সত্যিই কি মাইকেল জ্যাকসন শিশু নির্যাতন করেছিলেন?

ইতিহাসের সেরা পপ তারকা। ছিলেন জনপ্রিয় একই সাথে সম্মানিত একজন মার্কিন সংগীতশিল্পী এবং ডান্সার।

এখনও অবধি যাকে পপ সংগীতের সম্রাট বলেই ভক্তরা সম্মানিত করে আসছেন। অনন্য এই তারকা সম্রাট যিনি আজও ভক্তদের হৃদয়ে তার জায়গা করে রেখেছেন। তিনি হলেন মাইকেল জ্যাকসন। পপ সম্রাট মাইকেল জ্যাকসন নেই অনেক বছর। তবুও এখনও তাকে ভালোবেসে মানুষ স্মরণ করতে ভোলেন না। জনপ্রিয়তায় একটুও কমতি হয়নি এখনও। মাত্র ৫০ বছর বয়সে না ফেরার দেশে চলে গিয়েছিলেন এই পপ সম্রাট।

কঠোর পরিশ্রম, প্রতিভা, অসাধারণ নাচের স্টাইল দিয়ে কুড়িয়েছিলেন লাখো লাখো মানুষের ভালোবাসা এবং ঐশ্বর্য। পেয়েছিলেন ৬টি ব্রিট অ্যাওয়ার্ড, ৫টি গ্র্যামি, ১টি গোল্ডেন গ্লোব অ্যাওয়ার্ড, সেই সাথে ৩৯টি গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড। তিনি একাধারে ছিলেন গীতিকার, নৃত্যশিল্পী ও অভিনেতা।

রীতিমতো বদলে দিয়েছিলেন পুরো সংগীতবিশ্ব। বিশ্বজুড়ে বিশাল মাপের কনসার্টগুলি ছিল মাইকেলের ঝুলিতে। ১৯৯২ সালে তার ‘দ্য ডেনজারাস ওয়ার্ল্ড ট্যুর’ পাঁচ মাস ধরে চলেছিল। মাইকেল জ্যাকসন যখন কনসার্ট করতেন তখন দর্শক-শ্রোতার দল যেন মুগ্ধ হয়ে উন্মাদের মতো আচরণ করতেন।

এমনকি দর্শকদের মধ্যে কেউ কেউ উত্তেজনায় অজ্ঞান হয়ে যেতেন। দর্শকদের প্রচুর ভালোবাসার অধিকারী ছিলেন মাইকেল জ্যাকসন। তবে এসব ভালোবাসার মধ্যে মাইকেল তিরস্কারেরও শিকার হয়েছিলেন বহুবার। তার একাধিক ফেস সার্জারি নিয়ে বহুবার সমালোচনার সম্মুখীন হয়েছিলেন তিনি।

তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল শিশু নিপীড়নের। মানসিকভাবে ভেঙে পড়া মাইকেল বারবারই তাকে নির্দোষ বলে দাবি করেছিলেন। এবং পরবর্তীতে এই অভিযোগগুলো মীমাংসিতও করা হয়েছিল। তবে মুহূর্তে সব থমকে গেল যখন এই পপসম্রাটের মৃত্যু খবর সামনে এলো। ২০০৯ সালের ২৫ জুন মৃত্যু বরণ করেন তিনি। নিজ বাসভবনে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায় তাকে। জানা গিয়েছিল অতিমাত্রার পেইন কিলার গ্রহণে মৃত্যু হয়েছিল তার।

তার মৃত্যুর সংবাদে অচল হয়ে পড়েছিল সোশ্যাল সাইটগুলো। বন্ধ হয়ে গিয়েছিল গুগলও। তার এই অকাল মৃত্যু মেনে নিতে পারেননি তার ভক্তরা। তার মৃত্যুর ১০ বছর পর একটি তথ্যচিত্রে নোংরাভাবে তুলে ধরা হয়েছিল এই পপ তারকাকে। পুনরায় শিশু নিপীড়নের অভিযোগের ওপর ভিত্তি করে নির্মিত করা হয় ‘লিভিং নেভারল্যান্ড’। তার সহকর্মীদের মতে, মাইকেলের সুনাম ক্ষুণ্ণ করতেই বহু বছর আগে মীমাংসিত ঘটনাটিকে পুনরায় সামনে নিয়ে এসেছে এইচবিও।

সেখানে উত্থাপন করা হয় মাইকেল ৭ ও ১০ বছরের দুই শিশুকে যৌন নির্যাতন করেছিলেন। মাইকেলের সহকর্মীদের ভাষ্যমতে, মাইকেল শিশুদের প্রচণ্ড ভালোবাসতেন। তাদের সাথে খেলাধুলা করতেন, সময় কাটাতে ভালোবাসতেন। তিনি নেভারল্যান্ড নামে একটি বাড়িও তৈরি করেছিলেন, যেখানে তিনি বাচ্চাদের সঙ্গে সময় কাটাতেন।

তার এই বাড়িটি ২৭০০ একর জায়গা নিয়ে বিস্তৃত ছিল। পশুপ্রেমীও ছিলেন মাইকেল। তাকে নিয়ে নানা সমালোচনা, বিতর্ক থাকলেও তার জনপ্রিয়তায় কখনো প্রভাব ফেলেনি। তিনি আজও মানুষের মনে রাজত্ব করে আছেন। মাইকেল জ্যাকসন পৃথিবীতে না থাকলেও তিনি ইতিহাসের পাতায় একজন সেরা পপ সম্রাট হিসেবেই আছেন, বেঁচে আছেন তার লাখো লাখো ভক্তদের হৃদয়ে।

এসএইচ-২১/২৯/২২ (বিনোদন ডেস্ক)