পানি ব্যবহারে সাশ্রয়ী হবার আহবান প্রধানমন্ত্রীর

পানি ব্যবহারে সবাইকে সাশ্রয়ী হবার আহবান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

মুন্সিগঞ্জের লৌহজংয়ের জশলদিয়ায় পদ্মা ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট (ফেজ-১) ঢাকার সাভারের তেতুলঝরায় ওয়েল ফিল্ড কনস্ট্রাকশন প্রজেক্ট (ফেজ-১) এবং নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের গান্ধাপুর ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্টের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনকালে তিনি একথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী ভূ-গর্ভস্থ পানির ওপর চাপ কমানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ভূ-গর্ভস্থ পানির ওপর নির্ভরতা না কমালে আমাদের গুরুতর পরিণতির মোকাবিলা করতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে জেলা ও উপজেলা থেকে ইউনিয়ন পর্যায়ের মানুষের কাছে নিরাপদ খাবার পানি পৌঁছে দেওয়া। আমরা বর্তমানে কেবল ঢাকা নয়, বিভাগীয় শহরগুলোতেও নিরাপদ খাবার পানি সরবরাহ করছি।

প্রথম দুইটি প্রকল্পের যথাক্রমে ৪৫ কোটি ও ১৫ কোটি লিটার পানি সরবরাহ এবং শেষের প্রকল্পটির ৫০ কোটি লিটার পানি শোধনের সক্ষমতা রয়েছে।

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী তাজুল ইসলাম, স্থানীয় সরবরাহ বিভাগের সচিব হেলাল উদ্দীন আহমেদ, বাংলাদেশে চীনের রাষ্ট্রদূত লি-জিমিং, দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত হু কাং-ইল, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (এডিবি) কান্ট্রি ডিরেক্টর মনমোহন প্রকাশ ও ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসিম এ খান অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।

এতে রাজধানীর ক্রমবর্ধমান পানি চাহিদা মেটাতে এই ৩ প্রকল্প এবং বিগত ১০ বছরে ঢাকা ওয়াসার গৃহীত বিভিন্ন প্রকল্প ভিডিও উপস্থাপনার মাধ্যমে দেখানো হয়।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘সবার জন্য নিরাপদ পানি’ সরকারের এই স্লোগানকে ধারণ করে ঢাকা ওয়াসা রাজধানীর বস্তিগুলোতে আইনসম্মত ও নিরাপদ পানি সংযোগের প্রক্রিয়া ইতোমধ্যে নিশ্চিত করেছে। পর্যায়ক্রমে সব বস্তি পানি সরবরাহের আওতায় আনা হবে।

তিনি বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে সব বিভাগীয় শহরে ভূ-উপরিস্থ পানির উৎসের মাধ্যমে নিরাপদ পানি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাজ চলছে।

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ ব্যবস্থার জন্য শিল্পাঞ্চল ও আবাসিক এলাকায় জলাধার নির্মাণ এবং বর্জ্য ও দূষিত পানি নিষ্কাশনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী সেচকাজে বৃষ্টি ও ভূ-উপরিস্থ পানি ব্যবহারের জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, বৃষ্টির পানি সংরক্ষণে ৪ হাজার ৭শ’ জলাধার নির্মাণ করা হয়েছে এবং গুরুত্বপূর্ণ সব নদীর নাব্যতা বজায় রাখা ও তা জলাধার হিসেবে ব্যবহার করতে নদী খননের কাজ চলছে।

তিনি বলেন, মানুষের নগরমুখী প্রবণতা বন্ধ করতে গ্রামের জনগণের কাছে নাগরিক সব সুযোগ-সুবিধা পৌঁছে দিতে সরকার কাজ করছে।

সবার জন্য বিশুদ্ধ খাবার পানি নিশ্চিত করতে সরকারের উদ্যোগ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পানি সরবরাহ, সুয়ারেজ এবং ড্রেনেজ সিস্টেম নিয়ে সরকার তিনটি মাস্টার প্লান তৈরি করেছে।

পাশাপাশি ঢাকা ওয়াটার সাপ্লাই অ্যান্ড সুয়ারেজ অ্যাক্ট, ন্যাশনাল ওয়াটার সাপ্লাই অ্যান্ড স্যানিটেশন অ্যাক্ট ২০১৪ পাস এবং ১৯৯৯ সালে জাতীয় পানি নীতি এবং ন্যাশনাল পলিসি ফর আর্সেনিক মিটিগেশন অ্যান্ড ইমপ্লিমেন্টেশন প্লান গ্রহণ করা হয়।

এমডিজি’র সফল বাস্তবায়নের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতিসংঘের ঘোষিত এসডিজি-২০৩০ এর ১৭টি লক্ষ্যের মধ্যে ৬ নম্বর হচ্ছে ‘সবার জন্য স্যানিটেশনের টেকসই ব্যবস্থাপনা ও পর্যাপ্ত সুযোগ নিশ্চিত করা। আমরা সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় এসডিজি সমন্বিত করেছি এবং এটি বাস্তবায়ন হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০৪১ সাল নাগাদ দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশকে একটি সমৃদ্ধ ও উন্নত দেশে পরিণত করতে কাজ করে যাচ্ছি।

বিএ-১৫/১০-১০ (আঞ্চলিক ডেস্ক)