আশা জাগিয়েও হতাশার ড্র বাংলাদেশের

দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্টে ভরাডুবির পর ঘরের মাঠে ঘুরে দাঁড়ানোর আশা নিয়ে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে খেলতে নেমেছিল বাংলাদেশ। চেনা মাঠে ফেবারিটের তকমাও ছিল মুমিনুল বাহিনীর। তবে সফরকারীদের বিপক্ষে প্রথম টেস্টে জয়ের আশা জাগিয়েও শেষ পর্যন্ত ‘ড্র’ নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে লাল-সবুজ বাহিনীকে। লঙ্কান দুই ব্যাটসম্যান নিরোশান ডিকভেলা ও দিনেশ চান্দিমাল দৃঢ়তার দ্বিতীয় ইনিংসে মাঠে নামা হয়নি বাংলাদেশের। শ্রীলঙ্কার লিড ১৯২ রানে পৌঁছালে বৃহস্পতিবার দু দলই ড্র মেনে নিলে ম্যাচের ইতি ঘোষণা করেন ম্যাচ অফিসিয়ালরা।

তবে ঘটনাবহুল টেস্টটা স্মরণীয় হয়ে থাকবে মুশফিকুর রহিমের জন্য। প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে পাঁচ হাজার রানের মাইলফলক ছাড়াও অষ্টম টেস্ট সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন তিনি। এছাড়া ব্যাট হাতে রানে ফিরেছেন দেশসেরা ওপেনার তামিম কিংবা তরুণ তুর্কি জয়রাও। যদিও এরই মধ্যে প্রশ্ন উঠছে, মুমিনুলদের জেতার মানসিকতা নিয়ে। কারণ রানপ্রসবা চট্টগ্রামে জয়ের লক্ষ্যে খেলতে গেলে আরেকটু ব্যাট চালাতে হতো। কিন্তু নিজেদের প্রথম ইনিংসে মন্থর ব্যাটিংয়ে সে সুযোগ হেলায় হারাল কি না তা নিয়ে বিস্তর আলোচনা হতে পারে।

বাংলাদেশের চেয়ে ৬৮ রানে পিছিয়ে থেকে ২ উইকেটে ৩৯ রান নিয়ে চতুর্থ দিনের খেলা শেষ করেছিল শ্রীলঙ্কা। তবে পঞ্চম দিনে বৃহস্পতিবার তাইজুল আর সাকিবের বোলিং নৈপুণ্যে একসময় আশার পালে হাওয়া লেগেছিল।

চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের ব্যাটিং স্বর্গেও জ্বলে উঠেন তাইজুল। বুধবার শেষ বিকেলে সফরকারীদের দুজনকে ফিরিয়ে পঞ্চম দিনের জন্য কিছুটা হলেও উত্তেজনার আভাস দিয়েছিলেন এ বোলার। এরপর আজ আবারও দৃশ্যপটে হাজির হন তাইজুল। প্রথমে ফেরালেন ৪৩ বলে ৪৮ রান করা কুশল মেন্ডিসকে। এরপর শূন্য রানে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসকে ফিরিয়ে ম্যাচে উত্তেজনা নিয়ে আসেন এ বাঁহাতি।

তাইজুলের চতুর্থ শিকার হিসেবে আউট হয়ে সাজঘরে ফিরে গেছেন সফরকারী দলের অধিনায়ক দিমুথ করুণারত্নে। টাইগার দলপতি মুমিনুলের হাতে ক্যাচ দেওয়ার আগে ৫২ রান করেন তিনি। তাইজুলের পর ধনাঞ্জয়া ডি সিলভাকে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিতে বাধ্য করে শ্রীলঙ্কার ষষ্ঠ উইকেটের পতন ঘটান সাকিব।

তবে এরপরই বাংলাদেশের সামনে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছেন নিরোশান ডিকভেলা ও দিনেশ চান্দিমাল। বিপদে পড়া শ্রীলঙ্কাকে টেনে নেন এই দুই ব্যাটসম্যান। শেষ পর্যন্ত উইকেটের পতন হতে দেননি দুজনে।

এর আগে চট্টগ্রাম টেস্টে ধীরগতির ব্যাটিংয়ে লিড পেতে বাংলাদেশকে ব্যাটিং করতে হয়েছে চতুর্থ দিনের দ্বিতীয় সেশন পর্যন্ত। চতুর্থ দিনে মোট উইকেটের পতন ঘটেছে ৯টি। পিচের খুব বেশি পরিবর্তন পঞ্চম দিনেও লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। যার কারণে স্বাচ্ছন্দ্যে ব্যাট করছিল শ্রীলঙ্কা। কিন্তু তাইজুল ম্যাজিকে ছন্দপতন ঘটে সফরকারীদের। কুশল মেন্ডিস স্ট্রোকের ফুলঝুরি ছুটিয়ে ৪৩ বলে ৪৮ রান করে বোল্ড হয়ে যান।

বাংলাদেশের দেওয়া ৬৮ রানের লিড পেরিয়ে যেতে শ্রীলঙ্কার আজ লেগেছে মোটে পাঁচ ওভার। গতকালের ২ উইকেটে ৩৯ রানের সঙ্গে আজ মাত্র ৫ ওভারেই ৩০ রান তুলে বাংলাদেশের লিড পেরিয়ে যায় সফরকারীরা।

এসএইচ-১৭/১৯/২২ (স্পোর্টস ডেস্ক)