কুসংস্কারি ছিলেন গাভাস্কার!

বিশ্বকাপের মরণ-বাঁচন ম্যাচ। হারলেই টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিশ্চিত। অথচ প্রথমে ব্যাট করে মাত্র ১৭ রানে পাঁচ উইকেট খুইয়ে ফেলেছে ভারত। প্যাভিলিয়নে ফিরে গিয়েছেন সুনীল গাভাসকর, কৃষ্ণমাচারি শ্রীকান্ত, মহিন্দর অমরনাথদের মতো বড় বড় তারকারা। সেসময় মাঠে নামলেন অধিনায়ক কপিলদেব নিখাঞ্জ। তারপর তিনি যেটা করলেন সেটা এককথায় ইতিহাস।

জীবনের সর্বকালের অন্যতম সেরা ইনিংসটি সেদিন খেলেছিলেন কপিল। সেদিন কপিল এমন একটি ইনিংস খেলেছিলেন যা ভারতীয় ক্রিকেটের ইতিহাস আমূল বদলে দিয়েছিল। কপিল দেবের ১৭৫ রানের সেই ইনিংস নিয়ে আজন্ম আলোচনা করবেন ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমীরা।

পাঁচ উইকেট খোয়ানোর পরও যে ভঙ্গিমায় জিম্বাবোয়ে বোলারদের তুলোধোনা করেছিলেন ভারত অধিনায়ক তা ভোলার নয়। শেষপর্যন্ত ভারত ম্যাচটি জেতে ৩১ রানে। তারপর ৮৩-র বিশ্বকাপের সাফল্যগাথা সবারই জানা। কিন্তু জানেন কি, কপিল যখন মাঠে চার-ছক্কা হাঁকাচ্ছেন তখন ড্রেসিং রুমের কী পরিস্থিতি হয়েছিল?

সম্প্রতি লর্ডসে একটি অনুষ্ঠানে এসে সেদিনের ড্রেসিং রুমের গোপন কথা ফাঁস করেন সুনীল গাভাসকর। তিনি জানান, কপিল যতক্ষণ ব্যাট করছেন, ততক্ষণ নিজের ওপেনিং সঙ্গী কৃষ্ণমাচারি শ্রীকান্তকে তিনি একের পর এক সিগারেট খেতে বাধ্য করেছিলেন। এমনকী নিজেও নিজের জায়গা থেকে বিন্দুমাত্র সরেননি।

পাছে কপিল আউট হয়ে যান। প্রবল বেগে প্রকৃতির ডাক এলেও সাড়া দেননি সানি। শ্রীকান্তকেও বলেন, পুরো ইনিংসটা একই জায়গায় বসে পরপর সিগারেট খেয়ে দেখতে। আসলে, সেসময়ও ভারতীয় দলের একাধিক সদস্য কুসংস্কারে বিশ্বাস করতেন। গাভাসকর নিজে ছিলেন তাঁর মধ্যে একজন।

যে মাঠে সেদিনের খেলাটা হয়েছিল, সেই টুনব্রিজের নেভিল গ্রাউন্ডে আর কখনও কোনও ম্যাচ আয়োজিত হয়নি। এবং আশ্চর্যজনকভাবে সেই মাঠটি আজও একই রকম রয়ে গিয়েছে। ড্রেসিংরুম বা গ্যালারিতে কোনও পরিবর্তন করা হয়নি। ৩৬ বছর আগে যেমনটা ছিল, আজও তেমনটাই রয়ে গিয়েছে।

এ প্রসঙ্গে কপিল নিজেই বলছিলেন, “আমি বছর পাঁচেক আগে ওই মাঠে একবার গিয়েছিলাম, আর যাওয়া হয়নি। আমার শুধু মনে পড়ে কীভাবে কিরমানি এবং রজার বিনি আমাকে আত্মবিশ্বাস জুগিয়েছিল।”

এসএইচ-১৫/২০/১৯ (স্পোর্টস ডেস্ক)