করোনাভাইরাসে মৃত্যুর আশঙ্কা কতটা?

করোনাভাইরাসে

বর্তমান বিশ্বের এক আতঙ্কের নাম করোনাভাইরাস। চীনে এই ভাইরাসের উৎপত্তি হলেও ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বের অর্ধশতাধিক দেশে। গতকাল রোববার পর্যন্ত সব মিলিয়ে গোটা বিশ্বে করোনাভাইরাসের থাবায় মৃতের সংখ্যা তিন হাজার ছাড়িয়েছে। এ ছাড়া মোট আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৮৭ হাজার। এর মধ্যে চীনেই মৃতের সংখ্যা দুই হাজার ৮০০-রও বেশি।

চীনের বাইরে করোনাভাইরাসের কারণে রীতিমতো ধুঁকছে দক্ষিণ কোরিয়া, ইরান ও ইতালি। দক্ষিণ কোরিয়ায় এখন পর্যন্ত ৩ হাজার ৭৩৬ জন কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেছে; মারা গেছেন ১৮ জন। ইতালিতে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৯ জনে, আক্রান্ত হয়েছে ১ হাজার ১২৮ জন।

এর ফলে স্বাভাবিকভাবেই চিন্তিত গোটা বিশ্ব। আরও বেশি চিন্তার কারণ হলো- করোনাভাইরাস থেকে বাঁচার উপায় এখনো মেলেনি।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জি নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়ছে, গবেষকরা মনে করছেন, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত প্রতি ১ হাজার জনের মধ্যে পাঁচ থেকে ৪০ জনের মৃত্যু হতে পারে।

বিজ্ঞানীদের একটা বড় অংশের মতে, প্রতি ১ হাজারে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের মধ্যে নয়জনের মৃত্যু হতে পারে। অর্থাৎ এই হিসাব অনুযায়ী, করোনাভাইরাসে রোগী মৃত্যুর হার ১ শতাংশেরও কম।

যদিও বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, এই মৃত্যুর বিষয়টি আরও অনেকগুলো বিষয়ের ওপর নির্ভর করে। যেমন- রোগীর বয়স, লিঙ্গ এবং স্বাস্থ্যের অবস্থা ইত্যাদি।

বিশেষজ্ঞদের মতে, করোনাভাইরাসে মৃত্যুর হার নিশ্চিতভাবে বলাটা বেশ কঠিন। এমনকি কতজন রোগীর মৃত্যু হলো, তা-ও স্পষ্ট ভাবে বলা যাচ্ছে না এই মুহূর্তে। কারণ, বেশির ভাগ করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা হিসাবের বাইরেই থেকে যায়। আর বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই প্রাথমিক উপসর্গগুলোকে উপেক্ষা করে অধিকাংশ রোগীই চিকিৎসকের কাছে যেতে চান না।

আবার এই ভাইরাসের প্রাথমিক উপসর্গগুলোর ভিন্নতার কারণে পুরো বিশ্বেই এখনো যথেষ্ট ধোঁয়াশা রয়েছে। ফলে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সঠিক সংখ্যাটা সামনে আসছে না।

লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজের সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, সংক্রমণ প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্তের ক্ষেত্রে কিছু দেশ পারদর্শী হলেও বিশ্বের অধিকাংশ দেশেই এর তেমন কোনো ব্যবস্থা নেই। ফলে আক্রান্তের হিসাব রাখাটা বেশ কঠিন। তাই মোট আক্রান্তের সংখ্যা সঠিকভাবে লিপিবদ্ধ করা না গেলে করোনাভাইরাসে মৃত্যুর হার নিশ্চিতভাবে বলা সম্ভব নয়।

চীনে করোনাভাইরাসে সংক্রমণের শিকার ৪৪ হাজার মানুষের তথ্য বিশ্লেষণ করে প্রথম যে বিশদ বিশ্লেষণটি পাওয়া যায় সেটি হলো, মধ্য বয়সীদের তুলনায় বয়ো-বৃদ্ধদের মধ্যে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর হার প্রায় ১০ গুণ বেশি।

৩০ বছরের কম বয়সীদের মধ্যে মৃত্যুহার সবচেয়ে কম, এ বয়সের ৪ হাজার ৫০০ জন আক্রান্তের মধ্যে মাত্র আটজনের মৃত্যুর খবর মিলেছে।

তবে যাদের উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, হৃদরোগ বা শ্বাসকষ্ট রয়েছে, তাদের মধ্যে মৃত্যুর হার প্রায় পাঁচগুণ বেশি।

আরএম-১৪/০৫/০৩ (স্বাস্থ্য ডেস্ক)