নারীর পেলভিসে অসহ্য যন্ত্রণা হওয়ার কারণ কি মারাত্মক?

নারীর পেলভিসে

তলপেটের নিচ থেকে কোমর পর্যন্ত পেলভিসের ব্যথায় হঠাৎই কাবু হয়ে পড়েছে এমন নারীর সংখ্যা কিন্তু কম নয়। মাঝেমধ্যেই এমন ব্যথা নারীরা টের পেয়ে থাকে। তবে অনেকেই জানেন না, কেন এই ব্যথা হয়?

হাড়, পেশি, লিগামেণ্ট, জরায়ু, ফ্যালোপিয়ন টিউব, গর্ভাশয়, মূত্রথলি, মলদ্বার, অ্যাপেনডিক্স। আর এগুলোর কোনো একটির জন্যই পেলভিক বা পেলভিস পেইন হতে পারে। আবার ঋতুস্রাবের ব্যথার জন্যও অনেকসময় কষ্ট হয়। সাধারণত, পরবর্তী ঋতুস্রাব হওয়ার দু’সপ্তাহ আগে ডিম্বাণু নিঃসরণের সময়ে পেলভিক পেন হয়ে থাকে। কীভাবে মুক্তি পাবেন এই ব্যথা থেকে?

ব্যথা কখন হয়?

নারীর একটোপিক প্রেগন্যান্সি হলে প্রেগন্যান্সি ফ্যালোপিয়ন টিউবে হয়। এটি একটি প্রাণঘাতী অসুখ, যেখানে প্রাথমিক অবস্থায় সাধারণত কোনো উপসর্গ থাকে না। ফলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে গা গোলানো, বমি, পেলভিসে ব্যথা হলে গ্যাসের ব্যথা বলে অনেকে ভুল করেন। তাই যৌনক্রিয়ায় সক্রিয় কোনো মহিলার পেলভিসে ব্যথা হলে অবহেলা করা উচিত নয়। ব্যথার পিছনে প্রেগন্যান্সিজনিত কারণ আছে কি না বা গর্ভপাত হয়েছে কি না তা দেখা উচিত।

মূত্রনালিতে সংক্রমণ, জরায়ুতে ফাইব্রয়েড এন্ডোমেট্রিওসিস, ওভারিয়ান সিস্ট, কোনো কারণে ইনফেকশন বা সংক্রমণ হলে, ক্রনিক পেলভিক ইনফ্ল্যামেটরি ডিজিজ, কোষ্ঠকাঠিন্য, অ্যাপেনডিক্স বা আগে কোনো অপারেশন হলে পেলভিক পেইন হতে পারে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে পেলভিসে ব্যথা ক্যানসারের জন্য হয়ে থাকে।

বিপদ যখন

পেলভিসে ব্যথার সঙ্গে ভ্যাজাইনাল ব্লিডিং। ঋতুস্রাবের সময় অস্বাভাবিক ব্যথা। সহবাসের পর রক্তক্ষরণ। মূত্র-মলের সঙ্গে ঘনঘন রক্তক্ষরণ ও সঙ্গে জ্বর।

কেমন হবে চিকিৎসা

প্রথমে রোগীর ক্লিনিক্যাল পরীক্ষা করা হয়। এরপর মূত্র পরীক্ষা, প্রেগন্যান্সি টেস্ট, আলট্রাসোনোগ্রাফি ও কিছু প্রাসঙ্গিক রক্ত পরীক্ষা করা হয়। এসব করেও কিছু ধরা না পড়লে সিটি স্ক্যান করা হয়। তারপরেও কিছু না জানা গেলে ডায়াগনস্টিক ল্যাপারোস্কোপি করে পেটের ভিতরের সম্পূর্ণ ছবি দেখা হয়। এরপর পেলভিসে ব্যথার পিছনে যে রোগের কারণ ধরা পড়বে তার চিকিৎসা করা হয়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে আবার প্রয়োজন পড়লে সার্জারিও করা হয়। যেকোনো বয়সেই পেলভিক পেইন হতে পারে।

অনেক সময়ই ঋতুস্রাবের সময় পেলভিসে ব্যথা হলে অনেকেই চিন্তিত হয়ে পড়েন। যদি অনেকদিন ধরেই পেটের নিচের দিকে বা ঋতুস্রাবের সময় অস্বাভাবিক ব্যথা হয় তাহলে অযথা আতঙ্কে ভুগবেন না। দুশ্চিন্তা না করে ব্যথার পিছনে কোনো গুরুতর কারণ আছে কি না সে বিষয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। পেলভিসে ব্যথার এতরকমের কারণ হতে পারে যে, আগে থেকে সতর্কতার কোনো অবকাশ থাকে না। তবুও পেলভিক ব্যথা হলে অযথা ভয় পাবেন না, আবার দীর্ঘদিন ধরে ব্যথা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ না নিয়ে অবহেলা করবেন না।

আরএম-১৩/১৪/০৯ (স্বাস্থ্য ডেস্ক)