সন্তানকে ‘হত্যা’: বাবার মামলা নিচ্ছে না পুলিশ

শেরপুরের শ্রীবরদীতে মায়ের বিরুদ্ধে শিশু সন্তানকে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগ করেছেন তার বাবা।

শুক্রবার রাতে উপজেলার ভেলুয়া ইউনিয়নের চরহাবর এলাকায় এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় শ্রীবরদী থানায় ওই শিশুর বাবা একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করতে গেলেও তা গ্রহণ করেনি পুলিশ।

জানা গেছে, আমিন মিয়ার সঙ্গে রত্না আক্তারের বিয়ের পর থেকেই দাম্পত্য কলহ চলছিল। গত প্রায় তিন বছর আগে আমিন মিয়া কাজের সন্ধানে ঢাকায় যান। পরবর্তীতে সেখানে আরও একটি বিয়ে করার সন্দেহে দাম্পত্য কলহ চরমে পৌঁছায়। এরইমধ্যে বেশ কয়েকবার স্থানীয়দের নিয়ে সালিশ বৈঠকও হয়।

শুক্রবার বিকেলে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে এ বিষয়ে আবারও বৈঠকের আয়োজন করলেও আমিন মিয়ার পরিবার অনুপস্থিত ছিল। শনিবার তাদের তালাকের কথা ছিল।

এদিকে শুক্রবার রাতে রত্না আক্তারের বাড়িতে আগুন লাগে। এতে গোয়াল ঘরসহ দুটি বসতঘর পুড়ে যায়। পরবর্তীতে গোয়াল ঘরে তাদের চার বছরের শিশু ইসমাঈলের মরদেহ পাওয়া যায়।

তবে শিশুটির বাবা আমিন মিয়ার অভিযোগ, দাম্পত্য কলহের কারণে বাবার বাড়িতেই থাকতো রত্না। তালাকের পর যাতে কোনো সমস্যা না হয়, এ জন্য শিশুকে পুড়িয়ে মেরেছে শিশুটির মা।

নিহত ইসমাইলের বাবা আমিন মিয়া জানান, এক লাখ টাকা দেনমোহরে রত্নাকে বিয়ে করলেও কিছুদিন আগে তার পরিবার এবং এলাকবাসীর চাপে নতুন করে চার লাখ টাকা দেনমোহর ধরা হয়। তারপর থেকে রত্না ও তার পরিবার আমিন মিয়াকে তালাকের জন্য চাপ দিয়ে আসছে। শনিবার ভেলুয়া ইউনিয়ন পরিষদে এ নিয়ে সালিসের কথা থাকলেও তালাকের পর যাতে কোনো সমস্যা না হয়, তাই রাতেই রত্না তার চার বছরের শিশু ইসমাইলকে পুড়িয়ে মারেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।

তিনি বলেন, রাতে শ্রীবরদী থানায় রত্নার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করতে গেলে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ বিষয়ে মামলা নিতে অস্বীকার করেন বলেও দাবি করেন নিহতের বাবা আমিন মিয়া।

এ দিকে পারিবারিক কলহ ও বৈঠকের কথা স্বীকার করে চেয়ারম্যান বলেন, আমিন ও রত্না দম্পতিকে নিয়ে তিনি; এমনকি আগের চেয়ারম্যানও দফায় দফায় বৈঠক করে কোনো সুরাহা করতে পারেননি। সবশেষে শনিবার ওই দম্পতিকে নিয়ে আপস মীমাংসার কথা ছিল। কিন্তু শুক্রবার রাতেই বাড়িতে আগুন লেগে ছেলেটি পুড়ে মারা গেছে, এটা মর্মান্তিক।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে রত্না বলেন, ভয় পেয়ে গোয়াল ঘরে পালানোর কারণেই মৃত্যু হয়েছে ইসমাইলের।

মামলা না নেয়ার বিষয়ে শ্রীবরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিপ্লব কুমার বিশ্বাসের কাছে জানতে চাইলে তিনি সময় সংবাদকে মোবাইল ফোনে বলেন, ‘এ ফালতু বিষয়ে সময় নষ্ট করার মতো সময় আপনাদের থাকতে পারে, আমার নেই। আপনি তদন্ত করে দেখেন কীভাবে বাচ্চাটা মারা গেল। চাকরি না থাকলেও এগুলো আলতু ফালতুর মূল্যায়ন আমাদের কাছে থাকবে না।’

এসএইচ-১৪/২০/২২ (আঞ্চলিক ডেস্ক)