লকডাউন বা শাটডাউন নয় এখন দরকার কার্ফু!

লকডাউন

জি. এম. মুরতুজা: বাংলাদেশে করোনা’র ঢেউ আচড়ে পড়েছে। বিভিন্ন মহল থেকে বলা হচ্ছিল, গ্রামে করোনা নাই। কেবলমাত্র শহরের মানুষই করোনায় সংক্রমিত হচ্ছে। এই ধারণা ভূল প্রমান করে এখন গ্রামাঞ্চলে ৬০ শতাংশ মানুষ করোনায় সংক্রমিত হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে।

গ্রামের সহজ সরল মানুষ করোনায় আক্রান্ত হলেও কোন কিছু বুঝে উঠার আগেই মৃত্যুবরণ করছেন। আবার যারা বুঝতে পারছেন, তারা চিকিৎসা নিতে ছুটে আসছেন শহরের হাসপাতালগুলোতে। বিভিন্ন পরিসংখ্যান থেকে জানা যাচ্ছে, হাসপাতালগুলোতে এখন গ্রাম থেকেই বেশী আসছে করোনা সংক্রমিত রুগী।

এদের সংখ্যা ৬০ শতাংশ। ফলে গ্রামে করোনা নাই বলে যারা এতদিন তৃপ্তির ঢেকুর তুলছিলেন, তাদের ঘুম নিশ্চিয় ভেঙ্গেছে। এখন যে হারে মানুষ করোনা’য় আক্রান্ত হচ্ছেন, তাতে মনে হচ্ছে বাংলাদেশে সত্যিই করোনা অতিমারিতে রূপ নিয়েছে।

করোনা প্রতিরোধের নামে দেশে মার্চ মাস থেকেই চলছে প্রহসনের লকডাউন। কোন কোন জেলায় আবার চলছে সর্বাত্মক কঠোর লকডাউন, যা কোন কাজে আসছে বলে মনে হচ্ছে না। বরং এই প্রহসনের লকডাউনের মধ্যেই বৃদ্ধি পেয়েছে করোনা সংক্রমন, সেই সাথে বৃদ্ধি পেয়েছে মানুষের মৃত্যুর সংখ্যা। হাসপাতালগুলো করোনা সংক্রমিত মানুষকে সেবা দিতে হিমসিম খাচ্ছে।

দূ;খ হচ্ছে আমাদের সরকার গত এক বছরের অধিক সময়েও সাধারণ মানুষকে বুঝাতে ব্যার্থ হয়েছে করোনা প্রতিরোধে মাস্ক পরা কতটা জরুরী। কেননা এখনো অসংখ্য মানুষ মাস্ক ছাড়াই দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছেন, আড্ডা দিচ্ছেন। এখনও বিভিন্ন মসজিদে ইমামদের বলতে শোনা যাচ্ছে মাস্ক পরে লাভ নাই, এটা আল্লাহুর গজব। আবার মসজিদগুলোতে এখনও অনেক মানুষ মাস্ক ছাড়াই দিব্যি নামায আদায় করছেন। দেশের সবগুলো মিডিয়া সরকারের পক্ষে থাকলেও আমরা দেশের মানুষকে বুঝাতে সক্ষম হয়নি যে, যথাযথভাবে স্বাস্থবিধি মানলে করোনা প্রতিরোধ ১৪ দিনের মধ্যেই সম্ভব।

সরকারের দেয়া লকডাউন ফেল করেছে। মিডিয়া ক্যাম্পেইন ফেল করেছে। এত এত প্রচার ফেল করেছে। কাজেই বোঝা যাচ্ছে, বাংলাদেশের মানুষ লাঠিপেটাতেই সোজা। ফলে সরকারের এখন উচিত হবে প্রহসনের লকডাউনের নামে ফকডাউন বা শাটডাউন না চালিয়ে সারা দেশে ১৪ দিনের জন্য কার্ফু ঘোষণা করা। সব মানুষকে ঘরে আটকে দেয়া। দরিদ্রদের নায্য খাদ্য সহায়তা দিয়ে ঘরে আটকে ফেলা।

জরুরী সেবা ছাড়া সবকিছু বন্ধ করে দেয়া। নয়তে গ্রাম শহর মিলিয়ে যে হারে করোনা সংক্রমনের হার ও মৃত্যু সংখ্যা বাড়ছে, তাতে মনে হচ্ছে এবার মৃত্যুর মিছিল শুরু হবে। আমরা হারাতে থাকবো অতি নিকট জনদের। মৃত্যুর মিছিল কারোই কাম্য নয়। এটা সরকার যত দ্রুত উপলদ্ধি করে কার্যকর ব্যবস্থা নিবে ততোই বেশী মানুষকে বাঁচানো সম্ভব হবে। মনে রাখবেন দেশের মানুষ লকডাউন বা শাটডাউন বুঝে না কার্ফু ভালো বুঝে। মানুষ যেটা বুঝে সেটাই করা উচিত এখন। আর দেরি নয়, এখনই এ্যাকশনে যান প্লিজ।