রমজানে চার কাজের তাগিদ দিয়েছেন রাসুলুল্লাহ (সা.)

রমজানে চার

রহমত, বরকত, নাজাতের মাস হলো রমজান। এ মাসের দিনগুলোয় খোলা থাকে মহান প্রভুর রহমতের দ্বার। বান্দা কায়মনোবাক্যে যা প্রার্থনা করেন, তা-ই কবুল করেন দয়াময় রব।

বান্দার অনুরাগ, ভালোবাসার বিনিময় দেন তিনি, ভূষিত করেন বিশেষ পুরস্কারে। সার্বিকভাবে ইহকাল ও পরকাল দোজাহানের মুক্তি লাভে বড় সোপান হতে পারে পবিত্র মাহে রমজান। এ মাসে আল্লাহতায়ালার অপার রহমত লাভের জন্য, তার ক্ষমা লাভের জন্য বেশি বেশি দোয়া করতে হবে। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন, তোমরা রমজানে চারটি কাজ খুব বেশি করে করবে।

দুটি কাজের মাধ্যমে তোমাদের রবকে সন্তুষ্ট করতে পারবে। আর দুটি কাজ না করে তোমাদের রক্ষা নেই। যে দুটি কাজ দ্বারা তোমরা প্রভুকে সন্তুষ্ট করতে পারবে তা হলো, তোমরা আল্লাহর একত্ববাদের সাক্ষ্য দিতে থাকবে এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতে থাকবে। আর যে দুটি কাজ না করে তোমাদের রক্ষা নেই তা হলো, তোমরা জান্নাত প্রার্থনা করবে এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তি কামনা করবে।

(সহি ইবনে খুজাইমা)। অতএব আমরা বেশি বেশি কালেমায়ে শাহাদত পড়ব। আর পাঠ করব এস্তেগফার। হজরত জায়েদ (রা) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) এরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি নিম্নোক্ত ভাষায় আল্লাহতায়ালার দরবারে তওবা ও এস্তেগফার করে, তাকে অবশ্যই ক্ষমা করা হবে, যদিও সে জিহাদের ময়দান থেকে পলায়নের মতো গুরুতর গোনাহ করে থাকেন আস্তাগফিরুল্লা হাল্লাযি লা-ইলাহা ইল্লা হুয়াল হাইয়্যুল ক্বাইয়্যুম ওয়া আতুবু ইলাইহি। অর্থাৎ, আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করি, যিনি ছাড়া আর কোনো উপাস্য নেই।

যিনি চিরজীবী, বিশ্বের প্রতিষ্ঠাকারী। আমি তারই সমীপে তওবা করছি। আর বাকি দুটি কাজ, যা নবী কারিম (স) করতে বলেছেন জান্নাতের প্রার্থনা ও জাহান্নাম থেকে মুক্তি কামনা। এ ক্ষেত্রে আমরা পড়বো, আল্লাহুম্মা আসআলুকাল জান্নাহ এবং আল্লাহুম্মা আউজু বিকা মিনান্নার। এ দোয়াগুলো খুব ছোট। কিন্তু খুবই ওজনদার, অর্থবহ। হৃদয় থেকে আমরা এ দোয়াগুলো হরহামেশা পড়ব। মানুষ গোনাহ করবে, ভুল করবেন এটাই স্বাভাবিক।

তবে পাপ হয়ে যাওয়ার পর কায়মনোবাক্যে তওবা করতে হবে, হাত তুলে খোদার কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। কারণ তওবা ও মোনাজাত হচ্ছে মুমিনের প্রধান হাতিয়ার। এ পবিত্র মাসে মহান রবের দরবারে খাস দিলে দোয়া করতে হবে। আল্লাহ তো ক্ষমা করার জন্য তার দুয়ার খুলে রেখেছেন।

হাদিস শরিফে এসেছে, আল্লাহতায়ালা রমজানের প্রতিদিন ও প্রতিরাতে বহুসংখ্যক লোককে মুক্তিদান করেন এবং প্রত্যেক মুসলমানের একটি দোয়া প্রতিদিন কবুল হয়। রমজানে আমরা অধিক হারে এই দোয়াটি পড়বো, রব্বিগফির, ওয়ারহাম, ওয়া আনতা খইরুর রহিমীন। হে আমার রব আমায় ক্ষমা করুন! আমায় দয়া করুন! আপনি তো দয়ার আধার, সর্বশ্রেষ্ঠ দয়াবান। এ ছাড়া পড়তে পারি এই দোয়াটিও আল্লাহুম্মা আই’ন্নি ফিহি আলা সিয়ামিহি ওয়া ক্বিয়ামিহ; ওয়া জান্নিব্নি ফিহি মিন হাফাওয়াতিহি ওয়া আছামিহ; ওয়ারজুক্বনি ফিহি জিকরকা বিদাওয়ামিহি; বিতাওফিক্বিকা ইয়া হাদিয়াল মুদাল্লিন। অর্থাৎ – হে আল্লাহ! এই দিনে আমাকে রোজা পালন ও নামাজ কায়েমে সাহায্য করুন। আমাকে অন্যায় কাজ ও সব গুনাহ থেকে হেফাজত করুন।

আর আমাকে তওফিক দিন সর্বদা আপনার স্মরণের। মুক্তিদান করুন গোমরাহি ও পথভ্রষ্টতায় লিপ্ত হওয়া থেকে, হে সঠিকপথ প্রদর্শনকারী! আল্লাহতায়ালা অবশ্যই বান্দার দোয়া কবুল করবেন। তবে এ জন্য বড় শর্ত হলো, রুজি হালাল হতে হবে। আল্লাহতায়ালা আমদের তওফিক দান করুন। আমিন! রোজাসংক্রান্ত মাসআলা রোজা রেখে স্বাভাবিক অবস্থায় ইচ্ছাকৃতভাবে পানাহার করলে কাজা ও কাফফারা দুটিই জরুরি হবে। বিড়ি, সিগারেট, হুক্কা তথা যে কোনো ধরনের ধূমপান করলেও রোজা ভেঙে যাবে এবং কাজা ও কাফফারা জরুরি হবে।

আরএম-০৩/২১/০৫ (ধর্ম ডেস্ক)