বাবার লাশ বাড়িতে রেখে এসএসসি পরীক্ষা দিলো রাজিয়া

হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে বাবা চলে গেছেন না ফেরার দেশে। বাড়িতে চলছে মরদেহ দাফনের প্রস্তুতি। শোকে বিহ্বল স্বজনরা। বাবার মরদেহ রেখে এক বুক কষ্ট নিয়ে পরীক্ষা দিতে যায় রাজিয়া ইসলাম।

রোববার সকালে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার মুন্সীবাজার কালীপ্রসাদ উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশ নেয় সে। রাজিয়া উপজেলার পতনঊষার উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী।

স্থানীয়রা জানান, ভোরে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে রাজিয়ার বাবা মিজানুর রহমান বাবু (৪৫) মারা যান। বাবার মরদেহ বাড়িতে রেখে রাজিয়া ইসলামকে সকাল ১০টায় পরীক্ষা কেন্দ্রে উপস্থিত হয় সে। কেন্দ্রে দায়িত্বে থাকা শিক্ষক-সহপাঠীদের সহযোগিতায় ভূগোল পরীক্ষায় অংশ নেয়। পরীক্ষা শেষে বাড়িতে ফিরে বাবার মরদেহ দাফনে শরিক হয়।

স্বজনরা জানান, সিলেট উইমেনস মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মিজানুর রহমান বাবু মারা যান। রাজিয়া মানসিকভাবে ভেঙে পড়লেও স্বজন-শিক্ষকদের উৎসাহে উপজেলার মুন্সীবাজার কালীপ্রসাদ উচ্চ বিদ্যালয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে।

পতনঊষার উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ ফয়েজ আহমেদ জানান, মৃত্যুর বিষয়টি জেনে আমরা সকালে রাজিয়ার বাড়িতে গিয়ে তাকে পরীক্ষা দেওয়ার জন্য উৎসাহ দেই।

কালীপ্রসাদ উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের সচিব ও বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সত্যেন্দ্র কুমার পাল জানান, সবার সঙ্গে স্বাভাবিকভাবেই পরীক্ষা দিয়েছে রাজিয়া।

পরীক্ষা শেষে রাজিয়া ইসলাম জানায়, বাবা আমাকে অনেক ভালোবাসতেন। তিনি চাইতেন আমি যেন পড়ালেখা করে অনেক বড় হই। তাই এ অবস্থায়ও আমি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছি। বাবার আত্মাকে আমি কষ্ট দিতে চাই না।

কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশেকুল হক বলেন, বাবা যে কারও জন্য খুবই কষ্টদায়ক। তারপরও এসএসসি পরীক্ষার্থী রাজিয়া ইসলাম পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। আমরাও তার পরীক্ষার সময় যতটা সম্ভব পাশে থাকার চেষ্টা করেছি।

এসএইচ-০৯/২১/২১ (শিক্ষা ডেস্ক)