রাত ৩:২৮
শনিবার
২৭ শে এপ্রিল ২০২৪ ইংরেজি
১৩ ই বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
১৮ ই শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী
spot_img

ইসরাইলের বিপক্ষে খেলছে না মেসির আর্জেন্টিনা!

কাতার বিশ্বকাপের আগে ইসরাইলের সঙ্গে একটি প্রীতি ম্যাচ খেলার কথাবার্তা চলছিল আর্জেন্টিনার। কিন্তু জুনে অনুষ্ঠেয় সেই ম্যাচটির সম্ভাব্যতা ভেস্তে গেছে বলে দাবি টিওয়াইসি স্পোর্টসের ক্রীড়া সংবাদিক গ্যাস্টন এদুলের।

নভেম্বরে মাঠে গড়াবে কাতার বিশ্বকাপ। তার আগে প্রত্যেকটি দলই চায় নিজেদের ঝালিয়ে নিতে। আর্জেন্টিনাও তার ব্যতিক্রম নয়। সে কারণেই বিশ্বকাপের আগে ইতালি ও ইসরাইলের বিপক্ষে বেশ কয়েকটি ম্যাচ খেলার কথা ছিল তাদের। তার মধ্যে ছিল ব্রাজিলের বিপক্ষে একটি ম্যাচও। সেই ম্যাচ ভেস্তে গেছে বেশ কয়েকদিন আগে।

ব্রাজিলের বিপক্ষে আর্জেন্টিনার ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল অস্ট্রেলিয়ার ঐতিহাসিক ক্রিকেট গ্রাউন্ড এমসিজিতে। গত ১১ মে সেটি বাতিল হয়ে গেছে বলে জানায় ব্রাজিল ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন। জুনের ১১ তারিখ মাঠে গড়ানোর কথা ছিল ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার ম্যাচটি। কিন্তু সমর্থকরা অদূর ভবিষ্যতে আর সেই ম্যাচটি দেখতে পারছেন না। কবে নাগাদ সেই ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে তারও নিশ্চয়তা দেয়নি ব্রাজিল।

১ জুন ইউরোজয়ী ইতালির বিপক্ষে খেলার কথা রয়েছে কোপা আমেরিকা জয়ী আর্জেন্টিনার। এ ম্যাচের জন্য এরইমধ্যে ২৯ সদস্যের চূড়ান্ত দলও ঘোষণা করেছে আর্জেন্টিনা। মূল স্কোয়াডে জায়গা ধরে রেখেছেন দেশটির সবচেয়ে বড় তারকা লিওনেল মেসি। আছেন পাওলো দিবালা, অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া ও লতারো মার্টিনেজরাও।

২৯ জনের আর্জেন্টিনা স্কোয়াড

এমিলিয়ানো মার্টিনেজ, হুয়ান মুসো, জেরোনিমো রুলি, ফ্রাঙ্কো আরমানি, গঞ্জালো মন্টিয়েল, নাহুয়েল মলিনা, হুয়ান ফয়েথ, ক্রিস্টিয়ান রোমেরো, মার্কোস সেনেসি, জার্মান পেজেল্লা, লিসান্দ্রো মার্টিনেজ, নিকোলাস ট্যাগলিয়াফিকো, নিকোলাস ওটামেন্ডি, নেহুয়েন পেরেজ, মার্কোস আকুনা, গুইদো রদ্রিগেজ, আলেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টার, রদ্রিগো ডি পল, এজিকুয়েল প্যালাসিওস, জিওভান্নি লো সেলসো, লিওনেল মেসি, আলেহান্দ্র পাপু গোমেজ, নিকোলাস গঞ্জালেজ, অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া, অ্যাঞ্জেল কোরেয়া, পাওলো দিবালা, হুয়াকিন কোরেয়া, জুলিয়ান আলভারেজ ও লতারো মার্টিনেজ।

এসএইচ-০৫/২১/২২ (স্পোর্টস ডেস্ক)

বেঙ্গালুরুতে গণধর্ষণ মামলায় ৯ বাংলাদেশির কারাদণ্ড

ভারতের বেঙ্গালুরুর এক বিশেষ আদালত গণধর্ষণ মামলায় ৯ বাংলাদেশিকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন এবং তাদের ৫ বছর থেকে যাবজ্জীবন পর্যন্ত কারাদণ্ড দিয়েছেন। খবর দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।

গণধর্ষণের ঘটনাটি গত বছরের মে মাসের। সে সময় এক বাংলাদেশি গণধর্ষণের শিকার হন। শুক্রবার বিশেষ আদালতের রায়ে ৯ বাংলাদেশিকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজাসহ যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

রায়ে বাংলাদেশের নাগরিক চাঁদ মিয়া, মোহাম্মদ রিফাকদুল ইসলাম, মোহাম্মদ আলামিন হোসেন, রকিবুল ইসলাম, মোহাম্মদ বাবু শেখ, মোহাম্মদ ডালিম ও আজিম হোসেনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন বিশেষ আদালত। এ কাজে সহযোগিতার অভিযোগে তানিয়া খানকে ২০ বছর এবং মোহাম্মদ জামালকে ৫ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

এ ছাড়া অপর ২ বাংলাদেশিকে ফরেনার্স অ্যাক্টের অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করে ৯ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। তবে এ মামলায় এক ভারতীয় নাগরিককে অভিযুক্ত করা হলেও তাকে অভিযোগ থেকে খালাস দিয়েছেন আদালত।

গণধর্ষণের মামলায় অভিযুক্ত ১২ জনের মধ্যে ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়েছে। অপরাধ সংঘটিতের ২৮ দিনের মধ্যে চাঞ্চল্যকর এ মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।

অভিযুক্তরা সবাই বাংলাদেশের নাগরিক, যারা ভারতে প্রবেশ করে বেঙ্গালুরুতে অবৈধভাবে বসবাস করে আসছিলেন।

বাংলাদেশে প্রথমে ধর্ষণের একটি ভিডিও ভাইরাল হলে ঘটনাটি জানাজানি হয় এবং পরে বেঙ্গালুরুতে এটি সংঘটিত হয়েছে বলে প্রমাণিত হয়।

এ ঘটনায় ভারতীয় দণ্ডবিধির (আইপিসি) বিভিন্ন ধারা এবং অনৈতিক পাচার (প্রতিরোধ) আইনের পাশাপাশি ফরেনার্স অ্যাক্টের অধীনে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছিল।

এসএইচ-০৪/২১/২২ (আন্তর্জাতিক ডেস্ক)

নতুন করে আলোচনায় ‘ধর্ম ব্যবসা

দেশে এখন নতুন করে আলোচনায় ‘ধর্ম ব্যবসা’৷ সম্প্রতি পরিচিত ধর্মীয় বক্তাদের একটি তালিকা দুর্নীতি দমন কমিশন দুদকে জমা দিয়েছে জাতীয় গণতদন্ত কমিশন৷ এরপরই এ বিষয়ে তুমুল আলোচনা শুরু হয়েছে অনলাইনে, অফলাইনে৷

রিপোর্টটি দুদকে যে কমিশন দিয়েছে, সেই গণতদন্ত কমিশনের সদস্য সচিব ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ বলেন, ঐ বক্তারা মানি লন্ডারিংয়ের মতো অপরাধ করে থাকলে, দুদক যাতে সেটি খতিয়ে দেখতে পারে, সেই জন্যই তারা দুদককে তালিকাটি দিয়েছেন৷

উচ্চ আদালতে দুদকের পক্ষে নিয়মিত আইনি লড়াই করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খুরশীদ আলম খান৷ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশনে নিয়মিত অনেক আবেদন আসে৷ কমিশন সেটাই নিতে পারবে, যেটা তার এখতিয়ারভুক্ত৷ যেমন, সরকারি সম্পত্তি আত্মসাৎ, ঘুস, মানিলন্ডারিং-এগুলো পারবে৷ তিনি বলেন, ‘‘যে অভিযোগগুলো আসে, সেগুলো কমিশন প্রথমে অত্যন্ত সূক্ষ্মভাবে খতিয়ে দেখে৷ খতিয়ে দেখার পর তার শিডিউলভুক্ত হলে প্রয়োজন মনে করলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়৷ নয়ত নথিভুক্ত করে রাখে৷”

এক প্রশ্নের জবাবে খুরশীদ আলম খান বলেন, মানি লন্ডারিং দেশের ভেতরেও হতে পারে, দেশের বাইরেও হতে পারে৷ ডেসটিনি মামলায় বিদেশে পাচার নেই, সব দেশের ভেতরেই ঘটেছে৷ ইউনিপে টু ইউ, বিসমিল্লাহ গ্রুপ, পদ্মা ব্যাংক-এগুলো সব দেশের ভেতরে কাজ করেছে৷ অর্থ আত্মসাৎ বা অর্থ আত্মসাতের চেষ্টা করলেও লন্ডারিং হবে৷

অন্য প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নামে টাকা তুলে কেউ সেটা অন্যত্র সরিয়ে নিলে সেটা লন্ডারিং হবে৷

খুরশীদ আলম খান বলেন, কর ফাঁকি দেয়ার বিষয়টি দেখে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড৷ তবে কর ফাঁকি দিতে গিয়ে কেউ মানি লন্ডারিং করলে তখন সেটা দুর্নীতি দমন কমিশন দেখতে পারে৷

এদিকে এক প্রশ্নের জবাবে তুরিন আফরোজ জানিয়েছেন, তাদের তালিকায় থাকা ধর্মীয় বক্তাদের কেউ কর ফাঁকি দিয়ে থাকলে যাতে ব্যবস্থা নেয়া যায়, সে কারণে শ্বেতপত্রটি তারা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডেও দেবেন৷

এনায়েতুল্লাহ আব্বাসী, মিজানুর রহমান আজহারী, মাহমুদুল হাসান গুনবী, জুনায়েদ আল হাবিব, কাজী ইব্রাহিম, গিয়াস উদ্দিন তাহেরী, হাসান জামিল, তারেক মনোয়ার, ইলিয়াসুর রহমান জিহাদী, সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করিম, আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ, মুহিব খানের মতো তুমুল জনপ্রিয় বক্তারা রয়েছেন এই তালিকায়৷

শ্বেতপত্রে ‘ওয়াজের মাধ্যমে সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদের বিস্তার এবং ৪০ জন বক্তার পরিচিতি’ শিরোনামে একটি অধ্যায় রয়েছে৷ সেখানে গিয়েই ৩৫ জনের বিবরণ পাওয়া গেছে৷

কেবল এদের বিরুদ্ধেই সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে বলে জানিয়েছেন তুরিন আফরোজ৷

তবে এই শ্বেতপত্রের শুরুর দিকে সারাংশ ও সুপারিশ নামে ‘ওয়াজের মাধ্যমে সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিস্তার’ নামে একটি অংশ রয়েছে৷ এতে বলা হয়, বর্তমান গণকমিশন ১১৬ জন উগ্রবাদী সাম্প্রদায়িক ইসলামি বক্তার তালিকা তৈরি করেছে৷ তারা ইউটিউবে ওয়াজের নামে সাম্প্রদায়িকতা, উগ্রবাদ ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াচ্ছেন৷ ‘‘ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে তাদের ভুল ব্যাখ্যায় বিভ্রান্ত হয়ে অনেকেই জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়ছে৷ সারা দেশে কওমিপন্থি প্রায় ১০০ জন, জামায়াতপন্থি ১০০ জন, মাজারপন্থি ৫০ জন, আলিয়াভিত্তিক ৫০জন এবং আহলে হাদিসের ৫০ জন বক্তা হিসাবে পরিচিত৷” প্রতিবেদনে এভাবে থাকলেও এখন ৩৫-৪০ জনের বিষয়টাকেই সামনে আনতে চাচ্ছে গণতদন্ত কমিশন৷

এক প্রশ্নের জবাবে তুরিন আফরোজ বলেন, ১১৬ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে, জনপ্রিয় বক্তা হিসাবে৷ সেখান থেকে যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া গেছে, তাদের বিবরণ দেয়া হয়েছে৷

বাংলাদেশে ব্যক্তিগত, সামাজিক, রাজনৈতিক নানা পরিসরে চলে ইসলামকেন্দ্রিক নানা কার্যক্রম৷ মুসলমানদের প্রাত্যহিক ধর্মীয় কাজের অন্যতম কেন্দ্র মসজিদ৷

২০০৮ সালে করা ইসলামি ফাউন্ডেশনের একটি জরিপকে উদ্বৃত করে কয়েক বছর আগে সংসদে জানানো হয়েছিল, ‘দেশে মসজিদের সংখ্যা ২ লাখ ৫৩ হাজার ১৭৬টি৷ এর মধ্যে শুধু ঢাকা শহরেই রয়েছে ২ হাজার ৭৭৭টি মসজিদ৷’

দেশে ইসলামকেন্দ্রিক কার্যক্রমের বড় আরেকটি অংশ পরিচালিত হয় মাদ্রাসাকে ঘিরে৷ বাংলাদেশে দুই ধরণের মাদ্রাসা রয়েছে৷ সরকারি সিলেবাসের মাদ্রাসা এবং কওমি মাদ্রাসা৷ ২০২০ সালে সংসদকে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি জানিয়েছিলেন, দেশে সেই সময়ে এমপিওভুক্ত মাদ্রাসার সংখ্যা ৭ হাজার ৬২৪টি এবং এমপিওবিহীন মাদ্রাসার সংখ্যা এক হাজার ৯১২টি৷ এর বাইরে জাতীয়করণকৃত কয়েকটি সরকারি মাদ্রাসাও রয়েছে৷ এ সব মাদ্রাসার শিক্ষকদের বেতনসহ নানা খরচের যোগান দেয় সরকার৷

চলতি বছর সংসদে উপস্থাপিত তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে কওমি মাদ্রাসার সংখ্যা ১৯ হাজার ১৯৯টি৷ এরা ভারতের দেওবন্দের সিলেবাসে পরিচালিত হয়৷ মানুষের দানের অর্থ এই প্রতিষ্ঠানগুলোর আয়ের উৎস৷

ইসলামি বিধিবিধানকে ঘিরে গড়ে উঠেছে বিভিন্ন ব্যাংক-বিমা আর্থিক প্রতিষ্ঠানসহ নানা রকমের প্রতিষ্ঠান৷ রয়েছে রাজনৈতিক-অরাজনৈতিক ধর্মীয় সংগঠন৷ দেশব্যাপী পীরদের আস্তানা এবং ওলি আউলিয়াদের কবর ও মাজারকে কেন্দ্র করে রয়েছে আরেকটি বিস্তৃত কার্যক্রম৷

নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত প্রায় ডজনখানেক রাজনৈতিক দল ইসলামকে কেন্দ্র করে কার্যক্রম চালায়৷ তবে এর বাইরে হেফাজতে ইসলামের মতো নিজেদেরকে অরাজনৈতিক দাবি করা এবং জামায়াত ইসলামের মত নিবন্ধন হারানো প্রভাবশালী রাজনৈতিক দলও রয়েছে বাংলাদেশে৷

ইসলামকে কেন্দ্র সরকারেরও রয়েছে নানা কার্যক্রম৷ সরকারের রয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়, জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম, ইসলামি ফাউন্ডেশন৷ শিক্ষাসহ নানা বিষয়ে ইসলামি ফাউন্ডেশনের দেশব্যাপী পরিচালিত নানা কার্যক্রম রয়েছে৷ সম্প্রতি সরকার বিভিন্ন উপজেলায় মডেল মসজিদ তৈরি করছে৷ হজ ব্যবস্থাপনা আরো বড় একটি ধর্মীয় কার্যক্রম৷

উপরের নানা প্রতিষ্ঠানকে কেন্দ্র করে প্রতিবছর চলে ওয়াজ মাহফিল৷ এর কোনো কোনোটিতে লাখ লাখ মানুষও জড়ো হয়৷ এ সব ওয়াজে ধর্মীয় বক্তব্য দিয়ে বক্তারা লাখ লাখ টাকাও নেন৷

গণতদন্ত কমিশনের প্রতিবেদনে এক হাজার কওমি মাদ্রাসার একটি তালিকাও দেয়া হয়েছে, যেগুলো হেফাজত নিয়ন্ত্রিত বলে দাবি করা হয় সেখানে৷

ধর্মীয় এ সব কাজের সাথে জড়িয়ে আছে বিপুল পরিমাণ অর্থনৈতিক কার্যক্রমও৷ অবশ্য এর পূর্ণ কোনো হিসাব খুঁজে পাওয়া যায়নি৷ ধর্মভিত্তিক প্রতিষ্ঠানের অর্থনীতি নিয়ে কাজ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক আবুল বারাকাত৷

২০১৫ সালে প্রকাশিত মৌলবাদের অর্থনীতি বিষয়ক তার একটি গবেষণায় বলা হয়, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, ঔষধ শিল্প, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, যোগাযোগ পরিবহন, রিয়েল এস্টেট, সংবাদ মাধ্যম, তথ্য প্রযুক্তি, বেসরকারি সংস্থা, ট্রাস্ট, ফাউন্ডেশন প্রভৃতি থেকে বছরে দুই হাজার ৪৬৪ কোটি টাকা নিট মুনাফা হয়৷

গণতদন্ত কমিশনের সদস্য সচিব তুরিন আফরোজ ‘ধর্ম ব্যবসা’ শব্দবদ্ধটিকে প্রাথমিকভাবে খারাপ হিসাবে দেখতে রাজি নন৷ তার মতে, আইনের জ্ঞানকে ব্যবহার করে উপার্জনের কারণে যেমনি তার পেশাকে আইন ব্যবসা বলা হয়৷ একইভাবে কেউ ধর্মপ্রচারকে জীবিকা হিসাবে নিলে সেটাকেও ব্যবসা বলা যাবে৷

এই আইনজীবী বলেন, ‘‘আমরা জানি লাখ লাখ টাকা এ সব ওয়াজের মাধ্যমে লেনদেন হয়ে থাকে৷ যদি এটা ট্রেডই হয়ে থাকে, তাহলে ট্রেডটিকে অর্থনৈতিক জবাবদিহিতার আওতায়তো আনতে হবে৷ আমি যদি ট্যাক্স দেই, ওনাদেরকেও দিতে হবে৷”

সাংবাদিক ও গবেষক আবুল কালাম আজাদ বলেন, ভিক্ষুক থেকে প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত সবাই ধর্মকে ব্যবহার করে৷ যখন নিজ স্বার্থ হাসিলের জন্য কেউ ধর্মকে ব্যক্তিগত, গোষ্ঠীগত কাজে ব্যবহার করে, তখনই ধর্মকে ব্যবসায়িক উপায় হিসাবে ব্যবহার করা হয়৷ তার মতে, ‘‘একজন ভিক্ষুক ধর্মের কথা বলে উপার্জন করছে৷ একটা দেশের প্রধানমন্ত্রীও কিন্তু ধর্মকে ব্যবহার করছে বা রাজনৈতিক দল অথবা তারা ধর্মকে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নভাবে আমরা ব্যবহার করতে দেখেছি৷ ডেফিনেটলি, দিস ইজ অলসো ওয়ান কাইন্ড অব বিজনেস৷”

আজাদ বলেন, সোভিয়েত আমলের আফগানিস্তান ফেরত যোদ্ধারা আরাকানে একটি যুদ্ধ পরিচালনা করতে চেয়েছিল৷ পাকিস্তান জামায়াত থেকে জামায়াতের বিবর্তনও আমরা জানি৷ তারাও ধর্মকে ব্যবহার করে৷ ‘‘আরো অনেকে ধর্মকে ব্যবহার করে, তাদের ব্যবহারের ধরন ভিন্ন৷ যেমন আমরা জানি, বাম সংগঠনগুলোর ধর্মীয় স্ট্যান্ডটা কেমন?” বলেন তিনি৷

রাশেদ খান মেনন এবং হাসানুল হক ইনুর হজ করার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে আজাদ বলেন, ‘‘তাদের কিন্তু হজ করার কথা না৷ তারা যখন বুঝতে পেরেছে, এখান থেকে তারা বেনিফিট পাবে৷ ধর্মের একটা লেবাস লাগালে বিভিন্ন রকমের সুবিধা হতে পারে৷ তখন সেটা তারা করেছে৷”

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘ধর্মের এই বাণিজ্যগুলো নিয়ে রাষ্ট্রের কোনো তদারকি নেই৷ ট্যাক্স-ভ্যাটের সিস্টেম এখানে নাই৷ আমরা জানি বাংলাদেশের ভেতর থেকে এবং দেশের বাইরে কয়েকটি রাষ্ট্র থেকে বিশেষ করে, ইংল্যান্ড এবং মধ্যপ্রাচ্যের কিছু দেশ থেকে প্রতি বছর হাজার হাজার না হলেও শত শত কোটি টাকা আসে, ইন দ্য নেম অব চ্যারিটি, পেশাবখানা, অজুখানা, মসজিদ, মাদ্রাসা এগুলো উপলক্ষ্যে৷”

সাংবাদিক ও গবেষক আজাদ বলেন, ‘‘এটা নিয়ে তদন্ত করতে গেলে থলের বিড়াল বেরিয়ে আসবে৷ সবাই ট্যাক্স-ভ্যাট দিলে তারা কেন দেবে না? তারা না দিলে কী হয়? এই টাকাগুলোর অনেক নয়-ছয় হয়৷ এই টাকাগুলো অনেক সময় আইন-শৃঙ্খলা বিরোধী কাজে ব্যবহৃত হয়৷”

তিনি বলেন, ‘‘আমরা জানি যে, বাইরে থেকে চ্যারিটির নামে যে ডোনেশন আসে, এর একটা অংশ জঙ্গি অর্থায়নে ব্যবহার হয়েছে৷ এখনো হয়৷”

ধর্মীয় স্পর্শকাতরতার কারণেই এদেরকে ধরা হচ্ছে না বলেও মন্তব্য করেন আজাদ৷

উপমহাদেশের ধর্মীয় রাজনীতি ও মাদ্রাসা শিক্ষা নিয়ে বিস্তৃত পরিসরে গবেষণা করেছেন বাংলাদেশি অ্যামেরিকান রাষ্ট্র বিজ্ঞানী অধ্যাপক আলী রীয়াজ৷

তিনি ধর্ম ব্যবসা এবং ধর্মীয় রাজনীতি বিষয়টাকে আলাদা হিসাবেই দেখতে চান৷

আলী রীয়াজ বলেন, যে-কোনো সমাজে ধর্মের উপস্থিতি থাকে৷ বাংলাদেশের সমাজেও দীর্ঘদিন ধরে ধর্ম নানাভাবে উপস্থিত থেকেছে৷ রাজনীতিতেও থেকেছে৷ ‘‘রাজনৈতিকভাবে ধর্মকে আদর্শ হিসাবে বিবেচনা করাটা নতুন নয়৷ কেবল ধর্মভিত্তিক দলগুলোই এটা করে এমন নয়৷ বরং যারা নিজেকের সেকুলার বলে দাবি করে, তাদের ক্ষেত্রেও আমরা এই প্রবণতা দেখতে পেয়েছি৷ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে, বিশেষ করে স্বল্প মেয়াদী রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে, ধর্মভিত্তিক নয়, এমন দলগুলোও ধর্মকে ব্যবহার করেছে৷ আমি অবশ্য এটাকে ব্যবহার বলি না৷ কার্যকর থাকা বলি,” বলেন তিনি৷

আলী রীয়াজ বলেন, ‘‘বাংলাদেশের সমাজে ধর্মের ভূমিকা কতটুকু? ব্যক্তি জীবনে কতটুকু? সমাজ জীবনে কতুটুক? ব্যক্তি জীবনেরটা আপনার পছন্দের বিষয়৷ কিন্তু সমাজ জীবন কিন্তু কেবল ব্যক্তির পছন্দের বিষয় নয়৷ সমাজে ধর্ম একটা প্রতিষ্ঠান হিসাবে, আদর্শ হিসাবে, এক ধরনের নীতি নৈতিকতার নির্দেশক হিসাবে আছে, থাকবে৷”

‘‘যারা ধর্ম ব্যবসার কথা বলে, সেটা ভিন্ন জিনিস৷ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ধর্মকে ব্যবহার আর ধর্মকে ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে ব্যবহার দুইটা ভিন্ন জিনিস৷”

তিনি বলেন, ‘‘আমি যদি অন্যায়ভাবে কোনো কিছু ব্যবসা হিসাবে ব্যবহার করি, সেটা ধর্মের কথা আপাতত বাদ দিন৷ তাহলে তার জন্য আইনতো আছে৷ সমাজে সেগুলোর অগ্রহণযোগ্যতাও আছে৷ সকলকে আমরা গ্রহণ করি না৷ রাজনীতিতে ধর্মের বিষয় এক, সমাজে ধর্মের বিষয় এক, রাষ্ট্রের সঙ্গে ধর্মের সম্পর্কের প্রশ্ন এক, আর কথিত ধর্ম ব্যবসা অন্য জিনিস৷”

আলী রীয়াজ বলেন, প্রশ্ন হচ্ছে, যারা ধর্মের প্রচার করছেন, তারা আর্থিকভাবে কোনো আইন ভাঙছেন কী না৷ সেটা দেখার জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আছে, দুদক আছে৷ তারা নিজস্ব উদ্যোগেই যে-কোনো ব্যক্তির ক্ষেত্রে উদ্যোগী হতে পারেন৷ প্রতিষ্ঠানগুলো গড়ে না তোলার কারণে, রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করার কারণে আজ এই প্রশ্ন উঠেছে৷

কয়েকজন ব্যক্তি হঠাৎ করে এ বিষয়ে উৎসাহী হয়ে উঠলেন কেন?

গণতদন্ত কমিশনের দিকে প্রশ্ন তোলার পাশাপাশি আলী রীয়াজ অভিযোগের আঙুল তুললেন ইসলামী বক্তাদের দিকেও৷

তিনি বলেন, ইসলাম প্রচারের নামে বিভিন্ন রকম বিভ্রান্তিকর বিষয় তারা প্রচার করছেন৷ ক্ষেত্রবিশেষে এগুলো ভুল ও মিথ্যা৷ তারা অপপ্রচারও করছেন৷ তাদের বিরুদ্ধে যদি আপনি ব্যবস্থা নিতে চান, তাহলে কোথায় ত্রুটি, তার বিরুদ্ধে কথা বলুন৷

‘‘দেশে সামগ্রিকভাবে কথা বলার দরজা বন্ধ রেখে কতিপয় ব্যক্তি একদিকে প্রচার করবেন তাদের ইচ্ছেমত৷ অন্যদিকে রাজনৈতিক স্পর্শকাতরতার নামে তাদেরকে কিছুই করা হবে না৷ আমি বলছি কথিত ইসলাম প্রচারকদের কথা৷”

‘‘অন্যদিকে কিছু ব্যক্তি চাইবেন, তাদেরকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করে আগামী নির্বাচনি বৈতরণী পার হওয়া যায়৷ এগুলো দেশের জন্য ভালো না৷ এগুলো সৎ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে আমি মনেই করি না৷”

প্রবাসী গবেষক মুবাশ্বার হাসান বলেন, ‘‘আমাদের প্রথমে এটা মেনে নিতে হবে, বাংলাদেশে ফেক নিউজ, হেট স্পিচ, কর ফাঁকি, বিভিন্নভাবে অর্থের যোগান আসা-এই সবকিছু বিভিন্ন সেক্টরে হচ্ছে৷ কেবল ধর্মীয় সেক্টরে না৷ এই সেক্টরটা সমাজের বাইরে না৷”

তিনি বলেন, ‘‘আপনি যদি হেট স্পিচের কথা দেখেন, সম্প্রতি ড. ইউনূসকে পানিতে ‍চুবানোর কথা বলা হলো, তারপর বলা হলো, খালেদা জিয়াকে ব্রিজ থেকে ফেলে দেয়া উচিত৷ এই ধরনের মন্তব্যগুলোর স্পিরিট হেট কি-না, এটা আপনি চিন্তা করবেন৷”

‘‘এই জিনিস কিন্তু সব জায়গায় আছে৷ যদি কারো সাথে মতের মিল না হয়, সে রাজাকার, সে এই, সে সেই-মানে ইনটলারেন্স ইজ এমবেডেড ইন আওয়ার সোসাইটি এন্ড পলিটিক্স৷ ফর দ্যাট রিজন, রিলিজিয়ন ইজ নট ডিটাচড ফ্রম সোসাইটি৷ একারণে এক ধরনের গ্রুপ আছে, যারা মাইনোরিটির বিরুদ্ধে…৷”

‘‘ফেক নিউজের ক্ষেত্রে আপনি দেখবেন, ফেসবুক অনেকগুলো গ্রুপ বন্ধ করে দিয়েছে, যেগুলো যে দলটা প্রাধান্য বিস্তার করে আছে, তার সাথে সম্পৃক্ত৷ সুতরাং এটাতো দুইপাশেই চলছে৷ এগুলো এক সাইডে থাকে না৷ ধর্মের ক্ষেত্রেতো কোনো রেগুলেশন নেই, যে যার ইচ্ছামতো কে ইসলামিক, কে নন ইসলামিক এগুলো বলতে পারে৷”

‘‘সমস্যা হচ্ছে যদি কেবল একটা সেক্টরকে আইডেন্টিফাই করেন, তাহলে পুরো সমাজের চিত্রটা উঠে আসে না৷”

‘‘কর ফাঁকির বিষয়টাও আমাদের সামাজের একটা এলিমেন্ট৷ যেহেতু আমরা ধর্মকে ভালোবাসি৷ তাই অনেকে আশা করে, তারা এই কাজটা করবেন না৷ কিন্তু তারাও এটা করে থাকেন৷”

‘‘ইন জেনারেল আমি যেটা মনে করি, যদি সমাজ রেসপেক্টফুল হয় টু পিপল, টু দ্য ইনস্টিটিউট অব দ্যা স্টেট, এন্ড রুল অব ল৷ তাহলে এরাও এই পথে আসবে৷ আদারওয়াইজ, এটা চলতেই থাকবে৷”

‘‘বাংলাদেশের বিভিন্ন সেক্টরে নানা রকম ইন্টারভেনশন হয়েছে, সেগুলো কিন্তু ওই সেক্টরের লোকজনকে নিয়ে করতে হয়েছে৷”

‘‘তাদেরকে আলাদা করে টার্গেট করলে জিনিসটা আসলে পাওয়া যাবে না৷ আমার ধারণা, রেজিস্টেন্স হবে৷ সো দে নিড টু বি মোটিভেটেড, দে নিড টু বি এনকারেজড টু কাম অন বোর্ড টু এড্রেস দিজ ইস্যু৷”

‘‘চেইঞ্জ মেকার তৈরি করতে হবে, তাদের মধ্য থেকে৷”

এসএইচ-০৩/২১/২২ (সুলাইমান নিলয়, ডয়চে ভেলে)

গ্রামের নারীরা দুর্যোগে অর্থনৈতিকভাবে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত

জলবায়ু পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রভাব মোকাবেলায় বাংলাদেশের গ্রামের নারীদের বেশি আর্থিক ক্ষতি হয়৷ সম্প্রতি প্রকাশিত এক গবেষণা বলছে, এসব প্রভাব মোকাবেলায় নারীদের সর্বোচ্চ ৩০ ভাগ বেশি খরচ করতে হয়৷

সম্প্রতি ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (আইআইইডি) করা এই গবেষণায় দেখা যায়, দুর্যোগ মোকাবেলায় বাংলাদেশের গ্রামীণ একটি পরিবারকে গড়ে মাসিক বাজেটের ১৫ শতাংশ খরচ করতে হয়৷ তবে নারী আয় করেন এমন বাড়িতে খরচের পরিমাণ প্রায় দ্বিগুণ৷ এর কারণ নারীরা পুরুষের চেয়ে কম আয় করেন৷

এছাড়া, বাংলাদেশের উত্তরপশ্চিমাঞ্চলের অনেক পুরুষই নারীকে বাড়ি সামলানোর দায়িত্বে রেখে প্রতি মৌসুমে অন্য শহরে চলে যান৷ তখন বাড়ির দায়িত্ব পালন করতে হয় এই নারীদের৷

১০ জেলার ৩,০৯৪টি গ্রামীণ ঘরের ওপর জরিপ করা হয়৷ ঝড়, বন্যা, খরা, লবণাক্ততা ও গরমের কারণে এসব পরিবারের খরচের ওপর কেমন প্রভাব পড়ে তা গবেষণায় দেখা হয়৷ এসব পরিবারের ৪৩ ভাগ পরিবার বন্যায় আক্রান্ত, ৪১ ভাগ ঝড় এবং ৮৩ ভাগ খরা বা লবণাক্ততার মতো দীর্ঘমেয়াদী দুর্যোগে আক্রান্ত৷

২০২১ সালে প্রতিটি পরিবারের দুর্যোগ মোকাবেলায় ব্যয় ছিল ৭,৫০০ টাকা৷ পুরো গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর প্রাক্কলন করা হলে তার পরিমাণ প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা৷

গবেষণায় দেখা যায়, বন্যাার কারণে নারীর আয়ে চলে এমন পরিবারগুলোতে খরচ পুরুষের আয়ে চলা পরিবারগুলোর চেয়ে দুই শতাংশ বেশি৷ আর প্রচণ্ড তাপপ্রবাহ থেকে বাঁচতে তাদের তিন শতাংশ বেশি খরচ করতে হয়৷ এছাড়া ঝড়ের কবল থেকে বাঁচতে নারীদের ৩০ শতাংশ বেশি খরচ করতে হয়৷ ঘূর্ণিঝড় আম্পানের সময় এমনটা দেখা গেছে৷

গবেষকরা বলছেন, এ কারণে বাংলাদেশ সরকার ও উন্নয়ন সহযোগী দেশগুলোকে তাদের তহবিল জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগপ্রবণ এলাকার এসব মানুষগুলোর জন্য বেশি খরচ করা উচিত৷

এসএইচ-০২/২১/২২ (অনলাইন ডেস্ক)

যুক্তরাষ্ট্র-কানাডায় পাচার অর্থ ফেরাতে সহায়তা করবে এফবিআই

যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় পাচার হওয়া অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনতে দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) সহায়তা করবে ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই)।

অর্থ পাচার মোকাবিলায় দুদক তদন্তকারীদের দক্ষতা বাড়াতে মার্কিন দূতাবাস আয়োজিত ‘প্রটেক্টিং পাবলিক ইনটেগরিটি: ইনভেস্টিগেটিং অ্যান্ড প্রসিকিউটিং কমপ্লেক্স করাপশন কেসেস’ শীর্ষক তিন দিনব্যাপী প্রশিক্ষণে এফবিআই কর্মকর্তারা এ কথা জানান।

প্রশিক্ষণে অংশ নেওয়া দুদকের এক কর্মকর্তা প্রশিক্ষকদের বরাত দিয়ে বলেন, ‘তারা আমাদের বলেছেন, জটিল দুর্নীতির মামলার ক্ষেত্রে এফবিআইয়ের সঙ্গে যৌথ তদন্ত দল গঠন করতে পারে দুদক।’

তিনি আরও বলেন, ‘এ ধরনের ক্ষেত্রে এফবিআই যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় অবৈধভাবে বা হুন্ডিতে পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধার ও ফ্রিজ করতে সহায়তা করবে এবং সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র দুদকে পাঠাবে। পারস্পরিক আইনি সহায়তার অনুরোধে তারা সেখান থেকে দুদককে সহায়তা করবে এবং দ্রুতই সেসব তথ্য পাঠাবে।’

গত ১৯ মে থেকে শুরু হওয়া তিন দিনব্যাপী এ প্রশিক্ষণে দুদকের মোট ২০ জন তদন্তকারী কর্মকর্তা অংশ নেন।

এসএইচ-০১/২১/২২ (ন্যাশনাল ডেস্ক)

বিশ্বসেরা সেলিব্রেটিরা রাজশাহীতে

রাজশাহী নগরীর উপশহর এলাকার ৩ নম্বর সেক্টরের একটি দ্বিতল ভবনে ‘সেলিব্রেটি গ্যালারি’ এখন উদ্বোধনের অপেক্ষায়। তবে উদ্বোধনের আগেই নগরবাসীর মধ্যে বেশ সাড়া ফেলেছে সেলিব্রেটি গ্যালারি। গত ৬ মে থেকে দর্শনার্থীরা দেখতে আসছে এসব ভাস্কর্য। দিন দিন উপস্থিতিও বাড়ছে দর্শনার্থীদের।

সফল রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, বিশ্ববিখ্যাত কবি, সাহিত্যিক, রাষ্ট্রনায়ক থেকে নায়ক-নায়িকা, গায়ক-গায়িকা ও ফুটবলার এখন রাজশাহীতে এক ছাদের নিচে।

অবয়বগুলো নিছকই ফাইবার প্লাসে তৈরি। তবু রক্তে-মাংসের গড়া মানুষ ভেবে ভুল হবে যে কারোরই। রাজশাহীর কৃতী সন্তান খ্যাতিমান ভাস্কর মৃণাল হকের এসব শিল্পকর্মে যেন রাজশাহীতে বসেছে সেলিব্রেটিদের হাট।

ভবনের সিঁড়ি বেয়ে ওপরে উঠতেই চোখে আটকে গেল স্পাইডার ম্যানে। যেন সিঁড়ির ওপরেই ঝুলে রয়েছে শিশুদের প্রিয় এই মারভেল সিরিজের চরিত্রটি। দোতলার প্রথম কক্ষটিতে সাজানো এক সারি আবক্ষ মূর্তি।

এখানে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, জাতীয় চার নেতা এএইচএম কামারুজ্জামান, তাজউদ্দীন আহমদ, ক্যাপ্টেন মনসুর আলী, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, মীর মশাররফ হোসেন, আব্দুল গাফ্ফার চৌধুরী প্রমুখ।

সামনে এগোতেই আরেক কামরা। যেখানে চলছে আলো-আঁধারির খেলা। সবার মনে আছে কি বলিউডের ‘কই মিল গ্যায়া’ সিনেমার সেই জাদুর কথা? এখানে দেখা হয়ে যাবে ভিন গ্রহের এই বাসিন্দার সঙ্গে। প্রখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক জেমস ক্যামেরনের অনবদ্য সৃষ্টি ‘অ্যাভাটার’ সিনেমার নাবি সম্প্রদায়ের জ্যাক ও নিতিরি চরিত্রের দেখাও মিলবে এই কামরায়। এখানে রয়েছে জীবন্ত ‘লর্ড অব দ্য রিং’-এর গুল্লাম।

বাঁ পাশের দরজা পেরোতেই পড়বে সুবিশাল কক্ষ। ঢুকতেই ডান হাতে বিখ্যাত কমেডি সিরিজ ‘থ্রি স্টুজেস’-এর তিন মূল চরিত্র। এছাড়া ফুটবলের জীবন্ত কিংবদন্তি লিওনেল মেসি, যার পায়ের জাদুতে আটকে রয়েছে ফুটবল।

কক্ষজুড়ে নানা ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে বলিউড তারকা শাহরুখ খান, মি. বিন খ্যাত রোয়ান অ্যাটকিনসন, খ্যাতিমান অভিনেতা চার্লি চ্যাপলিন, পাইরেটস অব দ্য ক্যারিবিয়ানের ক্যাপ্টেন জ্যাক স্প্যারো, ভুবন কাঁপানো কণ্ঠস্বর বব মার্লে, পপ গানের রাজা মাইকেল জ্যাকসন, গায়িকা শাকিরা।

পরের কামরাটি আলো-ঝলমলে। ঢুকতেই রাইফেল কাঁধে দাঁড়ানো বিপ্লবের বিশ্বপ্রতীক চে গুয়েভারা। এই কক্ষের এক কোণে বসে কাব্যচর্চায় মগ্ন কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। পাশে দাঁড়িয়ে বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম ও ভারতীয়-বাঙালি বিপ্লবী ক্ষুদিরাম বসু।

মহাত্মা গান্ধীর পাশে সাদা শাড়িতে মানবতার দূত মাদার তেরেসাও আছেন এই কামরায়। আরও আছেন বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, প্রিন্সেস ডায়ানাসহ অনেক খ্যাতিমান ব্যক্তিরা।

শেষের কামরাটি বাচ্চাদের খেলাধুলার জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। বেরিয়ে যাওয়ার পথে দেখা হয়ে যাবে রাগ সংগীতের গুরু উস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর সঙ্গে। যেন প্রিয় সেতার হাতে সুরের মূর্ছনা ছড়িয়ে যাচ্ছেন তিনি। এসব ঘুরে ঘুরে দেখতে দর্শনার্থীদের কাছে মনে হবে যেন বাস্তবের অনেক মহীয়সী ও মহীয়ান মানব সামনে দাঁড়িয়ে আছেন, কথা বলছেন, শুভেচ্ছা বিনিময় করছেন।

পছন্দের চরিত্রগুলোকে চোখের সামনে পেয়ে বেশ উচ্ছ্বসিত তিনি। তিনি জানান, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেখে তিনি এখানে ঘুরতে এসেছেন। দেখে খুব ভালো অনুভব করছেন তিনি। এখানকার ভাস্কর্যগুলো তার কাছে একেবারেই জীবন্ত মনে হয়েছে। রাজশাহীর মতো একটি জায়গায় এমন একটি আয়োজন সত্যিই তার ভালো লেগেছে।

সেলিব্রেটি গ্যালারির অফিস ইনচার্জ কামরুল হাসান মিলন বলেন, সব প্রস্তুতি মোটামুটি শেষ। এখন উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে এ গ্যালারী।

কামরুল হাসান মিলন আরও বলেন, তারা ভবনের নিচ তলায় সুবিশাল লাইব্রেরি গড়ে তুলেছেন। সেলিব্রেটি গ্যালারিতে প্রবেশে দর্শনীয় লাগলেও লাইব্রেরি রাখা হয়েছে একেবারেই উন্মুক্ত।

এসএইচ-২৬/২০/২২ (নিজস্ব প্রতিবেদক)

রিয়াল-পিএসজি দুদলের সঙ্গেই চুক্তি আছে

বেশ কয়েক বছর ধরেই রিয়াল মাদ্রিদে যাবেন যাবেন বলে গুঞ্জন পিএসজির ফরাসি তারকা কিলিয়ান এমবাপ্পের। এমবাপ্পে নিজেও স্প্যানিশ ক্লাবটিতে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। তবে যাওয়াটা আর হচ্ছে না। আদতে কি তিনি রিয়াল মাদ্রিদে যাবেন? নাকি থেকে যাবেন দেশের ক্লাবেই? এ বিষয়ে এমবাপ্পের মা ফায়জা লেমারি বলছেন, তাদের দুই ক্লাবের সঙ্গেই চুক্তি আছে।

কোরা প্লাসকে ফায়জা লেমারি বলেন, রিয়াল মাদ্রিদ ও পিএসজি, দুদলের সঙ্গেই আমাদের চুক্তি আছে। এখন বাকি সিদ্ধান্ত এমবাপ্পে নেবে। দুই ক্লাবের ব্যাপারটিই আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

এমবাপ্পের বর্তমান বাজারমূল্য প্রায় ১৬০ মিলিয়ন ইউরো। গত বছর তাকে কেনার জন্য নাকি প্রায় ২০০ মিলিয়ন ইউরোই অফার করেছিল রিয়াল মাদ্রিদ। এমবাপ্পেকে ধরে রাখার ব্যাপারে নাছড়বান্দা ছিলেন পিএসজির সভাপতি নাসের আল খেলাইফি। যে কারণে তুমুল আলোচনা হলেও শেষ পর্যন্ত আর দলবদল ঘটেনি।

গত কয়েক বছর ধরে কিলিয়ান এমবাপ্পে ও রিয়াল মাদ্রিদকে নিয়ে গুঞ্জন বেশ ডালপালা মেলেছে। যদিও পরে ভিন্ন সুরও দেখে ফুটবল বিশ্ব। তবে রিয়ালে তার আসতে চাওয়ারও কারণ দেখছেন ফুটবলবোদ্ধারা।

এদিকে এমবাপ্পেকে ধরে রাখতে নাকি সব রকম চেষ্টা করছে পিএসজি। সবশেষ তার জন্য বড়সড়ো প্রস্তাব জানিয়েছে ফরাসি ক্লাবটি। নতুন চুক্তিতে রাজি করাতে তাকে ১০০ মিলিয়ন পাউন্ড বোনাস দিতে রাজি পিএসজি।

২০১৭ সালে ধারে পিএসজিতে এসেছিলেন এমবাপ্পে। সেই থেকে এই গোলমেশিনকে থামাতে পারেনি কেউ। চলতি মৌসুমে সব মিলিয়ে ক্লাবের হয়ে গোল করেছেন ৩৬টি, অ্যাসিস্ট ২৬টি।

এসএইচ-২৫/২০/২২ (স্পোর্টস ডেস্ক)

বিসিএসে উত্তীর্ণ হয়েই স্ত্রীকে তালাকের চেষ্টা

যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে মারধরের অভিযোগে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের মামলায় লিখন সাকসেনা নামে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) দর্শন বিভাগের এক শিক্ষার্থীকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। অভিযুক্ত লিখন সাকসেনা ৪০তম বিসিএসে শিক্ষা ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছিলেন।

বৃহস্পতিবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মামুনুর রশিদের আদালত শুনানি শেষে লিখন সাকসেনাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

ভুক্তভোগী স্ত্রীর অভিযোগ, শুরুতে যৌতুকের দাবিতে মারধর করা হলেও বিসিএসে উত্তীর্ণ হয়ে লিখন সাকসেনা তাকে তালাক দেওয়ার চেষ্টা করেন। পরে বাধ্য হয়ে স্ত্রী গত ১৪ মে ঢাকার লালবাগ থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন।

লিখন সাকসেনাসহ এ মামলায় আসামি চারজন। বাকি তিনজন হলেন- সাকসেনার বাবা ভৈরব উপজেলার আগানগর ইউপি চেয়ারম্যান হুমায়ূন কবীর, মা শিউলী শ্রাবণী ও ভাই হৃদয় সাকসেনা।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, মামলার বাদী জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে ২০২১ সালের ৪ জুন একই বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী লিখন সাকসেনার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে বিভিন্ন সময়ে স্ত্রীর পরিবারের কাছে ১০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন।

স্বামীর অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে বাবার বাড়ি থেকে দাবি করা যৌতুকের ১০ লাখ টাকার মধ্যে দুই লাখ টাকা তার স্বামীকে এনে দেন। পরবর্তীতে স্বামী লিখন সাকসেনা ৪০তম বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হলে তার স্ত্রীকে তালাক দিয়ে অন্যত্র বিয়ে করতে প্রাণপণ চেষ্টা করেন। চলতি বছরের ২৯ এপ্রিল দুপুরে যৌতুকের টাকার জন্য অভিযুক্তরা বাদী ভুক্তভোগী নববধূ স্ত্রীকে মারধর করে আহত করেন বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়।

এ বিষয়ে মামলার বাদী ও সাকসেনার স্ত্রী বলেন, যৌতুকের টাকার জন্য লিখন বিভিন্ন সময়ে আমাকে চড়-থাপ্পড়সহ নানাভাবে মারধর করে আসছিল। আমাকে রেখে অন্য মেয়ে নিয়ে ঘুরে বেড়ায়। কিন্তু সংসার টিকিয়ে রাখার স্বার্থে আমি সবকিছু সহ্য করে দুই লাখ টাকা দিই। তবে এখন সে বিসিএস ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হওয়ার পর আমাকে আর চায় না। সে আমাকে তালাক দিয়ে অন্য কোনো বড়লোক মেয়েকে বিয়ে করতে চায়। আমি মীমাংসাতে গিয়েও পারিনি। তাই বাধ্য হয়ে মামলা করেছি। আমি এর বিচার চাই।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আগানগন ইউপি চেয়ারম্যান মো. হুমায়ুন কবীরের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, কিছুই তার জানা নেই। এরপর কল কেটে দেন।

লালবাগ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এম এ মোর্শেদ মুঠোফোনে সময় সংবাদকে বলেন, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের মামলার আসামি লিখন সাকসেনাকে ভৈরবের ছাগাইয়া গ্রাম থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ছাড়াও তার দুই ভাইকে আটক করি। তারমধ্যে হৃদয় সাকসেনা মামলার ৪ নম্বর আসামি। এবং তার ছোটভাই অনন্তকে বাদীর বাসার দরজা ভাঙচুরের অভিযোগ পেয়ে আটক করি।

তিনি বলেন, লিখনকে বৃহস্পতিবার আদালতে হাজির করা হলে আসামিদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত। শুক্রবার মামলার অপর আসামি হৃদয়কে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।

এসএইচ-২৪/২০/২২ (ন্যাশনাল ডেস্ক)

পুরুষ সেজে প্রতারণা, তরুণী আটক

যশোরে পুরুষ সেজে প্রতারণার অভিযোগে ফারহানা আক্তার স্নেহা (২৫) নামের এক তরুণীকে আটক করেছে পুলিশ।

শুক্রবার  শহরের দড়াটানা এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়। স্নেহা যশোর শহরের লোন অফিস পাড়ার শাহজাহান আলীর মেয়ে।

যশোর কোতোয়ালী থানার ওসি (তদন্ত) শেখ মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বলেন, আটক স্নেহা যশোরসহ বিভিন্ন স্থানে দীর্ঘদিন ধরে পুরুষ সেজে প্রতারণা করে আসছিল।

সম্প্রতি চৌগাছা উপজেলার বেড় গোবিন্দপুর গ্রামের হাবিবুর রহমানের মেয়ের সাথে স্নেহা প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। এরপর সুযোগ বুঝে ওই মেয়ের কাছ থেকে মোবাইলফোন ও বিকাশের মাধ্যমে নগদ টাকা আত্মসাত করে।

এ ব্যাপারে হবিবুর রহমান বাদী হয়ে থানায় অভিযোগ দিলে পুলিশ স্নেহাকে আটক করে। ওসি মনিরুজ্জামান আরও জানান, স্নেহার নামে দেশের বিভিন্ন থানায় মাদক ও প্রতারণার বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে।

এসএইচ-২৩/২০/২২ (আঞ্চলিক ডেস্ক)

বাংলাদেশে হতে পারে এশিয়া কাপ

কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে শ্রীলঙ্কা, ভেঙে পড়েছে দেশটির অর্থনৈতিক অবকাঠামো। জ্বালানির অভাবে জ্বলছে না শহরগুলোর আলো। চতুর্মুখী সংকটে দেশটির সাধারণ মানুষও ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছেন। এমন পরিস্থিতিতে দেশটিতে এশিয়া কাপ ক্রিকেট টুর্নামেন্ট আয়োজন নিয়ে দেখা দিয়েছে শঙ্কা।

এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল (এসিসি) সূত্রের বরাত দিয়ে ক্রিকেট ডটকম জানিয়েছে, অস্থিরতার কারণে এশিয়া কাপ ক্রিকেট আয়োজনের স্বত্ত্ব হারাতে পারে শ্রীলঙ্কা। আর বিকল্প আয়োজক দেশ হিসেবে অনুষ্ঠিত হতে পারে বাংলাদেশে।

যদিও বিকল্প ভেন্যু হিসেবে সংযুক্ত আরব আমিরাতকে নিয়েও গুঞ্জন ছিল। তবে আগস্ট-সেপ্টেম্বরের যে সময়টাতে এশিয়া কাপ হওয়ার কথা, সে সময়ে গরমের কারণে দেশটিতে আয়োজন সম্ভব নাও হতে পারে। আর তাই সম্ভাবনা বেশি বাংলাদেশের।

ক্রিকেট ডটকম জানিয়েছে, শ্রীলঙ্কার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এসিসি। শ্রীলঙ্কা আসর আয়োজন সম্ভব না হলে বাংলাদেশ হতে পারে বিকল্প।

কদিন আগে যদিও বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরী এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘এটার স্বত্ব শ্রীলঙ্কান বোর্ডের। লঙ্কান বোর্ড মনে করছে তারা আয়োজন করতে পারবে। যদি কখনো এ বিষয়ে কোনো আলোচনা হয় তা একটা প্রক্রিয়া মেনেই হবে। এ বিষয়গুলো এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল এসিসির ফোরামে আলোচনা করা হয়। সে ধরনের আলোচনা এখন পর্যন্ত হয়নি বা আমরা এমন কোনো বিষয়ে অবগত নই।’

তিনি আরও যোগ করেন, ‘আগে শ্রীলঙ্কা না করুক, তারপর আমরা বলব। এখনই মন্তব্য করা ঠিক হবে না। যেহেতু এশিয়া কাপের আরও সময় আছে। শ্রীলঙ্কা যেহেতু আয়োজক, শ্রীলঙ্কার বোর্ডই এ বিষয়টা ভালো বলতে পারবে এবং সিদ্ধান্ত দিতে পারবে।’

সবশেষ ২০১৮ সালে এশিয়া কাপ আয়োজন করা হয়েছিল, যা ওয়ানডে ফরম্যাটে হয়েছিল। তবে সামনে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ থাকায় এবারের এশিয়া কাপ টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে হবে বলে জানা গেছে।

২০১৮ সালের পর ২০২০-এ পাকিস্তানে এশিয়া কাপ হওয়ার কথা থাকলেও করোনার কারণে তা ভেস্তে যায়। ক্ষতি সাধিত হয় ক্রীড়াঙ্গনের প্রায় সব পর্যায়ে। পরিবর্তিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী যা আয়োজন করার জন্য ২০২২ সালকে নির্বাচন করা হয়। কিন্তু তা-ও পিছিয়ে গেল আরেক দফায়। কারণ, ভারতের টেস্ট চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনাল থাকায় আসরটি পিছিয়ে যায়। শেষমেশ স্থগিত হওয়া আসরটি আগামী বছর তথা ২০২৩ সালে আয়োজন করা হবে বলে জানা গেছে।

এশিয়া কাপে পাঁচ টেস্ট খেলুড়ে দল ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান ছাড়াও বাছাই পর্ব পেরিয়ে আসা একটি সহযোগী সদস্য দল অংশ নেবে।

এশিয়া কাপের সবশেষ চার আসরের তিনটিতেই স্বাগতিক ছিল বাংলাদেশ। ২০১২ সালে লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের দেশে বাংলাদেশকে ২ রানে হারিয়ে শিরোপার স্বাদ নেয় পাকিস্তান। ২০১৪ সালে পরের আসরে ফাইনালে খেলে শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তান। এবার চ্যাম্পিয়ন হয় লঙ্কানরা। ফাইনালে তারা জয় পায় ৫ উইকেটে। ২০১৬ সালের শিয়া কাপেও বাংলাদেশ ফাইনালে উঠেছিল, দুর্ভাগ্য যে ভারতের বিপক্ষে ৮ উইকেটে হারতে হয় লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের।

এসএইচ-২২/২০/২২ (স্পোর্টস ডেস্ক)