চা শ্রমিকরা রোববার ফিরছেন কাজে

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চা বাগান মালিকদের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনার পর চা বাগানের শ্রমিকদের মজুরি একশো ৭০ টাকা নির্ধারণ করে শ্রমিকদের কাজে যোগদানের আহ্বান জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর এই উদ্যোগের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে চা শ্রমিকেরা কাজে যোগদান করবেন বলে জানিয়েছেন। এতে টানা ১৯ দিন পর সিলেট জেলার ২৪টি এবং মৌলভীবাজারের ৯৩টি চা বাগানের শ্রমিকরা তাদের অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। এতে অচল হয়ে থাকা এ জেলার চা বাগানগুলো আবার সচল হয়ে উঠছে।

গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে শনিবার বিকেলে চা বাগান মালিকপক্ষের বৈঠকের পর শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ৫০ টাকা বাড়িয়ে ১৭০ টাকা ঘোষণা করা হয়। এরপর শ্রমিকরা তা মেনে নিয়েছেন।

তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন শ্রমিক জানিয়েছেন, ৩০০ টাকা না পাওয়ায় অনেকের চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। এদিকে শ্রীমঙ্গল ভাড়াউড়া চা বাগানে সন্ধ্যার পর প্রথমে আনন্দ মিছিল করার কথা থাকলেও পরে তা আর হয়নি।

প্রধানমন্ত্রীর মুখে নতুন মজুরি ঘোষণার আশায় জেলার সবকটি বাগানের মোড়ে মোড়ে বসে অপেক্ষায় ছিলেন শ্রমিকরা।

বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যায় বৈঠক শেষ হয় এবং মজুরি ১৭০ টাকা ঘোষণা করা হয়। এতে টানা ১৯ দিনের ধর্মঘটের অবসান ঘটে। রোববার থেকে শ্রমিকরা কাজে যোগ দেবে বলে জানিয়েছেন শ্রমিক নেতারা।

বাংলাদেশ শ্রমিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক বিজয় হাজরা সাংবাদিক ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে জানান, মজুরি ১৭০ টাকা প্রধানমন্ত্রী নির্ধারণ করে দিয়েছেন। আমরা কৃতজ্ঞতার সঙ্গে মেনে নিয়েছি। তবে শ্রম আইনের সংশোধন ও জমিজমা সংক্রান্ত আরও বেশ কিছু দাবি দাওয়া বাস্তবায়নের দাবি জানান তিনি।

বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানিয়েনে। তিনি বলেন, পুরো শ্রমিকজাতি চেয়ে ছিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মুখের দিকে। তিনি মজুরি ঘোষণা করেছেন শ্রমিকেরা মেনে নিয়েছে। কাল থেকে কাজে ফিরে যাবে। তিনি মানসম্মত মজুরি নিধারণ করে দিয়েছেন তাঁর প্রতি আমরা চির কৃতজ্ঞ।

শ্রমিকরা ৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে প্রথমে তিন দিন ২ ঘণ্টার কর্মবিরতি পালন করেন। এতে মালিক পক্ষ থেকে কোন সাড়া পাননি। পরবর্তীতে তারা অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট শুরু করেন। জেলা প্রশাসন ও শ্রম বিভাগ এ ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নিতে একাধিকবার বৈঠক করেন। তবে এ বৈঠকে কোনো সমাধান আসেনি। শ্রমিকরা প্রধানমন্ত্রীর মুখে মজুরির ঘোষণা শোনার দাবি জানান। অবশেষে প্রধানমন্ত্রী চা শ্রমিকদের মজুরি ঘোষণা করলেন।

এসএইচ-২৫/২৭/২২ (আঞ্চলিক ডেস্ক, সূত্র : সময়)