চার মিনিটেরও কম সময়ে করোনা পরীক্ষার ফল!

করোনা পরীক্ষার ফল চার মিনিটের মধ্যেই পাওয়া যাবে। সম্প্রতি চীনের বিজ্ঞানীরা এমন দাবিই করেছেন। তারা বলছেন, কোভিড-১৯ রোগের এই পরীক্ষার ফল পিসিআর ল্যাব পরীক্ষার মতোই নির্ভুল হবে। এ ক্ষেত্রে কোনো হেরফের হবে না।

পরিমারেজ চেইন রিয়েকশন পরীক্ষাই সবচেয়ে নির্ভুল বলে বিবেচিত হয়ে আসছে। মহামারির জন্য স্পর্শকাতর এই পরীক্ষার ফল পেতে একটু বেশি সময়ই লেগে যায়।

কিন্তু সংক্রমণের নতুন নতুন ঢেউয়ের কারণে করোনা পরীক্ষার অতিরিক্ত চাপের কারণে মারাত্মক বেকায়দায় পড়তে হয়েছে বেশ কয়েকটি দেশকে। এতে অতিসংক্রামক ওমিক্রনের বিস্ফোরণ ঘটেছে। প্রতিদিন লাখ লাখ মানুষ করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন।

এই সংকটের সমাধান বের করার দাবি করেছেন সাংহাইয়ের ফুডান বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা।

সোমবার সাময়িকী নেচার বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে প্রকাশিত একটি প্রকাশনা পর্যালোচনায় গবেষক দল বলছেন, কোভিড-১৯ ল্যাব পরীক্ষায় যে পরিমাণ সময় খরচ হয়, তা কমিয়ে আনতে পারবে নতুন এই পরীক্ষায়। সোয়াব থেকে জিনগত উপকরণ বিশ্লেষণে এতে মাইক্রোইলেক্ট্রনিকস ব্যবহার করা হয়েছে।

কোভিড প্যাথোজেন নামে ডাকা হচ্ছে এই পরীক্ষাকে। গবেষকেরা বলছেন, একটি সমন্বিত ও হালকা প্রোটোটাইপ ডিভাইসে সার্স-কভ-২ শনাক্তে একটি ইলেক্ট্রমেকানিক্যাল বায়োসেনসর প্রয়োগ করা হয়েছে। এতে চার মিনিটেরও কম সময়ের মধ্যে আরএনএ ভাইরাস শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে।

মহামারি পরীক্ষায় চীনা গবেষকদের এই পদ্ধতি দ্রুত গতির, সহজসাধ্য, অতি স্পর্শকাতর ও বহনযোগ্য। সাংহাইয়ের করোনায় আক্রান্ত ৩৩ অধিবাসীর নমুনা নিয়ে এই পদ্ধতির পরীক্ষা করা হয়েছে। পাশাপাশি তাদের নমুনার পিসিআর পরীক্ষাও হয়েছে।

দেখা গেছে, পিসিআর পরীক্ষার মতোই নতুন এই পদ্ধতিতে দ্রুততম সময়ের মধ্যে ফল পাওয়া গেছে। গবেষণায় আরও ৫৪ ব্যক্তির নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে, যাদের করোনা না থাকলেও জ্বর ও ইনফ্লুয়েঞ্জা ছিল। এতে কোনো ভুয়া ফল আসেনি।

বিজ্ঞানীদের দাবি, বিমানবন্দর, হাসপাতাল ও বাড়িসহ বিভিন্ন পরিস্থিতিতে দ্রুত করোনা পরীক্ষায় তাদের ডিভাইসটি ব্যবহার করা যাবে।

পিসিআর পরীক্ষা কেবল ধীরগতিরই না, এতে বিশাল গবেষণাগারের দরকার পড়ে। বহু দেশে এই সুবিধার ঘাটতি রয়েছে। কোনো কোনো দেশে যে পরিমাণ মানুষ করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন, সেই পরিমাণ পরীক্ষার অবকাঠামো নেই। এতে রোগীদের নিয়মিত নাকাল হতে হচ্ছে।

বর্তমানে বাজারে যেসব দ্রুত করোনা নির্ণয় পরীক্ষা সহজলভ্য রয়েছে, সেগুলো কতটা নির্ভুল—তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। বিশ্বে করোনাভাইরাস কিটসের সবচেয়ে বড় নির্মাতা দেশগুলোর একটি চীন।

শুল্ক বিভাগের তথ্যানুসারে, গত ডিসেম্বরে ১৬০ কোটি কিটস রফতানি করেছে চীন। আগের মাসের তুলনায় যা ছিল ১৪৪ শতাংশ বেশি।

এসএইচ-২০/০৮/২২(অনলাইন ডেস্ক)