স্বামী-স্ত্রীর যে সমস্যায় কখনোই বাচ্চা হবে না (ভিডিওসহ)

স্বামী-স্ত্রীর

দাম্পত্য জীবনে সন্তান আসে আশীর্বাদ হয়ে। একটি পরিবারে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সেতুবন্ধন হচ্ছে সন্তান। সন্তান এক স্বর্গীয় উপহার। সন্তান প্রত্যেক দম্পতির স্বপ্ন। সন্তান না থাকলে স্বামী-স্ত্রী একটি নির্দিষ্ট সময়ের পর যেমন দুঃশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়েন, তেমনি সামাজিক ভাবেও নানা ধরনের প্রশ্নের মুখোমুখি হন। শুধু তারাই জানেন স্বপ্নভঙ্গের এ বেদনা কতটা অসহনীয়।

স্বামী-স্ত্রীর যে সমস্যা থাকলে কখনোই বাচ্চা হবে না-এ বিষয়ে পরামর্শ দেন স্ত্রী ও প্রসূতি রোগ ও বন্ধ্যত্ব বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. রাশিদা বেগম এবং বন্ধ্যত্ব বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. টি এ চৌধুরী।

বন্ধ্যত্ব নিয়ে আমাদের সমাজে বেশ কিছু ভুল ধারণা আছে। বিশেষ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ৪০ শতাংশ নারী গর্ভধারণ সমস্যাতে ভুগে থাকেন। বিশ্বে হাজার হাজার নারীর সন্তান না হওয়ায় সংসার ভেঙে যাচ্ছে। এছাড়াও তাদের মানসিক চাপ সৃষ্টি করে যা তাদের জন্য একটি বড় ধরনের চিন্তার বিষয়। সন্তান ধারণে অক্ষমতা শুধু যে নারীর সমস্যা তা নয়। এ সমস্যাতে পুরুষও অনেক সময় দায়ী থাকেন।

পুরুষের বন্ধ্যত্বের কারণসমূহ :

স্ত্রী ও প্রসূতি রোগ ও বন্ধ্যত্ব বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. রাশিদা বেগম বলেন, পুরুষদের বন্ধ্যত্বের মূল কারণ হলো পর্যাপ্ত মান সম্পন্ন শুক্রাণু তৈরিতে ব্যর্থতা। এর কারণগুলো হলো

ক) ৩০%-৪০% ক্ষেত্রে শুক্রাশয়ের ত্রুটি থাকে।

খ) শুক্রাণু বা বীর্য যথেষ্ট গতিশীল না হলে বা অস্বাভাবিক গঠনগত কারণে বন্ধ্যত্ব হতে পারে।

গ) কোনো কারণে শুক্রাণু তৈরি ব্যাহত হলে, যেমন জিনগত ত্রুটি, ভেরিকোসেলি, টেস্টিসের টিউমার বা ইনফেকশন অথবা কোনো ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া জনিত কারণে নরমাল শুক্রাণু তৈরি বাধাপ্রাপ্ত হতে পারে।

পুরুষদের বন্ধ্যত্ব শনাক্তকরণের ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো রোগীর পরিপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করা। এক্ষেত্রে অন্য অনেকগুলো শারীরিক সমস্যা সংযুক্ত থাকতে পারে। পরিবেশের নানাবিধ বিষাক্ত পদার্থও এর পেছনে থাকতে পারে। ধূমপান সব সময়ই বড় ধরনের ঝুঁকি তৈরি করে। শুক্রাশয় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া (ভ্যারিকোসিস, টরশন, ইনফেকশন)।

পুরুষ ও নারী উভয়ের ক্ষেত্রেই গর্ভধারণের হার বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কমে যায়। ৩৫ বছরের পর থেকে মেয়েদের ওভুলেশনের হার কমতে থাকে, একই সঙ্গে শুক্রাণুর কার্যকারিতাও বয়সের সঙ্গে সঙ্গে কমে। তাই এ চিকিৎসায় বিলম্ব হলে সাফল্যের হারও কমে যায়।

নারীদের বন্ধ্যত্বের কারণসমূহ :

নারীদের প্রাথমিকভাবে বন্ধ্যত্বের কারণকে তিন ভাগে ভাগ করা যেতে পারে। এগুলো হচ্ছে এনুভলেশন (ডিম্বাশয় থেকে ওভাম বা ডিম নিঃসরণ না হওয়া), জরায়ু বা ডিম্বনালীর সমস্যা এবং পুরুষ সঙ্গীর সমস্যা।

১) পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম

হরমনের অস্বাভাবিক মাত্রায় নিঃসরণ : কিছু কিছু হরমোন যেমন প্রলেক্টিন, থাইরয়েড হরমোন অথবা পিটুইটারি FSH, LH হরমোনের অস্বাভাবিক মাত্রায় নিঃসরণ ওভুলেশন ব্যাহত করে। সেই সঙ্গে প্রিমেচিউর ওভারিয়ান ফেইলিউর অথবা অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস, ক্যান্সার কিংবা কিডনি রোগেও ওভুলেশন ব্যাহত হতে পারে। কেমোথেরাপি বা রেডিওথেরাপি সাময়িক বা পুরোপুরিভাবে ওভারিকে অকার্যকর করে দিতে পারে।

২) জরায়ু বা ডিম্বনালীর সমস্যা

জরায়ুর টিউমার যেমন- এডিনোমায়োসিস,ফাইব্রয়েড বা পলিপ। পেলভিক ইনফ্লামেটরি ডিজিজ (পিআইডি) অথবা যেকোনো ইনফেকশনের কারণে ডিম্বনালী বন্ধ হয়ে ওভাম এবং শুক্রাণু নিষিক্ত করণের পথ বন্ধ করে দিতে পারে। অ্যান্ডোমেত্রিওসিস বন্ধ্যত্বের একটি পরিচিত কারণ। এ রোগের লক্ষণ মাসিকের সময় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ, পেটে ব্যথা ইত্যাদি। ইনফেকশন বা অ্যান্ডোমেট্রিওসিস জরায়ু এবং এর আশেপাশের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের স্বাভাবিক এনাটমি নষ্ট করে বন্ধ্যত্বের কারণ ঘটায়।

৩) পুরুষ সঙ্গীর সমস্যা

মেল (পুরুষ) ফ্যাক্টর : ৩০% ক্ষেত্রে পুরুষ সঙ্গীর সমস্যার কারণে বন্ধ্যত্ব হতে পারে। শুক্রাণু বা বীর্য যথেষ্ট গতিশীল না হলে বা অস্বাভাবিক গঠনগত কারণে বন্ধ্যত্ব হতে পারে। কোনো কারণে শুক্রাণু তৈরি ব্যাহত হলে, যেমন জিনগত ত্রুটি, ভেরিকোসেলি, টেস্টিসের টিউমার বা ইনফেকশন অথবা কোন ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া জনিত কারণে নরমাল শুক্রাণু তৈরি বাধাপ্রাপ্ত হতে পারে।

পুরুষ এবং নারী উভয়ের ক্ষেত্রেই গর্ভধারণের হার বয়স বাড়ার সঙ্গে কমে যায়। ৩৫ বছরের পর থেকে মেয়েদের ওভুলেশনের হার কমতে থাকে, একই সঙ্গে শুক্রাণু কার্যকারিতাও বয়সের সেঙ্গে সঙ্গে কমে। তাই এই চিকিৎসায় বিলম্ব হলে সাফল্যের হারও কমে যায়।

আরএম-২৭/২০/১০ (স্বাস্থ্য ডেস্ক, তথ্যসূত্র: সময়টিভি)