ইউটিউবার হতে হলে যা জানতেই হবে

ইউটিউবার হতে হলে

ইউটিউবারের জন্যই হোক বা অন্য কোনো মাধ্যম, ভিডিও তৈরি করতে চাইলে প্রয়োজনীয় টুলস হাতের কাছে থাকতেই হবে। ভিডিওর বিষয়বস্তু অনুযায়ী বিভিন্ন ধরনের হার্ডওয়্যার প্রয়োজন হতে পারে। তবে ভিডিওর মান বাড়াতে চাইলে দরকার হতে পারে এর চেয়েও শক্তিশালী গেজেট …

ভ্লগিং, ট্রাভেল, শর্টফিল্ম বা আউটডোর চ্যানেল :

এ ধরনের চ্যানেলের জন্য প্রয়োজন নিঁখুত ভিডিও, যার জন্য শুরুতেই প্রয়োজন, ঝাঁকুনি এবং কম্পনহীন ভিডিও ধারণ করার ডিভাইস। আধুনিক স্মার্টফোন, যেগুলোতে অপটিক্যাল ইমেজ স্ট্যাবিলাইজেশন বা ওআইএস আছে, সেগুলো ব্যবহার করেই শুরু করা যেতে পারে এ ধরনের কাজ। সঙ্গে লাগবে অন্তত ট্রাইপড, যাতে প্যানিং শট বা লম্বা সময় একেবারে স্থির থেকে ভিডিও করা যায়। বাজারে বেশ কিছু ব্র্যান্ডের ট্রাইপড পাওয়া যাচ্ছে। দাম ৫৫০ থেকে দুই হাজার ৫০০ টাকার মধ্যে। তবে অন্তত এক হাজার ৫০০ টাকা ট্রাইপডের জন্য বাজেট করা উচিত। ফোনে ভিডিও ধারণ করলে সেটি স্থির রেখে হাঁটা-চলার মধ্যেই ভিডিও করার জন্য কেনা যেতে পারে গিম্বল। এসব ডিভাইসের মূল্য আট হাজার ৫০০ টাকা থেকে শুরু। গিম্বল ব্যবহার করলে ভিডিওতে কোনো কম্পনই চোখে পড়বে না। তবে চ্যানেলের ভিউ বাড়তে শুরু করলে উচিত হবে সেট আপ আরো উন্নত করা, যার প্রথম কাজই হবে ক্যামেরা কেনা। একটি মাঝারি দামের ডিএসএলআর অথবা মিররলেস ক্যামেরা, যেমন ক্যানন ৭৭০ডি বা সনি এ৬৩০০, সঙ্গে প্রাইম লেন্স ব্যবহার করে উচ্চমানের ভিডিও ধারণ করা সম্ভব। তার জন্য খরচ হবে ৫০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা পর্যন্ত। সঙ্গে উচ্চমানের মাইক্রোফোন, যেমন রোড বা বয়া ব্যবহার করা যেতে পারে। সে জন্য খরচ হবে দুই হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত। এ ছাড়া ওয়াইড অ্যাঙ্গেল বা অ্যাকশন শটের জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে অ্যাকশন ক্যামেরা, যার মূল্য আট হাজার ৫০০ টাকা থেকে শুরু। অনেকে ড্রোন, একাধিক ক্যামেরা এবং লাইটিংও ব্যবহার করেন, তবে প্রাথমিক পর্যায়ে এত খরচ করার কোনো প্রয়োজন নেই।

রিভিউ, আলোচনা, খবর বা শিক্ষামূলক চ্যানেল :

এ ধরনের ভিডিও সাধারণত ছোট স্টুডিওতে শুট করা হয়ে থাকে। ঘরের এক কোণে ছোট টেবিল, তার নিচে কার্পেট এবং পেছনে ব্যানার বা একরঙা কাপড় দিয়ে সেটি তৈরি করা যেতে পারে। শিক্ষামূলক ভিডিওর সঙ্গে হোয়াইট বোর্ডও ব্যবহার করেন অনেকে। ট্রাইপড, প্রাইম লেন্সযুক্ত ক্যামেরা বা স্মার্টফোন এ ধরনের ভিডিওর জন্য আদর্শ। সঙ্গে অবশ্যই থাকতে হবে লাইটিং। সফটবক্স লাইট এবং স্ট্যান্ড তিন হাজার ৬০০ থেকে আট হাজার টাকার মধ্যে পাওয়া যাবে। এ ধরনের ভিডিওর জন্য অডিও বেশ গুরুত্বপূর্ণ, তাই ভালোমানের মাইক্রোফোন ব্যবহার করা যেতে পারে। আলাদাভাবে ধারা বর্ণনা রেকর্ড করার জন্য ডেস্কটপ মাইক্রোফোন ব্যবহার করা উচিত। এসবের দাম দুই হাজার ৫০০ টাকা থেকে শুরু।

স্লাইড শো বা এনিমেটেড ভিডিও :

অনেক শিক্ষামূলক ভিডিও কোনো শুটিং ছাড়া শুধু এনিমেশন ও লেখার স্লাইডের সঙ্গে ধারা বর্ণনা জুড়ে তৈরি করা যায়। সে জন্য শক্তিশালী পিসি এবং মাইক্রোফোন যথেষ্ট।

গেইম স্ট্রিমিং, লাইভ ভিডিও :

এ দুই ধরনের কাজের জন্য ক্যামেরা অত্যন্ত জরুরি নয়; কিন্তু শক্তিশালী পিসি থাকতেই হবে। গেইম স্ট্রিম করতে চাইলে অন্তত কোর আই৭ বা রাইজেন ৫ প্রসেসর জরুরি। মানসম্মত ওয়েবক্যাম, যার মূল্য চার হাজার ৫০০ টাকা থেকে শুরু এবং মাইক্রোফোনও গেইম স্ট্রিম করার জন্য প্রয়োজন। লাইভ ভিডিও দেখাতে ক্যাপচার বক্স প্রয়োজন, যার মূল্য ১২ হাজার টাকা থেকে শুরু। লাইভ দেখাতে উচ্চমানের ইন্টারনেট সংযোগও প্রয়োজন।

সম্পাদনা এবং আপলোড :

ভিডিও ফোনে সম্পাদনা করা গেলেও ইউটিউবার হতে হলে সম্পাদনা করার জন্য কম্পিউটার জরুরি। অন্তত ইন্টেল কোর সিরিজ বা সমমানের এএমডি প্রসেসর প্রয়োজন, পেন্টিয়াম, সেলেরন বা অ্যাথলন এ ধরনের কাজের জন্য নয়। সঙ্গে থাকতে হবে অন্তত আট গিগাবাইট র‌্যাম। জিপিইউ তেমন একটা জরুরি নয়, বাজেট থাকলে কেনা যেতে পারে। সঙ্গে এসএসডি স্টোরেজ থাকাটাও জরুরি। আপলোড করার জন্য ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট থাকা বাঞ্ছনীয়, অন্তত ৫ মেগাবিট আপলোড স্পিড না থাকলে সমস্যা হতে পারে।

আরএম-১২/০৭/০৪ (প্রযুক্তি ডেস্ক)