ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে ভেষজ উদ্ভিদ

ডায়াবেটিস

ডায়াবেটিসের মতো জেদি রোগকে সাধারণ কিছু ভেষজ উদ্ভিদ কতটা নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে, এমন ভাবনা কাজ করাটাই স্বাভাবিক। কিন্তু গবেষণা জানাচ্ছে ভিন্ন কথা। ওষুধের মতোই কার্যকর ও উপকারী কিছু ভেষজ উদ্ভিদ টাইপ-২ ডায়াবেটিসের মতো সমস্যাকে নিয়ন্ত্রণে রাখে খুব চমৎকারভাবে।

শুধু ডায়াবেটিসই নয়, কোলেস্টেরল ও রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে করার ক্ষেত্রেও উপকারী ভূমিকা রাখে এই উদ্ভিদগুলো। জেনে নিন এমন চারটি ভেষজ উদ্ভিদ সম্পর্কে।

জিনসেং (Ginseng)

চায়নিজ এই উদ্ভিদটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও রোগ প্রতিরোধকারী প্রাকৃতিক উপাদান হিসেবে সবচেয়ে বেশি পরিচিত। এই উপাদানের বিভিন্ন উপকারিতার মাঝে ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের মাত্রা কমানো ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের মতো উপকারটিও রয়েছে। গবেষকেরা দেখেছেন, জিনসেং কার্বহাইড্রেট শোষণের হারকে স্লথ করে, কোষের গ্লুকোজের কাজের মাত্রা বৃদ্ধি করে এবং ইনসুলিন উৎপাদনের হার বাড়ায়। সম্প্রতি ইউনিভার্সিটি অব টরেন্টোর গবেষকেরা দেখেছেন, সিনসেং থেকে উৎপাদিত ওষুধ গ্রহণে টাইপ-২ ডায়াবেটিসের হার কমে যায় তুলনামূলক অনেকটা।

মেথি

খাবারকে সুস্বাদু করার সাথে ডায়াবেটিসের সমস্যা কমাতেও মেথি উপকারী একটি প্রাকৃতিক উপাদান। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পার্কল্যান্ড হেলথ অ্যান্ড হসপিটাল সিস্টেমের রেজিস্টার্ড নার্স কেইলি রড্রিগেজ জানান, মেটাবলিজম বৃদ্ধিতে ও রক্তচাপ কমাতে মেথি লক্ষণীয় প্রভাব রাখে। বিশেষত এতে থাকা আঁশ কাজ করে সবচেয়ে বেশি। ২০১৭ সালের আয়ুর্বেদ সংক্রান্ত এক গবেষণার তথ্যানুসারে, মেথি রক্তচাপ কমানোর সাথে ডায়াবেটিসকেও নিয়ন্ত্রণে রাখতে কাজ করে।

করলা

ডায়াবেটিসের সমস্যায় সবচেয়ে বেশি উপকারী সবজি ও পরিচিত প্রাকৃতিক উপাদানটি হল করলা। জার্নাল অব এথনোফার্মাকোলজি করলাকে সাধারণ ডায়াবেটিস কমানোর ওষুধের সাথে তুলনা করছে এর উপকারী প্রভাবের জন্য। টাইপ-২ ডায়বেটিস কমানোর জন্য করলার উপকারিতা ও প্রভাব গবেষণা ও পরীক্ষার মাধ্যমে প্রমাণিত একটি বিষয়। তবে উপকারী এই সবজিটি ডায়াবেটিসের পাশাপাশি রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখতেও ভূমিকা পালন করে।

মেষশৃঙ্গ (Gymnema sylvestre)

মেষশৃঙ্গকে আমাদের দেশীয় ভাষায় অজাগন্ধিনি, মধুনাশিনি বা গুড় মারও বলা হয়ে থাকে। ভেষজ এই উদ্ভিদটি ভিনদেশে ‘সুগার ডেস্ট্রয়ার’ নামে অধিক পরিচিত। এমনকি আমাদের দেশীয় নামগুলোর দিকে তাকালেও সে বিষয়টি স্পষ্ট হবে।

মূলত এই উদ্ভিদের গুঁড়া ব্যবহৃত হয় ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও মেদ কমানোর জন্য। ২০১৭ সালে অ্যাপেটাইট শীর্ষক জার্নালে প্রকাশিত হওয়া একটি গবেষণাপত্র থেকে জানা যায়, গবেষণায় অংশ নেওয়া ৫১ জন স্বেচ্ছাসেবীর প্রত্যেকে দৈনিক মেষশৃঙ্গ গুঁড়ার তৈরি চা পান করে দেখেছেন, তাদের ডায়াবেটিসের সমস্যা আগের চেয়ে অনেক কমে গিয়েছে। এমনকি যাদের ওজনজনিত সমস্যা ছিল, তাদের ওজনও কমে গিয়েছে বেশ অনেকখানি।

আরএম-১৭/১১/০২ (স্বাস্থ্য ডেস্ক)