো কাজ করার অনুমতি দেয় বিএসএফ।

পরে দু’দিনের মাথায় গত ২৭ ডিসেম্বর বিকেলে বিএসএফের পক্ষ থেকে জানানো হয় সালদা রেলওয়ে সেতুর কাজ করা যাবে। এ ব্যাপারে সবুজ সংকেত পেয়েছেন তারা। কসবা রেলওয়ে স্টেশন ও সালদা রেলওয়ে স্টেশন নির্মাণ কাজ চালু করার ব্যাপারে তারা তাদের ওপর মহল থেকে এখনো সবুজ সংকেত পাননি। যার কারণে বাকি দুটি স্থাপনার কাজ বন্ধ রাখাতে বলে বিএসএফ।

এ ব্যাপারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ব্রাহ্মণবাড়িয়া সুলতানপুর ৬০ বিজিবি ব্যাটালিয়নের একজন কর্মকর্তা জানান, যেহেতু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বলেছে কাজ বন্ধ রয়েছে। সেটাই সঠিক। তবে এ ব্যাপারে এখনই কোনো মন্তব্য করতে চাচ্ছি না। দু’দেশের বিষয় হওয়ায় পরে এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানানো হবে।

এদিকে সম্প্রতি সময়ে ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী তার নিজ দেশ ভারতে ফেরার পথে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আখাউড়া স্থলবন্দরে দুইদেশের শূন্যরেখায় স্থাপনাগুলো নির্মাণকাজ বন্ধ সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি সাংবাদিকদের জানান, সীমান্তে বিদ্যমান সমস্যাগুলো দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী উচ্চ পর্যায়ে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক এর মাধ্যমে সমাধান করবেন।

চিমকি আস্তানা থেকে লাকসাম পর্যন্ত ডুয়েল গেজ রেলওয়ে প্রকল্পের নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। দ্বিতীয় পর্যায়ে কুমিল্লা থেকে আখাউড়া পর্যন্ত ৪৭ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ কাজে দফায় দফায় বাধা আসছে। আগামী ২০২৪ সালের মধ্যে এই প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।

এসএইচ-২২/২৯/২১ (আঞ্চলিক ডেস্ক)