ফুলের তোড়া দিয়ে বিদায় দেওয়ার প্রয়োজন নেই

টানা হারের বৃত্তে দল। ঠিক তখনই (২০১৪ সালের শেষ দিকে) তৃতীয় দফায় বাংলাদেশ দলের দায়িত্ব দেওয়া হয় মাশরাফি বিন মুর্তজাকে। আর তিনি দায়িত্ব নিতেই বদলে যেতে থাকে বাংলাদেশ। তার পরের বছর তো তার নেতৃত্বে অবিশ্বাস্য সময় কাটায় টাইগাররা। জয়ের নতুন নতুন রেকর্ড গড়ে। যে ধারায় বিশ্ব ক্রিকেটে এখন সবাই সমীহ করে বাংলাদেশকে। এখন হারার আগে আর হারে না টাইগাররা। সেই মাশরাফি ফুলের তোড়া হাতে বিদায় আশা করেন না!

আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি থেকে হুট করেই অবসর নিয়েছেন। টেস্ট ক্রিকেটেও অলিখিত অবসর চলছে। কারণ ২০০৯ সালের পর সাদা জার্সিতে তাকে আর দেখা যায়নি তাকে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে শুধু ওয়ানডে সংস্করণে খেলে যাচ্ছেন মাশরাফি। এ নিয়ে রয়েছেন নানা গুঞ্জন। হয়তো মাঠ থেকে আর অবসর নাও নেওয়া হতে পারে। কিন্তু এমন অধিনায়ককে মাঠ থেকে বিদায় দিতে চায় দেশের ক্রিকেট ভক্তরা।

কিছুটা অভিমানই করেছেন মাশরাফি। কারণ তাকে বিদায় দেওয়ার জন্য যেন উঠে পড়ে লেগেছে একটি বিশেষ মহল। তাই বিদায় প্রসঙ্গে অভিমান ঝরে পড়ল তার কণ্ঠে, ‘এটা প্রয়োজনীয় না যে আমার নিজেকে এত প্রাধান্য দেওয়ার দরকার আছে। আমি নিজেকে এত প্রাধান্য দিইও না যে আমাকে মাঠ থেকে বিদায় দেবেন সবাই, ফুলের তোড়া নিয়ে আসবেন। এটা প্রয়োজনীয় না। আমি যেমন আছি ভালো আছি, উপভোগ করছি খেলা। জাতীয় দল অনেক দূরের ব্যাপার।’

তবে বয়স ৩৬ ছাড়িয়েছে। এ বয়সে নিজের সেরাটা ধরে রাখা বেশ কঠিনই একজন পেসারের জন্য। মাশরাফিও উত্থান পতনের মধ্যেই যাচ্ছেন। তবে বিশ্বকাপের আগে সব ঠিক ছিল। তখন পর্যন্ত বোলারদের মধ্যে দেশের সেরা পারফর্মার ছিলেন মাশরাফি। কিন্তু বিশ্বকাপে আট ম্যাচে পেয়েছেন মাত্র ১টি উইকেট। এরপরই শুরু হয় তাকে নিয়ে নানা সমালোচনা। তবে তাকে নিয়ে সমালোচনা আরও আগে থেকেই। তার রাজনীতিতে নামাটা মেনে নিতে পারেননি অনেকেই।

অভিমান প্রসঙ্গ উঠলে আবার তা এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন অধিনায়ক, ‘অভিমান আমার মনে হয় না (করেছি)। আমি যখন টি-টোয়েন্টি থেকে বিদায় নিয়েছি অনেক কারণ আপনাদের বলেছি। আমি অভিমান টভিমান নিয়ে চলি না। এটা একেবারেই নাই। আর অবসর নিয়ে যেটা বললেন, আপনি বলতেন পারেন অবসর সবাই করিয়ে দিয়েছে। আমি নিজেও হয়তো যে জায়গায় অবস্থান করছি সেটাকেও উপভোগ করছি।’

তবে মাঠ থেকে বিদায় নিবেন কি না জানতে চাইলে বিষয়টি বিসিবির উপর চাপিয়ে দেন মাশরাফি, ‘মাঠ থেকে অবসর নেব কি নেব না সেটা এখনো সিদ্ধান্ত নেইনি। যদি সেরকম অবস্থা তৈরি হয়, ক্রিকেট বোর্ড যদি মনে করে তাহলে হয়তবা চিন্তা ভাবনা করব। যে খেলাটা শুরু করেছিলাম, কেউ জাতীয় দল থেকে শুরু করে না। আমি আবার সেখানে (ঘরোয়া) ফিরে গেছি। বিপিএল খেলেছি, সামনে ঢাকা লিগ উপভোগ করব। সব সময় জাতীয় দলে খেলতে হবে, জাতীয় দলকে প্রতিনিধিত্ব করলেই আপনি খেলোয়াড়, সেরকম তো না।’

এসএইচ-১৮/১০/২০ (স্পোর্টস ডেস্ক)