পিরিয়ডের সময় যে কারণে ধনে বীজ খাওয়া জরুরি!

পিরিয়ডের

বাঙ্গালিদের খাবারে মশলার ব্যবহার আদিকাল থেকেই। শুধুমাত্র স্বাদের জন্যই নয়, সুস্বাস্থ্যের জন্যও খাওয়া হয় মশলা। রান্নায় ব্যবহৃত প্রতিটি মশলাই আমাদের শরীর গঠনে নানাভাবে কাজে আসে। তেমনি একটি মশলা হচ্ছে ধনে বীজ।

এই মশলার সুন্দর গন্ধ খাবারের স্বাদ বাড়িয়ে তোলে। এর রয়েছে অতুলনীয় পুষ্টিগুণও। যা অনেকেরই অজানা। তবে আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে ধনে বীজের বহু গুণের কথা উল্লেখ রয়েছে। চলুন তবে জেনে নেয়া যাক নিয়মিত রান্নায় ধনে বীজ ব্যবহারের অজানা উপকারগুলো সম্পর্কে-

জ্বর এবং সর্দিতে দারুণ কার্যকরী

ধনে বীজের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফলিক অ্যাসিড, ভিটামিন এ, বেটা ক্যারোটিন এবং ভিটামিন সি। এই উপাদানগুলো রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে দ্বিগুণ করে তোলে। ফলে সর্দি এবং জ্বরের প্রকোপ কমতে শুরু করে।

ঋতুস্রাব সম্পর্কিত সমস্যা দূর করে

ঋতুস্রাবকালীন সময় অনেকের নানা রকম সমস্যা হতে দেখা যায়। এসময় অনেকের অতিরিক্ত হারে রক্তপাত হয়। যদি এ সমস্যায় ভুগে থাকেন তবে প্রতিদিন ধনে বীজ খেতে পারেন। এতে দারুণ উপকার পাওয়া যায়। কারণ নিয়মিত এ বীজ খেলে এন্ডোক্রাইন গ্রন্থি থেকে হরমোনের ক্ষরণ ঠিক মতো হতে শুরু হয়। ফলে ঋতুস্রাবকালীন পেটের ব্যথা এবং অতিরিক্ত রক্তপাত থেকে মুক্তি মেলে।

ত্বকজনিত সমস্যা সমাধানে

ক্যালিফোর্নিয়ার আয়ুর্বেদ বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণা থেকে জানা যায়, ত্বকের একাধিক সমস্যা দূর করতে ধনে বীজ দারুণ ভাবে কাজ আসে। যেমন- একজিমা, চুলকানি, ফোড়া বা ব্রণ ইত্যাদির প্রকোপ কমাতে ধনিয়ার কোনো বিকল্প হয় না বললেই চলে। এর মূল কারণ হল বীজে প্রচুর পরিমাণে জীবাণুনাশক উপাদান রয়েছে, যা এক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। প্রসঙ্গত, মুখের ঘা বা জ্বরঠোসাতেও ধনে ব্যবহার করলে উপকার মেলে। এই প্রাকৃতিক উপাদানটিতে থাকা লিনোলেয়িক অ্যাসিড যন্ত্রণা দূর করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।

ডায়াবেটিস কমাতে সাহায্য করে

ডায়াবেটিস হওয়ার জন্য এখন আর কোনো বয়সের ধাপ পার করা দরকার হয় না। অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাত্রার কারণে আজ কম বেশি সবাই এই সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন। এক্ষেত্রে ধনে বীজের কার্যকারিতা চোখে পরার মতো। কারণ একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে ধনে বীজে উপস্থিত একাধিক উপকারি উপাদান রক্তে শর্করার মাত্রা ঠিক রাখতে সাহায্য করে।

চুলের বৃদ্ধি ঘটায়

চুল ঝরে যাওয়া খুবই সাধারণ সমস্যা। এর পেছনে থাকে নানান কারণ। দুর্বল চুলের গোঁড়া, হরমোনের ভারসাম্যহীনতা, দুশ্চিন্তা, ডায়েটের গণ্ডগোল প্রভৃতি চুল ঝরার কারণ। এই সব সমস্যা কমাতে দারুণ কাজে আসে ধনে বীজ। কারণ এই প্রাকৃতিক উপাদানটি গোড়া থেকে নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে। সেই সঙ্গে চুলের গ্রন্থিকে মজবুত এবং স্বাস্থ্যসম্মত করে তুলতেও বিশেষ ভূমিকা নেয়। ফলে চুল পড়ার সমস্যা কমতে শুরু করে।

হজম শক্তির উন্নতি ঘটায়

কলকাতার এন আর এস হাসপাতালের অবসরপ্রাপ্ত চিকিৎসক ডা. অমল ঘোষ-এর মতে, ধনিয়া বীজের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকায় এটি লিভারের কাজ সুদৃঢ় করতে সাহায্য করে। ফলে খুব সহজে হজম প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। এছাড়াও এ বীজ খাবারে যেমন সুন্দর গন্ধ যোগ করে, তেমনই হজমেও সাহায্য করে। একই সঙ্গে ধনেতে উপস্থিত ফাইবার, ফসফরাস এবং ক্যালসিয়াম নানাভাবে শরীরের উপকার করে।

কোলেস্টেরলের মাত্রা সঠিক রাখে

এতে রয়েছে কোরিয়ান্ড্রিন নামক একটি উপাদান, যা হজম ক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি রক্তে উপস্থিত খারাপ কোলোস্টেরলের মাত্রা কমাতেও সাহায্য করে।

আরএম-২৪/১১/০৩ (স্বাস্থ্য ডেস্ক)