ইউপি সদস্যদের ‘মারধর’ করলেন চেয়ারম্যানের ভাড়াটে লোক

রাসায়নিক সার বাইরে বিক্রির প্রতিবাদ করা ও জেলা পরিষদ নির্বাচনে পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে ভোট না করায় ভাড়াটে লোক দিয়ে চার ইউপি সদস্যকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা বেগুনবাড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বনি আমিনের বিরুদ্ধে।

বৃহস্পতিবার  দুপুরে ইউনিয়ন পরিষদ ভবনে এ ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী ইউপি সদস্যরা বলেন, কয়েকদিন আগে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সার বিতরণ করা হয়। এ সময় কৃষকরা রাসায়নিক সার নিতে এলে চেয়ারম্যান তাদের বলেন ‘এই তোরা বাংলাদেশ না পাকিস্তান (আওয়ামী লীগ-বিএনপি)’। আওয়ামী লীগ হলে সার দিচ্ছে আর বিএনপি হলে চলে যেতে বলেন। এছাড়া চেয়ারম্যান তার নেতাকর্মীদের ২০ থেকে ৩০টা করে সারের বস্তা দিচ্ছে বাইরে বিক্রি করার জন্য।

এতে তিনি বস্তা প্রতি ৩০০ টাকা করে পান। তখন আমরা প্রতিবাদ জানাই। আজ (বৃহস্পতিবার) একটি মিটিং ছিল। সেই মিটিংয়ে অংশ নিতে গিয়ে দেখি চেয়ারম্যান তার কিছু নেতাকর্মী নিয়ে বসে আছেন। এ সময় সাদ্দাম, রশিদুল, তুষার, মিন্টুসহ আরও কয়েকজন আমাদের বলে এই তোরা এখানে কেন আসছিস? বের হ পরিষদ থেকে। একথা বলতে বলতে তারা চেয়ারম্যান ও সচিবের সামনেই আমাদের মারধর করে বের করে দেয়।

অন্যদিকে গেল জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান বনি আমিন তার পছন্দের প্রার্থী মোশারুল ইসলাম সরকারকে ভোট দিতে বলেন। আমরা আমাদের পছন্দের প্রার্থী দেবাশীষ দত্ত সমীরকে ভোট দিলে তিনি আমাদের খারাপ ভাষায় গালিগালাজ করে বলেন ওই টোকাই‍‍`র (দেবাশীষ দত্ত সমীর) বাচ্চাকে তোদের কে ভোট দিতে বলেছে। তখন থেকেই তিনি ইউপি সদস্যদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করে আসছেন।

ইউপি সদস্য হাফিজুল জানায়, জনগণ সার পায় না,পরিষদে এসে ঘুরে যাচ্ছে আর চেয়ারম্যান তার লোক দিয়ে সব প্রকার রাসায়নিক সার বাইরে বিক্রি করে দিচ্ছে। প্রতিবাদ করলেই তিনি লোক দিয়ে হুমকি-ধমকি দেয়। তিনিও যেমন জনপ্রতিনিধি আমরাও জনপ্রতিনিধি। চেয়ারম্যানের সামনেই আমাদের সন্ত্রাসীরা মারল, তিনি একটা কথাও বললেন না। এতে বোঝা যায় তার হাত আছে, তিনিই সব করিয়েছেন। আমরা ইউএনওর কাছে লিখিত অভিযোগ দেব।

৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আজহারুল বলেন, আমরা হুমকির মুখে আছি। বাইরের লোক এসে প্রভাব খাটাচ্ছে। চেয়ারম্যান কিছুই বলে না। প্রতিবাদ করলেই তিনি বাহির থেকে লোক এনে হুমকি দেয়। তিনিও খারাপ ভাষায় গালিগালাজ করে আমাদের। আমরা কার কাছে বিচার চাইব? কে আমাদের বিচার করবে?

আরেক ইউপি সদস্য বাবুল হোসেন জানান, চেয়ারম্যান বনি আমিন কৃষকদের পাওনা রাসায়নিক সার তার লোক দিয়ে বাইরে বিক্রি করে দেয়। আমরা এর প্রতিবাদ করায় আজ সন্ত্রাসী দিয়ে আমাদের মারধর করে পরিষদ থেকে বের করে দেন। আমরা এর বিচার চাই।

তবে ভাড়াটে লোক দিয়ে ইউপি সদস্যদের মারধর ও সার বাইরে বিক্রির অভিযোগ অস্বীকার করে ইউপি চেয়ারম্যান বনি আমিন বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে আনিত সকল অভিযোগ মিথ্যা। তারা আমার বিরুদ্ধে যড়যন্ত্রে নেমেছে।’

এ বিষয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু তাহের মো. শামসুজ্জামান বলেন, চার ইউপি সদস্যকে মারধরের ঘটনাটি শুনেছি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এসএইচ-১০/১০/২২ (আঞ্চলিক ডেস্ক)