‘শয়তানের নিশ্বাস’ ঘুরছে ফরিদপুরে, খুঁজছে পুলিশ

ভয়ংকর মাদকের প্রভাবে ফরিদপুরে একাধিক ব্যক্তি তাদের মূল্যবান সোনা-গহনা স্বেচ্ছায় তুলে দিয়েছেন অপরাধীদের হাতে। এমন দুটি ঘটনার শিকার ভুক্তভোগীরা থানায় অভিযোগ করেছেন।

‘ডেভিলস ব্রেথ’ বা ‘শয়তানের নিশ্বাস’ নামে পরিচিত স্কোপোলামিন নামক ড্রাগের মাধ্যমে ঢাকায় এর আগে এভাবে মালামাল নিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটলেও এবার ফরিদপুরেও ঘটছে এমন ঘটনা। ধারণা করা হচ্ছে, তিন ব্যক্তি শহরে এ অপরাধ করে এখনো গ্রেফতার এড়িয়ে থাকতে সক্ষম হচ্ছে।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ফরিদপুরের গোয়ালচামট গৌর গোপাল আঙিনা এলাকার বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য মো. ইদ্রিস তালুকদারের (৭৫) স্ত্রী আলেয়া বেগম (৬২) মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তার নানা ও নানুর পেনশনের টাকা ব্যাংক থেকে তুলে বাড়ি ফেরার জন্য শহরের ইমাম স্কয়ার থেকে একটি অটোরিকশায় ওঠেন। ওই রিকশায় চালক ও দুজন যাত্রী ছিলেন। ইদ্রিস তালুকদার সামনে চালকের পাশে আর আলেয়া বেগম পেছনের সিটে বসেন। এ সময় অটোতে বসা দুজন আলেয়া বেগমকে নিচে পড়ে থাকা একটি কাগজ দেখিয়ে বলেন, দেখেন তো এটি আপনার জরুরি কোনো কাগজ কি না।

তখন আলেয়া বেগম বলেন, আমি তো চশমা আনিনি। এ কথা বলার পর তারা কাগজটি আলেয়া বেগমের নাকের কাছে নিয়ে দেখায়। এরপরই আলেয়া বেগম তাদের কথামতো তার গলার চেইন, কানের দুল ও হাতের আংটি তাদের হাতে খুলে দেন। এরপর তারা এসব মালামাল নিয়ে ওই দম্পতিকে কিছুদূর পর্যন্ত নিয়ে মিয়া পাড়া সড়কের কাছে নামিয়ে দেয়। যাওয়ার সময় তারা ভাঁজ করা ওই কাগজটি তার হাতে ধরিয়ে দেয়। যার মধ্যে সোনালি রঙের প্লাস্টিকজাতীয় কিছু ছিল।

এদিকে বাড়ি ফেরার পরও অনেকটা সময় মোহগ্রস্ত ছিলেন আলেয়া বেগম। অনেক সময় পর তার ছেলের জিজ্ঞাসাবাদে সব খুলে বললে তারা বুঝতে পারেন প্রতারক চক্রের খপ্পরে তারা সবকিছু খুইয়েছেন।

এ ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় মঙ্গলবার একটি জিডি করা হয়েছে। তবে পুলিশ বলছে, ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনেও এমন একটি ঘটনার অভিযোগ পেয়েছে তারা। ওই ঘটনায় ভুক্তভোগী তার নগদ টাকা ও মোবাইল ফোন তুলে দিয়েছেন অপরাধীদের হাতে।

জানা গেছে, অপরাধীদের টার্গেট হওয়ার পর এরা এই ভয়ংকর মাদকের শিকার হয়ে নিজের কাছে থাকা সবকিছু সামান্য অনুরোধেই তুলে দেয় অপরাধীদের হাতে। অনেকে একে শয়তানের নিশ্বাস বলে থাকেন। যার সংস্পর্শে মানুষ নিমেষে সব ভুলে যান। যার ফলে টাকাপয়সা, সোনাদানা, মোবাইল, এমনকি নিজের ইজ্জত পর্যন্ত স্বেচ্ছায় খোয়াতে হয় এদের খপ্পরে পড়লে।

এ ব্যাপারে ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সুমন রঞ্জন সরকার বলেন, অভিযোগগুলো গুরুত্বের সঙ্গে নেয়া হয়েছে। সিসি ক্যামেরা দেখে জড়িত অপরাধীদের শনাক্ত করে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

এসএইচ-২১/০৭/২২ (আঞ্চলিক ডেস্ক)