পেট ভালো রাখতে নিয়মিত শুধু দই খান

পেট ভালো

পেটের সমস্যায় ভুগতে-ভুগতে যাঁরা অ্যান্টাসিড বানানো ওষুধ কোম্পানির ঘরোয়া ফ্রাঞ্চাইজি নিয়ে ফেলেছেন, তাঁরা একবার অন্যভাবে ভেবে দেখতে পারেন৷

গ্যাস-অম্বল-বদহজমের ত্রাহ্যস্পর্শে যাঁদের জীবন অস্থির, মুঠোমুঠো অ্যান্টাসিড বা হজমের হরেকরকম এনজাইম ট্যাবলেট খেয়েও দিবারাত্র চোঁয়াঢেকুর তোলেন যাঁরা, তাঁরা একবার সব ওষুধপত্র ছেড়ে দিয়ে দেখতে পারেন।

তার বদলে যা করতে হবে, তা হল দিনে নিয়ম করে এক বা একাধিক বার টকদই খেতে হবে আপনাকে। টকদই বাড়িতে বানাতে পারেন। চাইলে, দুগ্ধজাত দ্রব্য তৈরি করে, এমন সংস্থার প্যাকেটের দইও কিনে আনতে পারেন। তবে মিষ্টির দোকানের দই না-খেলেই ভাল৷ তাতে খুব-একটা কাজ হয় না৷

তাহলে কোন দই? দইতে থাকে মহার্ঘ প্রোবায়োটিক। যা সহজকথায় একধরনের উপকারী জীবাণু। আমাদের হজম ক্ষমতাকে একলাফে চাঙ্গা করে দেয়। জেনে রাখবেন, প্রকৃতির নিয়মেই আমাদের পরিপাকতন্ত্রে থাকে এই উপকারী জীবাণুর দল দলে দলে হাজির থাকে।

কিন্তু, ডিজিট্যাল যুগে যে পরিমাণে স্ট্রেসের মুখে পড়তে হয় আমাদের রোজ, ঘরে-বাইরে, তাতে করে ওই জীবাণুগুলোর সংখ্যা হয় কমে যায়, নয়তো আরও বেশি পরিমাণে তাদের দরকার পড়ে। তাই বাইরে থেকে দই বা প্রোবায়োটিক ক্যাপসুলের দরকার পড়ে আমাদের।

ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোমে ভোগেন যাঁরা, তাঁদেরকে অনেক সময়েই প্রোবায়োটিক ক্যাপসুল প্রেসক্রাইব করেন ডাক্তাররা। কারণ আবারও বলি, দেখা গিয়েছে যাঁরা অত্যধিক দুশ্চিন্তা করেন, তাঁদের পরিপাকতন্ত্রে এই প্রোবায়োটিকের সংখ্যা অস্বাভাবিক রকম কমে যায়। আর সেইকারণেই তাঁদের বাইরে থেকে ক্যাপসুল আকারে প্রোবায়োটিক নিতে হয়।

আমাদের শরীরে এমনিতে এই প্রোবায়োটিক থাকার কথা কয়েকলক্ষ। যাতে করে ঠিকঠাকভাবে খাবার হজম হয়। কিন্তু ভেতরে যখন এই জীবাণুটির সংখ্যা কমে যায়, তখনই দেখা দেয় বিপত্তি। গ্যাস-অম্বল-বদহজম-এর ত্রহ্যস্পর্শে জীবন অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে তাঁদের। সেইসঙ্গে দেখা দেয় কোষ্ঠকাঠিন্য। এর মোকাবিলায় ইসবগুল চলতেই পারে।

তবে গাদাগুচ্ছের ওষুধ খাওয়া মোটেই বুদ্ধিমানের কাজ নয়। আর তাই দই খান। তাতে চিনি দিলে খুবই অল্প পরিমাণে দিন। কারণ বেশি চিনিতে আবার অ্যাসিড হতে পারে। আর দই থেকেও যদি পর্যাপ্ত প্রোবাযোটিক না-আসে আপনার শরীরে, তাহলে প্রোবাযোটিক ক্যাপসুল খেতে পারেন। একেবারে নিরাপদ। তবে তার আগে একবার ডাক্তার দেখিযে নিন। আজকাল যেমন প্যাকেটের গায়ে লেখা থাকে এক্সট্রা ২৫ পার্সেন্ট, ঠিক তেমনই কিছুটা এক্সট্রা টোটকা দিয়ে লেখা শেষ করি।

পেটের গ্যাস-অম্বলের সমস্যায় নিত্য ভোগেন যাঁরা, তাঁরা রাস্তার ভাজাভুজি এড়িয়ে চলবেন। যদি-বা কালেভদ্রে খান একবার–দুবার, তাহলে একটু ভাল দোকান থেকে খাবেন। যাদের তেলটা একটু ঠিকঠাক। আর হ্যাঁ, খাবার আধঘণ্টা বা একঘণ্টার মধ্যে জল খাবেন না।

কারণ খাবার পরপরই হজমের জন্য যে ধরনের এনজাইম ক্ষরণ হয়, এক গেলাস জল খেলে সেগুলোর কার্যকারিতা কমে যায়। আর হ্যাঁ, খাওয়ার দু-ঘণ্টার মধ্যে যাবেন না। তাতে করে রিফ্ল্যাক্স অ্যাসিডিটির প্রবণতা বাড়ে।

আরএম-০৪/০২/১০ (স্বাস্থ্য ডেস্ক)