বিকাল ৪:০৩
মঙ্গলবার
১৪ ই মে ২০২৪ ইংরেজি
৩১ শে বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
৬ ই জ্বিলকদ ১৪৪৫ হিজরী
spot_img

টানা চতুর্থ সপ্তাহেও বইছে ‘হাওয়া’

প্রথম কোনো বাংলাদেশি সিনেমা হিসাবে রেকর্ড টানা চতুর্থ সপ্তাহে আমেরিকায় চলছে ‘হাওয়া’। কানাডায়ও ভাগ বসিয়েছে অতীতের ‘আয়নাবাজি’ ও ‘দেবী’র চতুর্থ সপ্তাহের রেকর্ডে। নিশ্চিত করেছেন আন্তর্জাতিক পরিবেশক স্বপ্ন স্কেয়ারক্রোর প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ অলিউল্লাহ সজীব।

আজ আমেরিকার শোকেইস চেইনে নিউইয়র্ক এর জ্যামাইকা মাল্টিপ্লেক্স সিনেমাস থিয়েটারে টানা চতুর্থ সপ্তাহেও বইছে ‘হাওয়া’। এর আগে, রেকর্ড টানা তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত এই থিয়েটারে চলেছে ‘দেবী’। অবশ্য ‘দেবী’ এর আয় এই থিয়েটারে দ্বিতীয় সপ্তাহেই ছাড়িয়েছে ‘হাওয়া’। ৭৩ থিয়েটারে মুক্তির পর পুরো আমেরিকায় আয়ের দিক দিয়ে বাংলাদেশি সকল সিনেমার রেকর্ড মাত্র চারদিনেই ভেঙেছে ‘হাওয়া’।

একই দিন থেকে কানাডায় সিনেপ্লেক্স এন্টারটেইনমেন্ট চেইনে অন্টারিও প্রভিন্স এর টরন্টো শহরের সিনেপ্লেক্স এগলিংটন টাউন সেন্টার থিয়েটারে টানা চার সপ্তাহ চলছে ‘হাওয়া’। এর আগে, এই থিয়েটারেই টানা চার সপ্তাহ চলেছিলো ‘আয়নাবাজি’ ও ‘দেবী’। আর এই সপ্তাহে টরন্টো এর সিনেপ্লেক্স মর্নিং সাইড সিনেমাস থিয়েটারে টানা তৃতীয় সপ্তাহ চলছে ‘হাওয়া’।

এর আগে, কানাডায়‘আয়নাবাজি’ মুক্তি পেয়েছিলো চারটি আর ‘দেবী’ ৬টি হলে। আর ১৩টি থিয়েটারে মুক্তির প্রথম চারদিনেই আগের আয়ের রেকর্ড ভেঙেছে ‘হাওয়া’। ‘স্বপ্ন স্কেয়ারক্রো’ এর পরিবেশনায় সান মিউজিক অ্যান্ড মোশন পিকচার্স লিমিটেড প্রযোজিত এবং ফেইসকার্ড প্রোডাকশন নির্মিত মেজবাউর রহমান সুমনের সিনেমা ‘হাওয়া’ প্রথম সপ্তাহে কানাডায় ১৩টি এবং আমেরিকায় ৭৩টি মোট ৮৬ হলে মুক্তি পায়।

পরে দ্বিতীয় সপ্তাহে উত্তর আমেরিকায় ৩৫টি থিয়েটারে চলেছে হাওয়া। তৃতীয় সপ্তাহে চলেছে ১৩টি থিয়েটারে। আর সগৌরবে চতুর্থ সপ্তাহ চলছে ৩টি থিয়েটারে। সব মিলিয়ে উত্তর আমেরিকায় অবিশ্বাস্য ১৩৭ সপ্তাহ উদযাপন করছে ‘হাওয়া’। মুক্তির প্রথম চারদিনে লেবার ডে উইকেন্ড-এ বক্সঅফিসে ঝড় তুলে বক্সঅফিস কমস্কোর-এর ইউএস টপচার্টে ২৭ নম্বরে এসেছে ‘হাওয়া’।

এসএইচ-১৯/২৩/২২ (বিনোদন ডেস্ক)

শরণার্থী শিবিরে যৌন হয়রানির অভিযোগ

দক্ষিণ সুদানে জাতিসংঘ পরিচালিত শরণার্থী শিবিরগুলোতে কর্মরত বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার কর্মীদের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি আল-জাজিরা প্রকাশিত তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য। এতে আশ্রয় শিবিরে হয়রানির শিকার বেশ কয়েকজন শরণার্থীর ভয়াবহ অভিজ্ঞতাও তুলে ধরা হয়। এদিকে, আল-জারিরার ওই প্রতিবেদন প্রকাশের পর জরুরি ভিত্তিতে এ বিষয়ে রিপোর্ট চেয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।

দক্ষিণ সুদানের মালাকাল শরণার্থী শিবির। জাতিসংঘ পরিচালিত দেশটিতে সবচেয়ে বড় শরণার্থী শিবির এটি। গৃহযুদ্ধে জীবন বাঁচাতে ঘরবাড়ি ছেড়ে পালানো হাজার হাজার বাসিন্দাকে আশ্রয় দিতে ২০১৩ সালে ক্যাম্পটির কার্যক্রম শুরু হয়। তবে, দু-বছর না যেতেই সেখানে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার কর্মীদের বিরুদ্ধে শরণার্থীদের যৌথ হয়রানির অভিযোগ ওঠে। এরপর সাত বছর পেরিয়ে গেলেও অবস্থার খুব একটা পরিবর্তন হয়নি।

সম্প্রতি কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার প্রকাশিত এক তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে এসেছে ক্যাম্পটিতে যৌন হয়রানির ভয়াবহ চিত্র। অভিযোগের আঙুল ক্যাম্পটিতে কর্মরত বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার কর্মীদের দিকেই।

ক্যাম্পটিতে সরেজমিন ঘুরে বেশ কয়েকজন শরণার্থীর সঙ্গে কথা বলে ওই তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে আল-জাজিরা। এতে বলা হয়, মালাকাল শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নেয়া বহু শরণার্থীকে প্রায় নিয়মিতভাবে যৌন হয়রানি করে থাকেন উন্নয়ন সংস্থার কর্মীরা। যৌন হয়রানির বিষয়টি সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা না থাকায় এ নিয়ে তারা কখনো মুখ খোলেন না বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

শুধু তাই নয়, হয়রানির শিকার অনেকেই জানান, নানা ধরনের উপহার ও বাড়তি সহায়তার প্রলোভন দেখিয়ে তাদের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে জড়ান উন্নয়নকর্মীরা। সম্মতি না দিলে শরণার্থীদের সহায়তাও বন্ধ করে দেন তারা।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, যৌন হয়রানির বিষয়ে বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা জানান, যৌন হয়রানি বন্ধে সচেতনতা বৃদ্ধিসহ নানা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। এ ছাড়াও কী ধরনের আচরণ যৌন হয়রানির আওতায় পড়ে, তা শরণার্থীদের কাছেও তুলে ধরছেন তারা। অভিযোগ জানাতে হটলাইন নম্বর খোলা হয়েছে বলেও বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থার পক্ষ থেকে দাবি করা হয়।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জাতিসংঘ পরিচালিত শরণার্থী ক্যাম্পগুলোতে উন্নয়ন সংস্থার কর্মীদের বিরুদ্ধে বছরের পর বছর ধরে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠলেও সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ এ নিয়ে এখন পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য কোনো পদক্ষেপ নেয়নি সংস্থাটি।

এসএইচ-১৮/২৩/২২ (আন্তর্জাতিক ডেস্ক)

স্ত্রীকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় পুলিশ সদস্যকে কুপিয়ে জখম

ভোলা পৌরসভার পুকুরপাড়ে স্ত্রীকে উত্ত্যক্ত করার প্রতিবাদ করায় এক পুলিশ সদস্যকে কুপিয়ে জখম করেছে বখাটেরা।

শুক্রবার সন্ধ্যার পর পৌরসভার বক পুকুর পাড়ে এ ঘটনা ঘটেছে। আহত পুলিশ কনস্টবল এনামুল হক বর্তমানে ভোলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। হামলার সাথে জড়িতে সন্দেহে তাৎক্ষণিক পুলিশ এক যুবককে আটক করেছে।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন পুলিশ কনস্টবল এনামুল হক জানান, শুক্রবার সন্ধ্যায় তার স্ত্রীকে নিয়ে ভোলা শহরের পৌরসভা ও জেলা পরিষদের মাঝখানের বক ফোয়ারার কাছে ঘুরতে আসেন। এ সময় চারজন বখাটে তার স্ত্রীকে উত্ত্যক্ত করলে এনামুল এর প্রতিবাদ করেন। এনামুলের সাথে বখাটের দল হট্টগোল বাঁধিয়ে দেয়।

পরে সংঘবদ্ধ হয়ে পুলিশ সদস্য এনামুলের উপর হামলা চালায় তারা। এক পর্যায়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলা, কান, হাত ও পিঠে কুপিয়ে জখম করে। আশপাশের লোকজন তাকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠায়।

পুলিশ সদস্য পরিচয় দেয়ায় হামলাকারীরা আরও ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে সন্দেহজনক একজনকে আটক করেছে। তবে পরিচয় প্রকাশ করেনি পুলিশ। বাকিদের আটকে অভিযান শুরু করেছে পুলিশ।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. ফরহাদ সরদার জানিয়েছেন, আহত পুলিশ সদস্য চিকিৎসাধীন আছেন। বিষয়টি তারা তদন্ত করছেন। তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানাবেন।

এসএইচ-১৭/২৩/২২ (আঞ্চলিক ডেস্ক)

ইরানের নৈতিকতা পুলিশের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিল যুক্তরাষ্ট্র

FILE - Kurdish women activists hold headscarfs and a portrait of Iranian woman Mahsa Amini, with Arabic that reads, "The woman is life, don't kill the life," during a protest against her death in Iran, at Martyrs' Square in downtown Beirut, Sept. 21, 2022. The U.S. government has imposed sanctions on Iran’s morality police after the death in custody of a woman who'd been accused of wearing her Islamic headgear too loosely. (AP Photo/Bilal Hussein, File)

পুলিশি হেফাজতে তরুণীর মৃত্যুর ঘটনায় এবার ইরানের নৈতিকতা পুলিশের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিল যুক্তরাষ্ট্র। এ ছাড়া হিজাব পরার শর্ত না মানায় সিএনএনের এক সাংবাদিকের সঙ্গে সাক্ষাৎকার বাতিল করেছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট। খবর রয়টার্স।

সংবাদমাধ্যমের বরাতে জানা যায়, ইরানে নৈতিকতা পুলিশের হেফাজতে মাহসা আমিনির মৃত্যুর প্রতিবাদে ছড়িয়ে পড়া বিক্ষোভে সপ্তম দিনেও উত্তাল ছিল ইরান। অনেক সরকারি ভবন এবং পুলিশ স্টেশনে আগুন লাগানোর খবর জানিয়েছে দেশটির সরকার। ৮০টিরও বেশি শহরে ছড়িয়ে পড়া বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে জোর চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ। এরই মধ্যে অনেককেই আটক করা হয়েছে। দেশজুড়ে বন্ধ রাখা হয়েছে ইন্টারনেট সেবা।

ইরানের পাশাপাশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রতিবাদ বিক্ষোভ হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, নেদারল্যান্ডস ও গ্রিসের বিক্ষোভে ইরান সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ার দাবি জানান বিক্ষোভকারীরা। এরই মধ্যে দেশটির নৈতিকতা পুলিশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে মার্কিন অর্থ দফতর। একই সঙ্গে ইরানের নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর সাত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে বাইডেন প্রশাসন।

যুক্তরাষ্ট্রের এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছেন ইরানের গোয়েন্দা বিভাগের মন্ত্রী ঈসমাইল খতিব, বাসিজ বাহিনীর উপ-অধিনায়ক সালার আবনুশ, আইন প্রয়োগকারী বাহিনীর উপ-অধিনায়ক কাসেম রেজাই, ওই বাহিনীর প্রাদেশিক বাহিনী মানুশের আমানুল্লাহি এবং ইরানি সেনার স্থলবাহিনীর কমান্ডার কিউমার্স হেইদারি।

মূলত ইরানের নৈতিক পুলিশপ্রধান মোহাম্মদ রোস্তামি চেশমেহ গাচি এবং তেহরানে এই বাহিনীর পরিচালক হাজ আহমেদ মিরজেইকে লক্ষ্য করে এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। ২২ বছর বয়সী ইরানি তরুণী মাহসা আমিনির মৃত্যুর প্রতিবাদের পর মিরজেইকে অবশ্য সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।

মার্কিন অর্থ দফতর এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এই কর্মকর্তারা এমন সব সংগঠনের তদরকি করেন, যারা শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদকারীদের এবং ইরানের সুশীল সমাজের সদস্যদের, রাজনৈতিক ভিন্ন মতাবলম্বীদের এবং ইরানের বাহাই সম্প্রদায়ের লোকজনকে দমন করতে নিয়মিত সহিংসতা চালিয়ে থাকে।

মার্কিন অর্থ দফতরের ওই বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এই নিষেধাজ্ঞার চূড়ান্ত লক্ষ্য শাস্তি দেয়া নয়; বরং তাদের আচরণে ইতিবাচক পরিবর্তন নিয়ে আসা।

এদিকে, হিজাব না পরায় সিএনএনের সাংবাদিক ক্রিশ্চিয়ান আমানপোরের সঙ্গে নিজের সাক্ষাৎকার বাতিল করেছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি। মার্কিন গণমাধ্যমটির দাবি, শেষ মুহূর্তে ওই নারী সাংবাদিক হিজাব পরার শর্ত মানতে অস্বীকৃতি জানানোয় তা বাতিল হয়। যদিও বিবিসিসহ অন্যান্য সংবাদমাধ্যমের দাবি, প্রেসিডেন্ট নয়, সাক্ষাৎকারটি বাতিল করেছেন খোদ সিএনএনের ওই সাংবাদিক।

গত সপ্তাহে ঠিকমতো হিজাব না পরার অভিযোগে মাহসা আমিনিকে গ্রেফতার করে ইরানের নৈতিকতা পুলিশ। এরপর তার মৃত্যু হয়। তাকে নির্যাতন করে মেরে ফেলা হয়েছে–এমন খবর ছড়িয়ে পড়ার পর দেশজুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। তবে, ইরান কর্তৃপক্ষের দাবি, গ্রেফতার হওয়ার পর মাশা আমিনি ‘হৃদ্‌রোগে’ আক্রান্ত হয়ে কোমায় চলে যান এবং পরে তার মৃত্যু হয়।

এসএইচ-১৬/২৩/২২ (আন্তর্জাতিক ডেস্ক)

রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে বাংলাদেশ যথেষ্ট আন্তর্জাতিক সমর্থন পাচ্ছে না!

মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর হাতে ব্যাপক নিপীড়নের শিকার হয়ে বাংলাদেশে প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা আশ্রয় নেওয়ার পাঁচ বছর পার হয়ে গেলেও সংকট সমাধানের কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।

রোহিঙ্গাদের নিয়ে আগ্রহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে বরং ফিকে হয়ে আসছে। পর্যবেক্ষকরা বলছেন, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং বাণিজ্যিক স্বার্থের কাছে ঘুরপাক খাচ্ছে রোহিঙ্গা সংকট।

রোহিঙ্গাদের উচ্ছেদের কয়েক বছরের মধ্যেই মিয়ানমারে আবারো সেনা অভ্যুত্থান হয়েছে। যদিও মিয়ানমারে সেনাবাহিনী সবসময়ই সবকিছু পরিচালনা করেছে।

সামরিক সরকার এখন মিয়ানমারে গণতন্ত্র-পন্থী এবং বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর উপর দমন পীড়ন চালাচ্ছে।

প্রশ্ন হচ্ছে, এতো কিছুর পরেও মিয়ানমার কিংবা দেশটির সরকারের বিরুদ্ধে প্রভাবশালী রাষ্ট্রগুলো কেন কড়া পদক্ষেপ নিতে পারছে না?

এর বড় কারণ হচ্ছে, মিয়ানমারের প্রাকৃতিক সম্পদ এবং দেশটির কৌশলগত গুরুত্ব।

চীন, জাপান, রাশিয়া এবং ভারতের সাথে মিয়ানমারের সম্পর্ক বেশ ভালো। এছাড়া দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অর্থনৈতিক জোট আসিয়ানের সদস্য মিয়ানমার। আসিয়ানভুক্ত দেশগুলোর সাথেও মিয়ানমারের ভালো সম্পর্ক রয়েছে।

বিশ্ব রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ দুটি দেশ – চীন এবং রাশিয়া কখনোই মিয়ানমারের বিপক্ষে যায়নি।

চীনের সাথে মিয়ানমারের ব্যাপক অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিক এবং রাজনৈতিক সম্পর্ক আছে।

আমেরিকার হার্ভার্ড ইন্টারন্যাশনাল রিভিউতে প্রকাশিত এক নিবন্ধে বলা হয়েছে মিয়ানমারের উপর চীনের অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক প্রভাব অনেক বেশি।

মিয়ানমারে অবকাঠামো এবং জ্বালানি খাতে চীনের ব্যাপক বিনিয়োগ আছে। তাছাড়া চীনের বেল্ট এন্ড রোড ইনিশিয়েটিভের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হচ্ছে মিয়ানমার।

দশকের পর দশক ধরে অর্থনৈতিক স্বার্থে চীন কখনো মিয়ানমারের সরকারের বিপক্ষে যেতে চায়নি। দেশটিতে যা কিছু ঘটুক না কেন বিনিয়োগ ও ব্যবসার স্বার্থে চীন সেগুলোর বিরুদ্ধে কোন কথা বলেনি।

আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, মিয়ানমারে সামরিক জান্তা ক্ষমতা নেবার পরবর্তী এক বছরে দেশটি ৩৮০ কোটি ডলারের বিদেশি বিনিয়োগ অনুমোদন করেছে।

এর মধ্যে ২৫০ কোটি ডলার ব্যয় করে একটি তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস প্লান্ট করবে চীন।

চীনের বেল্ট এন্ড রোড ইনিশিয়েটিভের আওতায় রাখাইন রাজ্যের তেল ও গ্যাস ক্ষেত্র থেকে চীনের ইউনান প্রদেশে একটি জ্বালানি করিডোর স্থাপনের পরিকল্পনা আছে।

বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবির বিবিসি বাংলাকে বলেন, “আমেরিকার সাথে চীনের যদি কোন সংঘাত হয়, তাহলে তারা মালাক্কা প্রণালী বন্ধ করে দেবে। এটা চীন জানে। তখন তারা তেল ও গ্যাসের সরবরাহ কোথায় পাবে?”

“চীন প্রচুর তেল-গ্যাস আমদানি করে। সেটা মিয়ানমার দিচ্ছে আকিয়াব বন্দরের মাধ্যমে। পাইপলাইনের মাধ্যমে চীন তেল-গ্যাস নিতে পারছে। ”

এসব কারণে মিয়ানমারের প্রতি চীনের সমর্থন এবং সহানুভূতি আছে বলে মি. কবির উল্লেখ করেন।

রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আসিয়ান জোট মিয়ানমারের বিরুদ্ধে শক্ত কোন অবস্থান নেয়নি। সেটিরও বড় কারণ ব্যবসায়িক বলে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। এই অঞ্চলে সবচেয়ে কার্যকরী অর্থনৈতিক জোট হচ্ছে আসিয়ান।

আসিয়ানের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য রাষ্ট্র সিঙ্গাপুর মিয়ানমারে শীর্ষ বিনিয়োগকারী। তাদের অনুমোদিত বিনিয়োগরে পরিমাণ প্রায় ২৪০০ কোটি ডলার। অর্থাৎ মিয়ানমারে যত বিদেশি বিনিয়োগ আছে তার এক-চতুর্থাংশ হচ্ছে সিঙ্গাপুরের।

এছাড়া জাপান, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড এবং দক্ষিণ কোরিয়া থেকেও বিনিয়োগ প্রস্তাব এসেছে বলে মিয়ানমার সরকারের বরাত দিয়ে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। যদিও সামরিক জান্তা ক্ষমতা নেবার পর বিদেশি বিনিয়োগ সার্বিকভাবে কমেছে।

রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবির বলেন, মিয়ানমারের প্রতি জাপানেরও এক ধরনের সমর্থন আছে।

জাতিসংঘের মিয়ানমার বিষয়ক মানবাধিকার বিশেষজ্ঞ টমাস এন্ড্রুস সম্প্রতি বলেছেন, চীন এবং রাশিয়া মিয়ানমারের সামরিক সরকারকে অস্ত্র দিয়ে সহায়তা করেছে।

সাবেক মার্কিন কংগ্রেসম্যান টমাস এন্ড্রুস সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে বলেছেন, চীন এবং রাশিয়ার পাশাপাশি সার্বিয়াও মিয়ানমারের সামরিক সরকারকে অস্ত্র দিচ্ছে, যদিও তারা জানে যে এসব অস্ত্র বেসামরিক মানুষের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হবে।

মিয়ানমারে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করার আহবান জানিয়ে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে গত বছর একটি প্রস্তাব পাশ হয়েছে।

চীন এবং রাশিয়া এ প্রস্তাবে ভোট দান থেকে বিরত ছিল।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের একজন শীর্ষ কূটনীতিক জোসেপ বোরেল বলেছেন, মিয়ানমারের সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যেসব পদক্ষেপ নিচ্ছে সেগুলো চীন এবং রাশিয়ার কারণে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

রোহিঙ্গাদের উপর নিপীড়ন নিয়ে বিভিন্ন দেশ যখন ব্যাপক সরব ছিল তখন মিয়ানমারকে নিয়ে চীন এবং রাশিয়া কোন উচ্চবাচ্য করেনি। বরং মিয়ানমারের সাথে এ দুটি দেশ বেশ সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখেছে। রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে তারা কখনো মিয়ানমারের নিন্দা করেনি।

রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবির বলেন, মিয়ানমারের সাথে রাশিয়ার সম্পর্ক সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তৈরি হয়েছে। এর বড় কারণ হচ্ছে রাশিয়া মিয়ানমারের কাছে অস্ত্র বিক্রি করছে।

ভারতের সাথে মিয়ানমারের প্রায় ১৬০০ কিলোমিটার স্থল সীমান্ত আছে। এছাড়া বঙ্গোবসাগরেও উভয় দেশের সীমান্ত রয়েছে।

ভারত ও মিয়ানমার ১৯৫১ সালে একটি মৈত্রী চুক্তি করেছিল। রোহিঙ্গাদের উপর ব্যাপক নিপীড়ন হলেও ভারত কড়াভাবে সেটির নিন্দা করতে পারেনি।

মিয়ানমারে বিভিন্ন সময় দমন-পীড়ন নিয়ে ভারত উদ্বেগ জানালেও তারা শক্ত অবস্থান নিতে পারেনি।

সংকটের শুরুর দিকে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে যত প্রস্তাব এসেছিল সেগুলোতে ভোটদানে বিরত ছিল ভারত।

ভারতের সাথে মিয়ানমারের বাণিজ্যিক সম্পর্কও আছে। অবকাঠামো, তথ্যপ্রযুক্তি, জ্বালানিসহ বিভিন্ন খাতে ভারতের বিনিয়োগ আছে মিয়ানমারে।

বিশ্লেষকরা মনে করেন, মিয়ানমারের জ্বালানি সম্পদ এবং বিভিন্ন বিরল প্রাকৃতিক পদার্থ ভারতের তথ্য প্রযুক্তি খাতের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

তাছাড়া মিয়ানমারের ভৌগোলিক অবস্থান ভারতের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, মিয়ানমার হচ্ছে দক্ষিণ এশিয়া এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যে সংযোগকারী।

তাছাড়া ভারত থেকে বিচ্ছিন্নতাবাদীরা যাতে মিয়ানমারে গিয়ে আশ্রয় নিতে না পারে সেজন্য দুই দেশের মধ্যে একটি চুক্তিও রয়েছে।

সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবির বলেন, ভারতের আশংকা চীনকে নিয়ে।

চীন যদি মিয়ানমারে একক আধিপত্য পেয়ে যায় তাহলে মিয়ানমারকে ব্যবহার করে তারা ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে সমস্যা তৈরি করতে পারে।

এই আশংকা থেকেই ভারত মিয়ানমারের সাথে ভালো সম্পর্ক বজায় রেখে চলে বলে উল্লেখ করেন কবির।

রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবির বলেন, মিয়ানমার ইস্যুতে পশ্চিমা দেশগুলো শক্ত অবস্থানে আছে।

রোহিঙ্গা সংকট এবং সামরিক অভ্যুত্থানের পর মিয়ানমারের সেনাবাহিনী এবং তাদের কর্মকর্তাদের উপর আমেরিকা এবং ইউরোপের দেশগুলো কিছু নিষেধাজ্ঞা দিলেও এর চেয়ে বেশি কার্যকরী কিছু তারা করতে পারেনি।

এর পেছনেও একটি দীর্ঘমেয়াদী বাণিজ্যিক স্বার্থ আছে বলে অনেকে মনে করেন। পশ্চিমা দেশগুলো মিয়ানমারকে পুরোপুরি ছেড়ে দিতে চায় না।

দু’হাজার এগারো সালে মিয়ানমারে সামরিক শাসন প্রত্যাহারের পর পশ্চিমা ব্যবসায়ীরা দেশটিতে ভিড় করতে শুরু করে। দেশটির প্রাকৃতিক সম্পদের দিকই তাদের নজর ছিল।

জ্বালানি, টেলিযোগাযোগ, হোটেল, তথ্য প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করেছিল পশ্চিমা কোম্পানিগুলো। ২০১৫ সালে বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল মিয়ানমারে ব্যাপকভাবে বিদেশি বিনিয়োগ বেড়েছে। দেশটির মোট জিডিপির ছয় শতাংশ হয়েছিল বিদেশি বিনিয়োগ।

ইউরোপিয়ান কমিশনের ওয়েবসাইটে ২০২১ সালে দেয়া তথ্যে বলা হয়েছে চীন, থাইল্যান্ড এবং সিঙ্গাপুরের পরে মিয়ানমারের চতুর্থ ব্যবসায়ী-অংশীদার ইউরোপীয় ইউনিয়ন। উভয় পক্ষের মধ্যে বছরে ২৫০ কোটি ডলারের বেশি বাণিজ্য হয়।

সামরিক শাসন প্রত্যাহারের পর নরওয়ের টেলিনরও বিনিয়োগ করেছিল। যদিও ২০২১ সালে সামরিক শাসন পুনরায় ফিরে আসার পরে টেলিনর তাদের সাবসিডিয়ারি কোম্পানি লেবাননের একটি কোম্পানির কাছে বিক্রি করে মিয়ানমার ত্যাগ করে।

মিয়ানমারের সবচেয়ে বড় আয় আসে তেল গ্যাস বিক্রি থেকে। তাদের রাজস্ব আয়ের অর্ধেক আসে এই খাত থেকে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে মিয়ানমারের বিক্ষোভকারীরা দেশটির তেল-গ্যাস ফান্ডের উপর নিষেধাজ্ঞা দেবার দাবি তুলেছিলে। কিন্তু পশ্চিমা কোম্পানিগুলো এর বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়।

রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবির বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন হয়তো চাইলে মিয়ানমারের উপর বাণিজ্যিক অবরোধ দিতে পারে। কিন্তু সেটা তারা দিচ্ছে না।

“আমার ধারণা এটা তারা দিচ্ছে না কারণ এটা দিলে সাধারণ মানুষ বেকায়দায় পড়বে,” বলেন কবির।

এসএইচ-১৫/২৩/২২ (অনলাইন ডেস্ক, সূত্র : বিবিসি)

টাকা দিয়ে থামাতে হয়েছিল সাফজয়ী স্বপ্নার বিয়ে

২০১২ সালে বঙ্গমাতা ফুটবল টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর সিরাত জাহান স্বপ্নার বিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল পরিবার। কিন্তু স্থানীয় কোচ হারুন কিছু টাকা দিয়ে থামিয়েছিলেন সেই বিয়ে। সেই স্বপ্নাই নেপাল বিজয়ীদের ১০ নম্বর জার্সি ধারী। রংপুরের নারী ফুটবলারদের রোল মডেল এখন এই স্বপ্না। তাকে বরণ করতে চলছে ওই গ্রামের মানুষের নানা আয়োজন।

নেপালকে হারিয়ে সাফ ফুটবল চ্যাম্পিয়ন হওয়ার আনন্দে যখন মাতোয়ারা বাংলাদেশ, তখন থেকেই নয়াপুকুর-পালিচড়া জুড়ে আনন্দের ঢেউ, সাথে স্বপ্নার জন্য অপেক্ষার ক্ষণ গণনা। সদ্যপুষ্করনী যুব স্পোর্টিং ক্লাবে স্বপ্নার জুনিয়র ফুটবলারদের আনন্দের মাত্রাটা একটু বেশিই। স্বপ্নাকে ঘিরে প্রত্যাশার ডালপালাও বাড়ন্ত তাদের। কয়েকজন জুনিয়র নারী ফুটবলার জানান, যে বিশাল অর্জন এনে দিয়েছেন স্বপ্না, তাকে ভালো খেলা দিয়েই বরণ করে নিতে চান তারা। স্বপ্না তাদের সাথে অনুশীলন করবেন বলেও তারা বেশ উত্তেজিত।

স্বপ্নার জন্য এখন পুরো দেশজুড়ে হৈচৈ। তবে তার ফুটবলে ক্যারিয়ার শুরুতেই ২০১২ সালে বিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল পরিবার। তখন কোচ হারুন অর রশিদ মায়ের কাছ থেকে কিনে নিয়েছিলেন স্বপ্নাকে। না খেয়েও অনুশীলন করতে হয়েছে তাকে। স্বপ্নার মা লিপি বেগম জানান, অনেক সময় খাবারও দিতে পারেননি। কখনও বুট দিতে পারেননি, দিতে পারেননি খেলার পোষাকও।

স্বপ্নার প্রথম কোচ হারুন অর রশিদ বলেন, ২০১২ সালে স্বপ্নার মা বলেন, স্বপ্নার আর ফুটবল খেলা হবে না। তখন আমি কিছু টাকা দিই তাকে। বলি, আজ থেকে এই মেয়ে আমার। তাকে আমি কিনে নিলাম। এই মেয়েকে বাংলাদেশ দলে খেলাবোই, এ আমার প্রত্যয়।

আজকের স্বপ্নার যাত্রা শুরু হয়েছিল ২০১১ সালে ১নং পালিচড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের হয়ে বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা ফুটবল টুর্নামেন্টের মাধ্যমে। সেই শুরুর দিনগুলো ছিল কাটায় ভরা। মেয়েদের ফুটবল খেলাকে এলাকার মুরুব্বিরা সমর্থন দিতে চাননি। তবে গ্রামবাসী-প্রশাসনের সর্বাত্মক সহযোগিতায় বাধা উতরিয়ে স্বপ্নারা এখন তারকা। স্বপ্নাকে বরণে চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি। হবে প্রীতি ম্যাচসহ আনন্দ যাত্রা। গ্রামবাসী জানান, তারা এই অর্জনে আনন্দিত ও গর্বিত।

এসএইচ-১৪/২৩/২২ (উত্তরাঞ্চল ডেস্ক)

হামজা হতে পারে বাংলাদেশের জন্য ‘আলোক-সংকেত’: ওয়াটফোর্ড কোচ

বিগত কয়েক বছরে বেশ কয়েকজন প্রবাসী ফুটবলার বাংলাদেশের জার্সিতে খেলেছেন। ডেনমার্ক থেকে এসেছিলেন জামাল ভূঁইয়া, যিনি এখন লাল-সবুজদের আর্মব্যান্ড পরে খেলেন। তার পর ফিনল্যান্ড থেকে এসেছেন তারিক কাজি। এবার বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত হামজা চৌধুরীরও লাল-সবুজদের হয়ে খেলার গুঞ্জন ভেসে বেড়াচ্ছে। মূলত হামজাই কিছু দিন আগে বাংলাদেশের হয়ে খেলার আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন। এবার তার ওয়াটফোর্ড কোচ রব এডওয়ার্ডস জানান, বাংলাদেশের হয়ে খেললে চৌধুরী হতে পারে দেশটির আলোক-সংকেত।

স্কাই স্পোর্টসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। চ্যাম্পিয়নশিপে ওয়াটফোর্ডের দায়িত্ব পালন করা কোচ রব বলেন, “আমি মনে করি চৌধুরী যা (বাংলাদেশের হয়ে খেলা) করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে, সেটা করতে পারলে অনেক ভালো হবে। সে বাংলাদেশের ‘আলোক-সংকেত’ হতে পারে। ওর কাছ থেকে অন্যরা অনুপ্রাণিত হবে, অনেক কিছু শিখতে পারবে।”

সপ্তাহ খানেক আগে এক সাক্ষাৎকারে হামজা বলেছিলেন, ‘হ্যাঁ, আমি বাংলাদেশের হয়ে খেলতে চাই। আমি এখানে থাকলে আগামী কয়েক বছরে আরও ভালো পর্যায়ে নিজেকে নিয়ে যেতে পারব। তবে আমি বাংলাদেশে গিয়ে খেলতে পারলে আরও গর্বিত হব। সেখানে নিয়মিত খেলতে চাই।’

বাংলাদেশের হবিগঞ্জে হামজা চৌধুরীর নানাবাড়ি। ছোটবেলায় সেখানকার আলো-বাতাস না পেলেও বেশ কয়েকবার বাংলাদেশের এসেছেন হামজা চৌধুরী। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে লেস্টার সিটির হয়ে খেলা এ ফুটবলার বাংলাদেশের সিলেট অঞ্চলে তার শিকড়ের সঙ্গে একটি ‘দৃঢ় সংযোগ’ অনুভব করেন এবং তার সন্তানদের দেশে কিছু সময় কাটানোর সুযোগ দিতে চান।

বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসা দেখে আপ্লুত হামজা বলেছিলেন, ‘প্রথমে আমি অবাক হয়েছিলাম, আমার সাফল্যে বাংলাদেশ থেকে অনেক শুভকামনা পেয়েছি। তাদের কাছ থেকে আমি অনেক সাপোর্ট পেয়েছি। ভালো কিছু করলে দেশ থেকে সবাই সমর্থন জানাত। আমার মা সারা রাত জেগে থাকতেন। কারণ, আমার খালা এবং কাজিনরা বাংলাদেশ থেকে ফোন করবেন।’

দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবলে অনেক সম্ভাবনা আছে বলেও মনে করেন হামজা। বলেন, ‘বাংলাদেশের সমর্থকদের ভালোবাসা সত্যিই আমার চোখ খুলে দিয়েছে। একজন পেশাদার ফুটবলার হিসেবে আপনার কতটা সুযোগ আছে, বিশেষ করে একজন দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবলার হিসেবে। আমি একটি শক্তিশালী সংযোগ অনুভব করি এবং ব্যবহার করতে চাই ৷ আমার অভিজ্ঞতাগুলো বাংলাদেশের ফুটবলে কাজে লাগাতে চাই।’

এসএইচ-১৩/২৩/২২ (স্পোর্টস ডেস্ক)

র‍্যাব পরিচয়ে গুড় ব্যবসায়ীর কাছ থেকে চাঁদাবাজি, কথিত সাংবাদিক আটক

রাজশাহীর চারঘাটে এক গুড় ব্যবসায়ীর কাছ থেকে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার ভুয়া পরিচয় দিয়ে দুই লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে কথিত এক সাংবাদিককে গ্রেফতার করেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)।

বৃহস্পতিবার রাতে তারিক নামে কথিত ওই সাংবাদিককে মেরামতপুর এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।

চারঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুবুল আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

ওসি জানান, বুধবার রাতে অভিযুক্ত কথিত সাংবাদিক তারিকের নেতৃত্বে একটি দল আইন প্রয়োগকারী সংস্থার ভুয়া পরিচয় দিয়ে চারঘাট উপজেলার মেরামতপুর গ্রামের কৃষক ও গুড় ব্যবসায়ী ইব্রাহিম হোসেনের বাড়িতে গিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে দুই লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়।

পরে ভুক্তভোগী ইব্রাহিম হোসেন বাদী হয়ে বুধবার রাতেই তারিককে প্রধান এবং অজ্ঞাতনামা আরও চারজনকে আসামি করে চারঘাট মডেল থানায় একটি মামলা করেন। মামলার পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার রাতে র‌্যাব-৫-এর সদস্যরা তারিককে মেরামতপুর এলাকা থেকে গ্রেফতার করে চারঘাট মডেল থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন।

ওসি আরও জানান, আটক আসামিকে গ্রেফতার দেখিয়ে শুক্রবার সকালে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। অজ্ঞাতনামা আসামিদের শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের গ্রেফতারে জোর চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

এসএইচ-১২/২৩/২২ (নিজস্ব প্রতিবেদক)

ঋণ পরিশোধে অনৈতিক কাজে বাধ্য করতেন মা!

ঋণ পরিশোধে কিশোরী মেয়েকে জোরপূর্বক অনৈতিক কাজে বাধ্য করতেন মা। এমনটাই অভিযোগ করেছেন এক কিশোরী। শুধু তাই নয়, নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে অবশেষে মায়ের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন ওই কিশোরী। এমন ঘটনা ঘটেছে মালয়েশিয়ার জোহর রাজ্যের তামান জোহরজায়া এলাকায়।

ওই কিশোরীর নাম ঝান। বয়স মাত্র ১৭ বছর। তিনি জানান, তিনি ও তার মা জোহর রাজ্যের তামান জোহরজায়া এলাকায় বসবাস করতেন। তবে তার মা কোনো চাকরি করতেন না। ধার-কর্জ করে সংসার চালাতেন।

ঝান জানান, এভাবে একসময় ঋণে জর্জরিত হয়ে পড়েন তার মা। আর সেই ঋণ পরিশোধে অর্থ যোগাড় করতে তাকে দিয়ে অনৈতিক কাজ করাতে বাধ্য করতেন। ঝান বলেন, তার মা তাকে ‘ঋণ পরিশোধের হাতিয়ার’ হিসেবে ব্যবহার করতেন। এমনকি অর্থের জন্য তাকে ষাটোর্ধ্ব পুরুষের হাতে তুলে দিতেও দ্বিধা করতেন না।

মায়ের এসব নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে একসময় বাড়ি ছেড়ে পালান ঝান। আশ্রয় নেন স্থানীয় একটি শিশু আশ্রয়কেন্দ্রে। তাকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে সহযোগিতা করেন ওই এলাকার এক সমাজকর্মী।
কিন্তু এখানেও বাদ সাধেন ওই মা। মেয়েকে ফিরিয়ে নিতে ওই শিশু আশ্রয়কেন্দ্র ও ওই সমাজকর্মীর বিরুদ্ধে মেয়ে ‘অপহরণ’-এর অভিযোগ করেন।

ওই মায়ের অভিযোগের জেরে সমাজকর্মী ও ঝানকে গত সপ্তাগে স্থানীয় থানায় নিয়ে আসা হয়। সেখানে পুলিশের কাছে ঝান প্রমাণ করেন, তাকে কেউ অপহরণ করেনি। পাল্টা অভিযোগ করে গত মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) রাতে মায়ের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন ওই কিশোরী।

ঝান স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, তিনি আর তার মায়ের কাছে ফিরে যেতে চান না। ওই শিশু আশ্রয়কেন্দ্রেই থাকতে চান। সেখানেই একটি নতুন ও স্বাভাবিক জীবন শুরু করতে পারবেন বলে আশা করছেন তিনি।

এসএইচ-১১/২৩/২২ (অনলাইন ডেস্ক)

প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে গ্লোবাল আন্ডারগ্র্যাজুয়েট অ্যাওয়ার্ডস জিতলেন জারীন

মানুষ ও পরিবেশ নিয়ে কাজ করার ইচ্ছে ছোটবেলার। একাডেমিক থিসিসেও সেই ইচ্ছেরই প্রতিফলন। বর্জ্য পুনর্ব্যবহারযোগ্য করার প্রক্রিয়া তুলে ধরে বুয়েট শিক্ষার্থী জারীন তাসনিম পেয়েছেন জুনিয়র নোবেল প্রাইস খ্যাত গ্লোবাল আন্ডারগ্র্যাজুয়েট অ্যাওয়ার্ডস। প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে এই অর্জনে গর্বিত প্রতিষ্ঠানসহ পুরো বাংলাদেশ।

ঢাকার মাতুয়াইল ল্যান্ডফিলে তিন দশক ধরে বর্জ্য অপসারণ করা হলেও অব্যবস্থাপনার কারণে বাড়ছে দূষণ, ব্যাহত হচ্ছে জীবনধারণের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। বিষয়টির গুরুত্ব বুঝে স্নাতকের থিসিস তৈরি করেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জারীন তাসনীম। লক্ষ্য ছিল, বর্জ্যের প্রতি মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি বদলানো ও পুনর্ব্যবহারযোগ্য করে পরিবেশ রক্ষা।

গ্লোবাল আন্ডারগ্র্যাজুয়েট অ্যাওয়ার্ডস বিজয়ী জারীন তাসনীম শরীফ জানান, এটি অর্থনৈতিক কোনো প্রকল্প না হলেও এর বাস্তবায়নের মাধ্যমে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হওয়া সম্ভব। তিনি বলেন, ল্যান্ডফিল মাইনিং করে ল্যান্ডফিলের মধ্যকার বর্জ্য থেকে আমরা অর্থনৈতিক গুরুত্ব তুলে আনতে পারি। এছাড়া বর্জ্য অপসারণের স্বাস্থ্যগত ও বৈজ্ঞানিক দিক আছে, যার অনেক ক্ষেত্রেই মানা হয় না। তাই, ল্যান্ডফিল পরিবেশকে দূষিত করে।

এই থিসিসই জারীনকে এনে দেয় বিশ্বের মর্যাদাপূর্ণ একাডেমিক পুরস্কার গ্লোবাল আন্ডারগ্র্যাজুয়েট অ্যাওয়ার্ডস। ২৫টি ক্যাটাগরিতে ৭৩টি দেশের দুই হাজার ৮১২টি থিসিসের মধ্যে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে স্থাপত্যে এই অর্জন জারিনের। তিনি বলেন, যেহেতু এটা খুবই মর্যাদাপূর্ণ একটি প্ল্যাটফর্ম এবং বাংলাদেশের হয়ে গ্লোবাল উইনার হিসেবে প্রজেক্টটি সেখানে উপস্থাপন করতে পারবো, সে জন্য আমি সবচেয়ে বেশি আনন্দিত। মানুষ ও শহরের জন্য এই প্রজেক্টকে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছি। আর এ প্রসঙ্গে একটি আন্তর্জাতিক একটি প্ল্যাটফর্ম পাওয়া আমার কাছে বড় বিষয়।

এমন প্রাপ্তির উচ্ছ্বাস ছুঁয়েছে জারীনকে। তবে স্মরণ করতে ভোলেননি সারথী ও সতীর্থদেরও। যমুনা টেলিভিশনকে জানালেন, স্বপ্ন পূরণে চ্যালেঞ্জ ও অবিচল লক্ষ্যের কথাও। জারীন তাসনীম শরীফ বলেন, এই প্রজেক্টটি আমার একার নয়। আমার সুপারভাইজারদেরও প্রজেক্ট।

তাছাড়া বন্ধু ও সিনিয়রদের সাথেও আমি আলোচনা করেছি, সমস্যার কথা জানিয়েছি, তারা আমাকে সাজেশন দিয়েছে। এই প্রাপ্তি স্থাপত্য এবং পুরো বুয়েটের জন্য় একটি সম্মান। আমার বাবা-মার জন্যও এটি অত্যন্ত গৌরবের। আমি এমন একটা সিস্টেম গড়ে তুলতে চাই, যেখানে ল্যান্ডফিলের প্রয়োজনই হবে না।

আগামী ৬ থেকে ৯ নভেম্বর আয়ারল্যান্ডের ডাবলিনে স্বর্ণপদক গ্রহণ ও থিসিস উপস্থাপন করবেন লাল সবুজের এই প্রতিনিধি।

এসএইচ-১০/২৩/২২ (অনলাইন ডেস্ক)