সকাল ৮:৫৭
বুধবার
৮ ই মে ২০২৪ ইংরেজি
২৫ শে বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
২৯ শে শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী
spot_img

বিশ্ববিদ্যালয়ে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা এগিয়েছে

দেশের ২০টি সাধারণ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষে গুচ্ছভিত্তিতে ভর্তি পরীক্ষা এগিয়ে আগাস্টে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। আগামী ৩ সেপ্টেম্বর থেকে এ পরীক্ষা শুরুর কথা ছিল।

শুক্রবার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা বিষয়ক কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে সুনির্দিষ্ট দিনক্ষণ ঠিক করা হয়নি।

সভায় অংশ নেওয়া জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সৌমিত্র শেখর সংবাদ মাধ্যমকে জানান, সেশনজট ‘শূন্যের কোঠায়’ নামিয়ে আনতে পরীক্ষা এগিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আগামী ১ জানুয়ারি থেকে সেশন শুরু করাই আমাদের মুখ্য উদ্দেশ্য। সেজন্যই সময় এগিয়ে নেয়া হয়েছে।

ভর্তি পরীক্ষার আবেদন ফি বাড়ানোর বিষয়ে সৌমিত্র শেখর বলেন, সবকিছুরই দাম বেড়েছে। একইসঙ্গে কাগজেরও দাম বেড়েছে। পরীক্ষার ফি বাড়ানো নয়, এটা যুগোপযোগী করা হবে। এটা সহনীয় মাত্রায় থাকবে।

পরীক্ষার সুনির্দিষ্ট তারিখ ও ফি আগামী সোমবারের সভায় চূড়ান্ত হবে। গতবছর সাধারণ গুচ্ছের পরীক্ষার ফি ছিল ১ হাজার ২০০ টাকা।

এদিকে, এবার সাধারণ গুচ্ছভুক্ত ২২টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ২০টি গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি প্রক্রিয়ায় অংশ নেবে। এপ্রিলে কিশোরগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয় ও চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছ ভর্তির প্রক্রিয়ায় যুক্ত হলেও বিশ্ববিদ্যালয় দুটি এবারে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে না।

ফলে এবার ২০টি সাধারণ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ১টি গুচ্ছে, ৩টি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আরেকটি গুচ্ছে এবং কৃষি ও কৃষিশিক্ষা প্রধান বাকি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আরেকটি গুচ্ছে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হবে। ঢাকা, জাহাঙ্গীরনগর, রাজশাহী ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়সহ আটটি বিশ্ববিদ্যালয় নিজেদের মতো করেই আলাদাভাবে ভর্তি পরীক্ষা নিচ্ছে।

এসএইচ-২৪/২৭/২২ (শিক্ষা ডেস্ক)

ভারতে কি মাঙ্কিপক্স ছড়িয়েছে?

করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যেই দেশে দেশে ছড়িয়ে পড়ছে নতুন ভাইরাস মাঙ্কিপক্সের সংক্রমণ। এখন পর্যন্ত বিশ্বের ২০টির বেশি দেশে বিরল এই রোগ শনাক্ত হয়েছে। সবশেষ বৃহস্পতিবার মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতে মাঙ্কিপক্সের রোগী পাওয়া গেছে। তবে এখন পর্যন্ত ভারতে এমন কোনো কেস পাওয়া যায়নি।

ইউরোপ ও আমেরিকার দেশে দেশে মাঙ্কিপক্স সংক্রমণের ঘটনা দেখা দেওয়ায় অগ্রিম সতর্কতা অবলম্বন করছে ভারত। গত সপ্তাহেই ভারতে আগত বিদেশি যাত্রীদের পরীক্ষা করার জন্য দেশের সব বিমানবন্দরে নির্দেশনা জারি করেছে দেশটির সরকার।

এদিকে মাঙ্কিপক্সের সংক্রমণ রোধ করতে পুরোদমে প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেছে তামিলনাড়ু, রাজস্থান ও মহারাষ্ট্র। তামিলনাড়ুতে মাঙ্কিপক্সের বিষয়ে নজরদারি বাড়াতে জেলা কালেক্টরদের চিঠি দিয়েছেন রাজ্য স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা।

যাদের দেহে ফুঁসকুড়ি বা গুটিবসন্ত জাতীয় ফোঁড়া দেখা গেছে বা যারা গত ২১ দিনে মাঙ্কিপক্স সংক্রমণযুক্ত দেশ ভ্রমণ করেছে বা যারা মাঙ্কিপক্স রোগীদের সংস্পর্শে এসেছে তাদের নজরদারির মধ্যে রাখার কথা বলা হয়েছে চিঠিতে।

এদিকে ভারতের বাণিজ্যিক রাজধানী খ্যাত মুম্বাইয়ের চিঞ্চপোকলিতে কস্তুরবা হাসপাতালে সংক্রামক রোগের জন্য ২৮ শয্যার ওয়ার্ড প্রস্তুত করা হয়েছে, যাতে মাঙ্কিপক্সের সংক্রমণের রোগীদের আলাদা করা যায়। মুম্বাই জনস্বাস্থ্য বিভাগ সোমবার একটি বিবৃতিতে জানায়, শহরে এখনও মাঙ্কিপক্সের সংক্রমণের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। তবে হাসপাতালগুলোকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।

রাজস্থান সরকারের পক্ষ থেকে নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ইউরোপ, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা থেকে রাজস্থানে আসা যাত্রীদের একটি ‘স্ক্রিনিং’ প্রক্রিয়ার মধ্যদিয়ে যেতে হবে। যদি সংক্রমণের সন্দেহ হয় বা রিপোর্ট ‘পজিটিভ’ আসে, তাহলে কন্টাক্ট ট্রেসিং করা হবে।

একই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে পশ্চিমবঙ্গেও। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে এক নির্দেশনায় বলা হয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তি সংক্রমিত দেশ অর্থাৎ ইউরোপ বা উত্তর আমেরিকা থেকে দেশে ফেরেন এবং তার মধ্যে মাঙ্কিপক্সের কোনো লক্ষণ থাকে তাহলে অবিলম্বে সেই ব্যক্তিকে আইসোলেশনে রাখতে হবে।

মাঙ্কিপক্স নতুন কোনো রোগ নয়। তারপরও মানুষের এ সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা নেই বললেই চলে। জানা গেছে, এ রোগ নিয়ে যুক্তরাজ্যে ২০১৮ সাল থেকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। এ পরীক্ষা-নিরীক্ষায় ২০২১ সাল পর্যন্ত মোট ৭ জনের মাঙ্কিপক্স শনাক্ত হয়।

এসব পরীক্ষা-নিরীক্ষার ফল সম্প্রতি ল্যানসেটে প্রকাশিত হয়েছে। তাতে মাঙ্কিপক্স চিকিৎসার কিছু পরামর্শও দেওয়া হয়েছে। একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, কিছু ‘অ্যান্টি-ভাইরাল ড্রাগ’ বা ভাইরাসপ্রতিরোধী ওষুধ রয়েছে যা মাঙ্কিপক্সের লক্ষণগুলো দূর করতে ব্যবহার করা যায়।

ওই গবেষণায় এও দাবি করা হয়েছে, ভাইরাস প্রতিরোধী এসব ওষুধ প্রয়োগও করা হয়েছে। তাতে মাঙ্কিপক্সের রোগীরা দ্রুত সুস্থ হয়েছে উঠেছে। এক্ষেত্রে রোগীকে টেকোভাইরিম্যাট বা ব্রিনসিডোফোভিরের মতো ভাইরাসে প্রতিরোধী ওষুধ প্রয়োগ করে কাঙিক্ষত ফল পাওয়া গেছে বলেও গবেষণায় বলা হয়েছে।

গবেষকদের মতে, মাঙ্কিপক্স সংক্রমণ নির্ণয় করা কঠিন কিছু নয়। শুধুমাত্র রক্ত ও লালা বা থুথু পরীক্ষা করেই শরীরে ভাইরাসের উপস্থিতি আছে কি নেই তা নিশ্চিত হওয়া সম্ভব।

এদিকে মন্ট্রিলের স্থানীয় একটি সোওনা বাথ থেকে কানাডাজুড়ে মাঙ্কিপক্স ছড়িয়ে পড়েছে বলে ধারণা করছেন চিকিৎসকরা। সোওনা বাথ এক ধরনের গোসলখানা যেখানে একসঙ্গে অনেকেই গোসল করে। ইউরোপ ও আমেরিকায় এ সোওনা বাথের ব্যবহার দেখা যায়। কানাডায় মাঙ্কিপক্স রোগীর চিকিৎসার সঙ্গে জড়িত একাধিক চিকিৎসক বলছেন, মন্ট্রিলের একটি সোওনা বাথ থেকে মাঙ্কিপক্স ছড়িয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

গত সপ্তাহে কানাডায় মাঙ্কিপক্স প্রথম দুইজনের শরীরে শনাক্ত করেন কুইবেক প্রদেশের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা। এরপর থেকে সংক্রমিত লোকের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। দেশটির পাবলিক হেলথ এজেন্সি (পিএইচএসি) জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ১৬ জন শনাক্ত হয়েছে। এদের সবাই কুইবেক প্রদেশের বাসিন্দা।

পিএইচএসি এক বিবৃতিতে বলেছে, একাধিক জায়গা থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে টেস্ট করার জন্য। মন্ট্রিলের একজন সরকারি চিকিৎসক রবার্ট পিলারস্কি। গত সপ্তাহে মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত এক রোগীকে চিকিৎসা করেন তিনি। বৃহস্পতিবার গ্লোবাল নিউজকে এক সাক্ষাৎকারে এ চিকিৎসক বলেন, তার ওই রোগী সম্প্রতি জি আই জো নামে স্থানীয় একটি সোওনা বাথে গোসল করতে গিয়েছিলেন। সম্ভবত সেখান থেকেই আক্রান্ত হয়েছেন তিনি।

পিলারস্কির কথায়, ‘ওই জি আই জো সোওনা বাথকেই ভাইরাসের আঁতুড়ঘর বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।’ নাম প্রকাশ না করার শর্তে গ্লোবাল নিউজকে আরেক চিকিৎসক মন্ট্রিলের ওই সোওনা বাথকেই মাঙ্কিপক্সের উৎস বলে চিহ্নিত করেছেন।

মহামারি করোনার মধ্যেই নতুন আতঙ্ক হয়ে এবার সামনে এসেছে মাঙ্কিপক্স। বিরল এ রোগটি দ্রুতগতিতে ছড়িয়ে পড়ছে দেশে দেশে। প্রথম মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত রোগী পাওয়া যায় যুক্তরাজ্যে। এরপর ইউরোপের স্পেন, জার্মানি, পর্তুগাল, বেলজিয়াম, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডস, ইতালি ও সুইডেনেও এ রোগে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়।

এসএইচ-২৩/২৭/২২ (আন্তর্জাতিক ডেস্ক)

বার্সাকে ‘না’, পিএসজিতে যাচ্ছেন উসমান দেম্বেলে!

বার্সেলোনাকে না করে দিলেন উসমান দেম্বেলে। কাতালানদের নতুন প্রস্তাবে সাড়া না দিয়ে প্যারিস সেইন্ট জার্মেইতে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন এই ফরাসি তারকা।

জমে উঠেছে ইউরোপিয়ান ক্লাব ফুটবলের দলবদলের বাজার। একে একে নতুন ঠিকানা খুঁজে নিচ্ছেন ফুটবলাররা। বিশ্বকাপজয়ী তারকা উইঙ্গার ওউসমান দেম্বেলেও হাঁটছেন একই পথে। বর্তমান ক্লাব বার্সেলোনার সঙ্গে জুনেই শেষ হচ্ছে তার চুক্তির মেয়াদ। গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিল আবারো বার্সাতেই হয়তো থেকে যাবেন ২৪ বছর বয়সী এই ফুটবল তারকা। কিন্তু সব জল্পনা কল্পনার অবসান নিজেই করে দিলেন দেম্বেলে।

ব্রিটিশ গণমাধ্যমের বরাতে জানা গেছে, বার্সেলোনার দেয়া নতুন প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন দেম্বেলে। আর স্পেনে নয় প্যারিসে থাকার পরিকল্পনা করছেন এই উইঙ্গার। অর্থাৎ ফ্রি ট্রান্সফারে পিএসজিতে পাড়ি জমানোর পরিকল্পনা করছেন তিনি। ২০১৭ তে বরুশিয়া ডর্টমুন্ড থেকে বার্সেলোনায় ঠিকানা গড়ার পর কাতালানদের হয়ে দুটি লা লিগা, দুটি স্প্যানিশ কাপ ও একটি স্প্যানিশ সুপার কাপ জেতেন এই ফরাসি ফরোয়ার্ড।

এদিকে, নতুন মৌসুমে নিজেদের অ্যাটাকিং সাইড সাজাতে বেশি মনোযোগ দিয়েছে আর্সেনাল। সে ধারাবাহিকতায় তারা অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদ স্ট্রাইকার আলভারো মোরাতাকে রেখেছে তাদের দলবদলের তালিকায়। মোরাতাকে দলে ভেড়াতে অনেকটা পথ এগিয়েও গেছে গানাররা। শোনা যাচ্ছে ৩০ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে মোরাতাকে দলে নিচ্ছেন তারা। গেলো মৌসুমে য়্যুভেন্তাসে ধারে খেলেছেন সাবেক রিয়াল মাদ্রিদ ও চেলসি স্ট্রাইকার মোরাতা। ৬৭ ম্যাচ খেলে তুরিনের ওল্ড লেডিদের হয়ে করেছেন ২০ গোল।

এদিকে সাদিও মানে লিভারপুল ছাড়ছেন এমন গুঞ্জন ফুটবল পাড়া জুড়ে থাকলেও, এবার শোনা যাচ্ছে ভিন্ন কিছু। গুঞ্জন উঠেছে অ্যানফিল্ডেই থেকে যেতে পারেন সেনেগালের এই তারকা। যদিও এখনো পর্যন্ত মানের চুক্তি বাড়াতে কোন আগ্রহ দেখায়নি লিভারপুল কর্তৃপক্ষ। ২০১৬ তে সাউদাম্পটন থেকে লিভারপুলে যোগ দেয়া মানে, ধীরে ধীরে হয়ে ওঠেন ক্লাবটির অন্যতম নির্ভরযোগ্য ফুটবলার। অল রেডদের হয়ে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ১২০ গোল করেছেন আফ্রিকান কাপ অব নেশন্স জেতা এই উইঙ্গার। তবে নিজের সিদ্ধান্ত প্যারিসে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনাল শেষেই জানাবেন বলে জানিয়েছেন মোনে।

এসএইচ-২২/২৭/২২ (স্পোর্টস ডেস্ক)

পছন্দমতো পোশাক পরে নরসিংদী রেলস্টেশনে একদল নারী

নরসিংদী রেলস্টেশনে ‘অশ্লীল পোশাক’ পরার অজুহাতে এক বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থী ও তার দুই বন্ধুকে হেনস্তার প্রতিবাদে ঢাকা থেকে নরসিংদী সেই স্টেশন ভ্রমণ করেছে একদল নারী।

শুক্রবার সকালে একটি ট্রেনে চেপে তারা নরসিংদী স্টেশনে যান বলে নিশ্চিত করেন নরসিংদী রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন মাস্টার মো. মুসা।

অন্তত ২০ নারীর একটি দল এ ভ্রমণের নাম দিয়েছে ‘অহিংস অগ্নিযাত্রা’। তারা রাজধানীর বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের কর্মী। অগ্নিযাত্রায় এ নারীরা তাদের পছন্দমতো আধুনিক পোশাক পরেছিলেন।

এর আগে, গত ১৮ মে ভোরে নরসিংদী রেলওয়ে স্টেশনে আধুনিক পোশাক পরা এক নারী দুই বন্ধুকে নিয়ে ঘুরতে এসে স্থানীয় এক মাঝবয়সী নারী ও কয়েকজন বখাটের হাতে হেনস্তার শিকার হন।

এ ঘটনায় ভৈরব রেলওয়ে ফাঁড়িতে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করলে এক যুবককে গ্রেফতার করা হয়। তবে, ঘটনার সাত দিনের বেশি পার হলেও ঘটনার মূল হোতা মাঝবয়সী ওই নারীকে গ্রেফতার করা যায়নি।

দলটির সদস্য তৃষিয়া নাশতারান নামে একজন বলেন, আমাদের ইচ্ছামতো পোশাক পরে নরসিংদী রেলওয়ে স্টেশন ভ্রমণ করেছি আমরা। এটা আমাদের নীরব প্রতিবাদ। আমরা স্টেশনে এসে এখানকার মানুষের সঙ্গে কথা বলেছি, সেদিনের ঘটনা সম্পর্কে জানতে চেয়েছি। মূলত তাদের সঙ্গে একটা মানবিক যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছি।

নরসিংদী রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন মাস্টার মো. মুসা জানান, তারা একদল সংগঠক শুক্রবার সকালে স্টেশনে আসে এবং বেশ কয়েকটি উপদলে ভাগ হয়ে স্টেশনের বিভিন্ন প্রান্তে ভ্রমণ করে, ছবি তোলে। এসময় তারা স্থানীয়দের সাথে কথা বলে এবং আমার কক্ষে এসে সেদিনের ঘটনা নিয়েও আলাপ করে।

এসএইচ-২১/২৭/২২ (আঞ্চলিক ডেস্ক)

আফজাল-সাবিনার প্রেমকাহিনী এখন ভাইরাল

ছোটবেলা থেকেই একে অপরকে ভালভাবে আফজাল-সাবিনা চিনতেন। তবে প্রেমের সূচনা ২০১৯ সালে। তবে সাবিনার বাবা-মা চাইতেন না মেয়ে আফজালের সঙ্গে মেয়ে মেলামেশা করুক। কেননা আফজাল দিনমজুরের কাজ করেন। দিনে আয় মাত্র ৩০০ টাকা।

কিন্তু কথায় আছে, প্রেম কোনো বাধা মানে না! তাই বাবা-মায়ের অমতে বন্ধুদের সহায়তায় পালিয়ে বিয়ে করেন ২১ বছর বয়সী আফজাল ও ১৯ বছর বয়সী সাবিনা, খুঁজে নেন নিজেদের মতো বাঁচার রাস্তা।

ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রেমিক এই দম্পতি এখন একটি ঘর ভাড়া করে থাকেন দিল্লির সরাই কেলা এলাকায়।

দু’জনেরই পছন্দের পানীয় ‘চা’। যখনই কোথাও চা পান করেন তারা, এক গ্লাসেই করেন। আফজলের মতে, এতে নাকি ভালবাসা বাড়ে, অন্তরের টান বাড়ে। তাই এই ভাগাভাগি।

সম্প্রতি বাসার পাশে দিল্লির একটি চায়ের দোকানে দেখা যায়, এক গ্লাসে ভাগাভাগি করে চা খাচ্ছেন দু’জন; লজ্জায় অবনত সাবিনার মাথা আর তার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসছেন আফজাল। চা ভর্তি একটি গ্লাস দু’জনের ধরে রেখেছেন।ছবিটি ভাইরাল হয়েছে। আর ছবির সঙ্গে তুলে ধরা হয়েছে তাদের ভালোবাসার কাহিনী। যে কাহিনি নেটিজেনদের মন ছুঁয়েছে।

এসএইচ-২০/২৭/২২ (অনলাইন ডেস্ক)

বিএনপি ‘বৃহত্তর ঐক্য’ কীভাবে অর্জন করতে চাইছে?

দেশে বিরোধীদল বিএনপি বর্তমানে সবগুলো সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দল এবং সংগঠনকে তাদের আন্দোলনে যুক্ত করার লক্ষ্যে এক সংলাপ শুরু করেছে।

‘শেখ হাসিনা সরকারের অধীনে কোন নির্বাচন নয়’-এই এক দফা দাবিতে বিএনপি অন্য দলগুলোর সাথে ‘বৃহত্তর ঐক্য’ করে যুগপৎ আন্দোলনের চিন্তা নিয়ে এগুচ্ছে।

এদিকে এর আগে বিএনপির জোট গঠনের ক্ষেত্রে তাদের আন্দোলন বা নির্বাচনী জোটে নেতা কে হবেন, এ নিয়ে টানাপোড়েন তৈরি হয়েছিল।

তবে এবার দলটির নেতারা বলেছেন, খালেদা জিয়াই হবেন তাদের ঐক্যের মুল নেতা। এই ঐক্যে এখনই কোন নির্বাচনী জোট হবে না।

বিএনপির নেতৃত্বে জামায়াতে ইসলামীসহ যে ২০ দলীয় জোট গঠিত হয়েছিল তা এখন আর সক্রিয় নেই।

গত নির্বাচনের আগে কামাল হোসেনের নেতৃত্বে গণফোরামসহ কয়েকটি দলকে বিএনপি জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নামের ভিন্ন আরেকটি যে জোট করেছিল, সেই জোটও ভেঙে গেছে অনেক আগে।

বিএনপি এককভাবেই তাদের কর্মকান্ড চালিয়ে আসছে কয়েক বছর ধরে।

যদিও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের পুরোনো দাবিকে সামনে এনে কিছুদিন ধরে বিএনপি দলগতভাবেই রাজপথে সমাবেশ বিক্ষোভ অব্যাহত রেখেছে, কিন্তু দলটি মনে করছে যে এককভাবে তাদের এ দাবি আদায়ে আওয়ামী লীগ সরকারকে চাপে ফেলা সম্ভব হবে না।

সেজন্য বিএনপি নতুন কৌশল হিসাবে আওয়ামী লীগ বিরোধী অন্য সব দলের সাথে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা চালিয়েছে।

এখন এই ঐক্য তৈরির চেষ্টায় দলটি অন্যদলগুলোর সাথে আনুষ্ঠানিক সংলাপ শুরু করেছে।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলম আলমগীর বলেছেন, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি আদায়ে তারা আন্দোলনের ঐক্য বা প্লাটফরম তৈরির চেষ্টা করছেন।

পুরোনো জোটগুলো সম্পর্কে মি: আলমগীরের বক্তব্য হচ্ছে, “সুনির্দিষ্টভাবে ২০ দলীয় জোট এখন এফেক্টিভ (কার্যকর) না। ঐক্যফ্রন্টও এফেক্টিভ না।”

তিনি উল্লেখ করেন, তারা এখন আন্দোলনের জন্য বৃহত্তর ঐক্যের চেষ্টা করছেন এবং প্রয়োজন হলে সেটাকে তারা নতুনভাবে রুপ দেবেন।

বিএনপি যেহেতু শেখ হাসিনার সরকারের অধীনে নির্বাচনে না যাওয়ার অবস্থানকে এখন সামনে আনছে।

সেকারণে কৌশল হিসাবে আন্দোলনের ঐক্যকে এখনই নির্বাচনী জোট বলতে চাইছে না দলটি।

কিন্তু ঐক্যের প্রক্রিয়ায় বিএনপিসহ অন্য যে সব দল রয়েছে, সেই দলগুলোর নেতারা মনে করেন, আন্দোলনের মধ্যেই তাদের ঐক্য নির্বাচনী জোটে রূপ নিতে পারে।

আন্দোলনের ঐক্য বা যাই বলা হোক কেন – এই ঐক্যের নেতৃত্ব নিয়েও আলোচনা রয়েছে দলগুলোর মধ্যে।

গত নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিয়েছিল ড: কামাল হোসেনের নেতৃত্বকে সামনে রেখে গণফোরামসহ কয়েকটি দলকে নিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন করে। ড: হোসেনই সেই নির্বাচনে অংশ নেননি।

তখন তাদের জোটের নেতা কে বা কাকে দেখে ভোটাররা আকৃষ্ট হবেন – এসব নানা প্রশ্ন উঠেছিল।

এই বিষয়টি এবার ঐক্যের ক্ষেত্রে বিএনপি বিবেচনায় রেখেছে এবং খালেদা জিয়ার নেতৃত্বকেই সামনে রাখা হবে বলে দলটির একাধিক নেতা জানিয়েছেন।

বিএনপি মহাসচিব মি: আলমগীর বলেছেন, ঐক্যের ক্ষেত্রে নেতৃত্ব নিয়ে কোন জটিলতা হবে না।

তাঁর বক্তব্য হচ্ছে, “অন্য দলগুলোর সাথে আমরা যেহেতু আছি, তাদের সাথে আলোচনার ভিত্তিতে ঐক্যের নেতা ঠিক হবে।”

একইসাথে মি: আলমগীর উল্লেখ করেছেন, “আমাদের দলের নেতা নি:সন্দেহে দেশনেত্রী খালেদা জিয়া আছেন। তার অনুপস্থিতিতে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আছেন তারেক রহমান।”

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দুর্নীতির মামলায় দুই বছর জেলে খেটে সরকারের নির্বাহী আদেশে শর্তসাপেক্ষে মুক্ত রয়েছেন।

সেই শর্ত অনুযায়ী তিনি রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত হতে পারবেন না। দুর্নীতির মামলায় সাজা হওয়ায় তিনি নির্বাচনেও অংশ নিতে পারবেন ন।

এছাড়া বয়স এবং অসুস্থতার কারণেও মিসেস জিয়া রাজনীতিতে এখণ সক্রিয় হতে পারবেন কিনা – সে প্রশ্নটিও রয়েছে।

তবে তিনি রাজনীতিতে সক্রিয় না হলেও বিএনপি এখন কৌশল হিসাবে তার নেতৃত্বকেই সামনে রেখে এগুতে চাইছে।

এরফলে খালেদা জিয়ার মামলার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক একটা অবস্থান তৈরি করা সম্ভব হতে পারে এবং একইসাথে তাদের আন্দোলনে মানুষের সহানুভুতি পাওয়া যেতে পারে বলে দলটির নেতাদের অনেকে মনে করেন।

বিএনপির অন্য একাধিক সিনিয়র নেতা জানিয়েছেন, তারা আসলে খালেদা জিয়ার নামেই ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করতে চাইছেন। সেখানে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দলীয় নীতি নিয়ে তৎপর থাকবেন।

আর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ঐক্যবদ্ধ বা যুগপৎ আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী হিসাবে কাজ করবেন।

এনিয়ে বিএনপির সমমনা অন্য দলগুলোর কোন প্রশ্ন এবং আপত্তি নেই বলে মনে হয়েছে।

বিএনপি এখন রেজা কিবরিয়া এবং নুরুল হকের নেতৃত্বাধীন গণ অধিকার পরিষদ এবং বামপন্থী দলগুলোর সাথে সংলাপ করবে।

ঐক্যের ক্ষেত্রে নেতৃত্ব বা অন্য কোন বিষয়ে প্রশ্ন নেই রেজা কিবরিয়ার।

তিনি বলেছেন, তারা এখন নির্বাচনী জোট না করে বিএনপিকে সামনে রেখেই সরকার বিরোধী আন্দোলনে আগ্রহী।

“বিএনপির ঐক্যের উদ্যোগ ইতিবাচক বলে মনে করি। কারণ বর্তমান সরকারের পতন এবং নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের এক দফায় দলগুলো ঐক্যবদ্ধ হবে” বলেন মি: কিবরিয়া।

তবে জামায়াতে ইসলামীর সাথে জোট নিয়ে বিএনপিকে দেশের ভেতরে এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিভিন্ন সময় প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়েছে।

এবার বিএনপি কৌশলে জামায়াতকে যুগপৎ আন্দোলনে রাখতে চাইছে।

দু’দিন আগে মাহমুদুর রহমান মান্নার নেতৃত্বাধীন নাগরিক ঐক্যের সাথে আলোচনার মাধ্যমে বিএনপি ঐক্য গঠনের সংলাপ শুরু করেছে।

মি: মান্না বলেছেন, যুগপৎ আন্দোলনে জামায়াত আলাদাভাবে অভিন্ন কর্মসূচিতে থাকবে, এমন আলোচনা তাদের মধ্যে রয়েছে।

“বিএনপি আনুষ্ঠানিকভাবে নয়, বিভিন্নভাবে আমাদের জানিয়েছে যে, তারা জামায়াতকে নিয়ে কমফর্টেবল নয়। কাজেই জামায়াতকে আলাদা রাখা হবে।

“যুগপৎ আন্দোলন হবে। জামায়াত আলাদাভাবে বিএনপির সাথে কথা বলে অভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে মাঠে থাকবে এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের মতো। তাতে তো সমস্যা নাই” বলেন মাহমুদুর রহমান মান্না।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী মনে করেন, বিএনপির এই নতুন কৌশল কার্যকর করা সম্ভব হলে তাতে বিএনপি রাজনৈতিক ফল পেতে পারে।

এদিকে, আওয়ামী লীগের সাথে থাকলেও এখন কিছুটা দূরত্ব তৈরি হয়েছে, এমন কয়েকটি দল যেমন, জি এম কাদেরের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি এবং শরিফ নুরুল আম্বিয়ার নেতৃত্বাধীন জাসদের একাংশের সাথেও বিএনপি ঐক্যের ব্যাপারে আলোচনার চেষ্টা করবে বলে দলটির নেতারা বলছেন।

ঐক্যের ব্যাপারে বিএনপি প্রথম পর্যায়ে সংলাপ শেষ করার পর দ্বিতীয় পর্যায়ে আবার আলোচনা করবে।

সেই পর্যায়ে বিএনপি আন্দোলনের রোডম্যাপ নিয়ে আলোচনা করার কথা বলছে।

এসএইচ-১৯/২৭/২২ (কাদির কল্লোল, বিবিসি)

মেয়রের নির্বাচনী জয় নিয়ে ব্রিটিশ রাজনীতিতে বাংলাদেশির আলোড়ন

লন্ডনের মতো এক বিশাল নগরীর কেবল একটি এলাকার পৌর নির্বাচনের ফল এবার যেভাবে ব্রিটিশ গণমাধ্যমের নজর কেড়েছে তেমনটি সচরাচর দেখা যায় না।

টাওয়ার হ্যামলেটসের নির্বাচনে মেয়র পদে এক ব্রিটিশ-বাংলাদেশি রাজনীতিক লুৎফুর রহমানের প্রত্যাবর্তন এখানকার রাজনীতিতে বড় ধরণের অঘটন বলে বর্ণনা করা হচ্ছে। কেউ কেউ তো এটিকে ব্রিটেনের সাম্প্রতিক নির্বাচনী রাজনীতির ইতিহাসে সবচেয়ে অসাধারণ ঘটনা বলে বর্ণনা করছেন।

সাত বছর আগে লুৎফুর রহমানকে নানা অনিয়মের অভিযোগে টাওয়ার হ্যামলেটসের মেয়রের পদ থেকে সরিয়ে দিয়ে ৫ বছরের জন্য তার কোন নির্বাচনে দাঁড়ানোই নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। অথচ এবারের নির্বাচনে যেরকম বিপুল ব্যবধানে বিশাল ম্যান্ডেট নিয়ে তিনি ফিরে এসেছেন, তা রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের হতবাক করে দিয়েছে।

“কেমন করে এটা সম্ভব হলো? আমি রীতিমত বিভ্রান্ত, আমাকে বুঝতে সাহায্য করুন”- ব্রিটেনের একটি টেলিভিশন টক শোতে উপস্থাপক দর্শকদের দিকে এরকম প্রশ্ন ছুঁড়ে দিচ্ছেন।

“যে রাজনৈতিক দলের কোন ওয়েবসাইট নেই, সোশ্যাল মিডিয়ায় কোন তৎপরতা নেই, যাদের দৃশ্যমান কোন নির্বাচনী প্রচারণা নেই, দলীয় তহবিল নেই- কীভাবে তারা নির্বাচনে জিতে একটি কাউন্সিলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিল? এটা কেমন করে সম্ভব?”, প্রশ্ন তোলেন ব্রিটেনের একজন ডানপন্থী রাজনীতিক এবং টক টিভির উপস্থাপক রিচার্ড টাইস।

লুৎফুর রহমান এবং তার ‘অ্যাসপায়ার’ পার্টির এই বিজয় নিয়ে যুক্তরাজ্যের মূলধারার গণমাধ্যমে এত প্রশ্ন, এবং এত বিচার-বিশ্লেষণের কারণও আছে।

সাত বছর আগে মনে করা হয়েছিল, লুৎফুর রহমানের রাজনৈতিক কেরিয়ার শেষ হয়ে গেছে।

টাওয়ার হ্যামলেটসের মেয়র পদে সরাসরি ভোটে দুই দুই বার নির্বাচিত হওয়ার পরও নির্বাচনে প্রতারণা এবং কাউন্সিলের ব্যবস্থাপনায় নানা রকম অনিয়মের অভিযোগে ২০১৫ সালে তাকে সরিয়ে দেয়া হয়। শুধু তাই নয়, একটি নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল তাকে ৫ বছরের জন্য নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।

কিন্তু তা সত্ত্বেও গত ৫ই মের নির্বাচনে তিনি এবং তাঁর দল যেরকম বিপুলভাবে বিজয়ী হয়ে টাওয়ার হ্যামলেটসের ক্ষমতায় ফিরে এলেন, তাকে একটি ছোটখাটো রাজনৈতিক ভূমিকম্পই বলতে হবে।

নির্বাচনে তিনি মেয়র পদে নির্বাচিত হন প্রায় ৪১ হাজার ভোট পেয়ে, যা মোট প্রদত্ত ভোটের প্রায় ৫৫ শতাংশ। তাঁর দল অ্যাসপায়ার পার্টি প্রার্থীরা ২৪টি কাউন্সিলর পদে জয়ী হন। অন্যদিকে প্রতিদ্বন্দ্বী লেবার পার্টির কাউন্সিলরের সংখ্যা দাঁড়ায় ১৯টিতে।

এর মানে হচ্ছে, টাওয়ার হ্যামলেটসের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ এখন মিস্টার রহমান এবং তাঁর দল অ্যাসপায়ার পার্টির হাতে।

টাওয়ার হ্যামলেটস এখন লন্ডনের দ্রুত বিকাশমান একটি এলাকা। বিশ্বের অর্থ এবং পুঁজি-বাজারের অন্যতম বড় একটি কেন্দ্র হিসেবে গণ্য করা হয় সিটি অব লন্ডনকে। সেই সিটি এখন ক্রমশ সম্প্রসারিত হচ্ছে পার্শ্ববর্তী টাওয়ার হ্যামলেটসের দিকে, আর এই কাউন্সিলের মধ্যেই পড়েছে ক্যানারি হোয়ার্ফ, যেটি আগে থেকেই ব্যাংক-বীমা-আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোার বড় কেন্দ্র। সব মিলিয়ে এটি লন্ডনের অর্থনীতির এক বড় চালিকা শক্তি এবং এই কাউন্সিলের কয়েক বিলিয়ন ডলারের বাজেটের নিয়ন্ত্রণ নিতে ব্রিটেনের রাজনৈতিক দলগুলো খুবই উদগ্রীব।

লন্ডনে মাত্রই ‘এলিজাবেথ লাইন’ বলে যে নতুন ট্রেন লাইন চালু হয়েছে, সেটি গেছে টাওয়ার হ্যামলেটসের বাঙালি অধ্যুষিত এলাকার ভেতর দিয়ে, এবং এই নতুন রেল সংযোগ পুরো এলাকাটিকে আগামী কয়েক বছরে আরও আমূল বদলে দেবে বলে মনে করা হচ্ছে।

পলিটিক্যাল হাইবারনেশন থেকে লুৎফুর রহমান যেভাবে এরকম একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানীয় সরকারের নির্বাহী মেয়র হয়ে ফিরে আসলেন, তাতে একেবারে হতবাক হয়ে গেছেন আজমল হোসেন। মিস্টার রহমানের বিরুদ্ধে যে চারজন মিলে নানা ধরণের অভিযোগ এনে মামলা করেছিলেন, তিনি তার একজন।

আজমল হোসেন নিজে লেবার পার্টির একজন সক্রিয় কর্মী, লন্ডনের বাংলাদেশিদের প্রাণকেন্দ্র ব্রিক লেনে একটি রেস্টুরেন্টের মালিক।

“আমি খুব দুঃখিত হয়েছি যে কারণে, এই ফলের পর আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম মনে করবে, যে যাই করুক না কেন …নির্বাচনে পাশ করতে কোন অসুবিধা নেই.. নৈতিকতার কোন দরকার নেই। এটা আমাদের কমিউনিটির জন্য খুব নেতিবাচক”, বলছিলেন তিনি।

তবে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ এবং গণমাধ্যম যত অভিযোগই তুলুক, লুৎফুর রহমান বরাবরই তার বিরুদ্ধে আনা এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন, নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করেছেন।

নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পর গত সপ্তাহে মেয়রের দফতরে তাঁর সঙ্গে কথা হচ্ছিল।

তাঁর প্রতি যে আসলেই অবিচার করা হয়েছিল, তাঁকে যে অন্যায়ভাবে মেয়রের পদ থেকে সরানো হয়েছিল, এবারের নির্বাচনী ফলকে তাঁরই প্রতিফলন বলে মনে করছেন তিনি।

“আমাকে এবং আমার প্রশাসনকে ২০১৫ সালের ২৩শে এপ্রিল যেভাবে কাউন্সিল থেকে সরানো হয়েছে, সেটা নিয়ে জনগণ খুবই অসন্তুষ্ট ছিল। এই পৌর এলাকার জনগণ, ৩৮ হাজার মানুষ, ৩৮ হাজার- তারা ২০১৪ সালে ভোট দিয়ে আমাকে মেয়র করেছিলেন। আমাদের দলের ১৮ জনকে তারা কাউন্সিলরও নির্বাচিত করেন। আর গত ৫ মের নির্বাচনে প্রায় ৪১ হাজার মানুষ আমাকে আবার ভোট দিয়ে মেয়র করেছেন, আর এবার আমাদের দলের ২৪ জন কাউন্সিলর হয়েছেন। আপনি কি এখানে একটা পারস্পরিক সম্পর্ক দেখতে পাচ্ছেন? আমার ভোট কমেনি, বরং আরও বেড়েছে।”

কিন্তু তাঁর বিরুদ্ধে যে রায় দেয়া হয়েছিল, সেটা তো খুবই স্পষ্ট এবং সেই রায়ের বিরুদ্ধে তিনি আপিল পর্যন্ত করেন নি – প্রশ্ন করেছিলাম আমি।

“এটা কিন্তু কোন রায় ছিল না। এটা ছিল নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা। ব্যাপারটা এমন নয় যে আমাকে কোন অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। এটা ছিল একটা দেওয়ানি ব্যাপার। এটা রায় ছিল না, এটা ছিল একটা রিপোর্ট। এর বিরুদ্ধে আমি জুডিশিয়াল রিভিউর জন্য আপিল করেছিলাম। কিছু বিষয়ে আমাকে আপিলের অনুমতি দেয়া হয়েছে, কিছু বিষয়ে দেয়া হয়নি। আর মামলা লড়তে গিয়ে আমি প্রায় নিঃস্ব হয়ে গিয়েছিলাম। সেজন্যে আর আমি আইনি লড়াই চালিয়ে যেতে চাই নি,” – ব্যাখ্যা করছিলেন তিনি।

লুৎফুর রহমান বেড়ে উঠেছেন টাওয়ার হ্যামলেটসেই, নিজেকে তিনি বর্ণনা করছেন “এই এলাকারই একজন ছেলে” হিসেবে। তিনি রাজনীতি শুরু করেছিলেন লেবার পার্টিতেই, এবং স্থানীয় লেবার পার্টিতে বেশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছিলেন। তাকে দলের মধ্যে একজন সম্ভাবনাময় উদীয়মান তারকা হিসেবে দেখা হচ্ছিল।

টাওয়ার হ্যামলেটসের মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য ২০১০ সালে তিনি লেবার পার্টির মনোনয়ন পান, কিন্তু পরে পার্টি তার মনোনয়ন প্রত্যাহার করে। তখন তিনি বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেব স্বতন্ত্র প্ল্যাটফর্ম থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জয়ী হন। ২০১৪ সালে তিনি আবারও পুন-নির্বাচিত হন মেয়র পদে।

“লুৎফুর রহমান খুব ক্যারিশম্যাটিক একজন নেতা, তিনি জনগণের হৃদস্পন্দন বুঝতে পারেন, বিশেষ করে বাঙ্গালি জনগোষ্ঠী, যাদের নিয়ে তিনি রাজনীতি করেন, তাদের আশা-আকাঙ্ক্ষার, তাদের অনুভবের জায়গাটা তিনি বুঝতে পারেন”, বলছেন বাংলাদেশি সাংবাদিক বুলবুল হাসান। লেবার পার্টির একজন সাবেক যোগাযোগ উপদেষ্টা হিসেবে তিনি পূর্ব লন্ডনের রাজনীতি ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণের সুযোগ পেয়েছেন।

টাওয়ার হ্যামলেটসের মোট বাসিন্দার ৩২ শতাংশই বাংলাদেশি। ভোটার হিসেবে কোন একক গোষ্ঠী হিসেবে তারাই সবচেয়ে বড় এবং গুরুত্বপূর্ণ। স্থানীয় সরকারের রাজনীতিতে বাংলাদেশিরা খুবই সক্রিয়।

বুলবুল হাসান মনে করেন, এদের সমর্থনই ছিল লুৎফুর রহমানের সবচেয়ে বড় শক্তি।

“নির্বাচনে ভোট আকর্ষণের জন্য সম্প্রদায়-ভিত্তিক একটি প্রচারণা ছিল লুৎফুর রহমানের দলের দিক থেকে। বাঙ্গালি মুসলমান পরিচয়টি কিন্তু এখানে একটি বড় ভূমিকা পালন করেছে। মূলধারার দল হিসেবে লেবার পার্টির পক্ষ থেকে এধরণের প্রচারণা চালানো মুশকিল ছিল। কাজেই আমি বলবো এখানে অ্যাসপায়ার পার্টি বা লুৎফুর রহমান একটা সুবিধা পেয়েছেন।”

“আর বাঙালিরাও মনে করেছেন, বাঙালি বা মুসলমানদের প্রতিনিধিত্বশীল একজন রাজনীতিবিদ হিসেবে লুৎফুর রহমানকে তাদের দরকার”, বলছিলেন তিনি।

তবে অ্যাসপায়ার পার্টি এবং লুৎফুর রহমান তাদেরকে কেবলমাত্র একটি মাত্র সম্প্রদায়ের দল হিসেবে চিত্রিত করার চেষ্টার প্রতিবাদ জানিয়েছেন। মিস্টার রহমান বলছেন, যে বিপুল বিজয় তারা পেয়েছেন, তাতে প্রমাণিত হয়, এলাকার সব সম্প্রদায়ের মানুষের সমর্থনই তাদের পেছনে ছিল।

“এটা একদমই বাজে কথা। একদম অসত্য। ৪১ হাজার মানুষ আমাদের ভোট দিয়েছে আমাদের অতীতের রেকর্ড দেখে, আমাদের নীতি এবং প্রতিশ্রুতি দেখে। এই দেশে একমাত্র আমরাই বিনামূল্যে ঘরে গিয়ে মানুষের সেবাযত্নের সুবিধা চালু করেছি। এটা কি কেবল একটা সম্প্রদায়ের জন্য ছিল? এটা ছিল সবার জন্য, যাদের এরকম সেবা-যত্নের দরকার ছিল।”

“আমরা প্রাথমিক স্কুলের সব শিক্ষার্থীর জন্য স্কুলে বিনামূল্য খাবারের ব্যবস্থা করেছি। এটা তো সবার জন্য, জাতি-ধর্ম-লিঙ্গের ভিত্তিতে কোন বৈষম্য তো এখানে ছিল না। এসব কথা যারা বলে, তাদের একটা এজেন্ডা আছে। আমি বলবো, এদের কথায় বিভ্রান্ত হবেন না। টাওয়ার হ্যামলেটসের জনগণ আসলে এদের কথায় বিভ্রান্ত হয়নি”, বলছিলেন তিনি।

নির্বাচনে তাঁর দলের বিপুল বিজয়কে তিনি ব্যাখ্যা করছেন তাদের সফল নির্বাচনী কৌশল এবং ব্যাপক গণসংযোগ কর্মসূচি দিয়ে।

রহমান বলছিলেন, “আমরা আমাদের কাজ শুরু করি ২০২১ সালের জানুয়ারিতে এবং তখন থেকেই আমরা আমাদের প্রচারণা চালিয়ে গেছি। এটা সত্যি যে, আমাদের প্রচারণা খুব নজর-কাড়া ছিল না, আমরা ঢাক-ঢোল পিটিয়ে এই প্রচারণা চালাইনি। সেটাই ছিল আমাদের কৌশল, সেটা আমরা ইচ্ছে করেই করেছি।”

“আমরা ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়েছি, তাদের দরজায় কড়া নেড়েছি, কথা বলেছি, রাস্তায়-বাজারে লোকজনের সঙ্গে কথা বলেছি। আমি সম্ভবত বেশিরভাগ ভোটারের বাড়ি তিনবার করে গিয়েছি। প্রচারণা চালাতে চালাতে আমি ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলাম”, বলছিলেন তিনি।

২০১৫ সালে লুৎফুর রহমানকে মেয়রের পদ থেকে যেভাবে সরানো হয়েছিল, এবং মূলধারার গণমাধ্যমে তাকে যেভাবে চিত্রিত করা হয়েছে, সেটি বাংলাদেশি ভোটারদের অনেককে ক্ষুব্ধ করেছে এতে কোন সন্দেহ নেই।

টাওয়ার হ্যামলেটসের বাসিন্দা স্কুল শিক্ষক আবু হোসেন এর মধ্যে বর্ণবাদ এবং ইসলাম-বিদ্বেষের ছায়াও দেখতে পাচ্ছেন।

“দেখুন, টাওয়ার হ্যামলেটস হচ্ছে একটা স্থানীয় পরিষদ। কিন্তু আপনি দেখবেন, এখানকার মূলধারার গণমাধ্যমে এর খবর কত ফলাও করে দেয়া হয়। অতীতের নির্বাচনগুলোতেও এটা দেখা গেছে। যেভাবে জাতীয় পর্যায়ে মন্ত্রী-মিনিস্টার থেকে শুরু করে মূলধারার গণমাধ্যমে এখানে জড়িয়ে যাচ্ছে, তাতে বোঝা যায় এরা চায় না একজন বাঙ্গালি বা মুসলিম কাউন্সিলের নেতৃত্বে থাকুক। ইসলাম-বিদ্বেষ ছিল বলেই এটা ঘটেছে। লুৎফুর রহমান যেহেতু একজন বাঙ্গালি এবং মুসলিম, সেজন্যে ইসলামোফোবিয়া কাজ করছে এখানে। এটা একদম পরিষ্কার।”

তবে গত কয়েক বছরে সাবেক মেয়র জন বিগস এবং তার নেতৃত্বাধীন লেবার পার্টি যেভাবে কাউন্সিল পরিচালনা করেছে, সেটা নিয়েও ক্ষোভের কথা জানিয়েছেন অনেক ভোটার।

লিন্ডা উইলকিনসন লেবার পার্টির সমর্থক হলেও এবার তিনি ভোট দিয়েছেন লুৎফুর রহমানকে। বিবিসির নিউজনাইট অনুষ্ঠানকে দেয়া সাক্ষাৎকারে মিস্টার রহমানের বিপুল বিজয়ের কারণ ব্যাখ্যা করছিলেন তিনি।

“আমার মনে হয়, তিনি যে এত বিরাট ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন, তার কারণ হচ্ছে, তিনি আগের মেয়াদে যা করেছিলেন তার জন্য। তার আমলে তরুণদের জন্য ৪৮টি কেন্দ্র ছিল, এখন আছে মাত্র আটটি। তার আমলে বয়স্কদের জন্য সোশ্যাল কেয়ার দেয়া হতো বিনামূল্য, এখন এটির জন্য অর্থ দিতে হয়। আমি এরকম আরও অনেক উদাহরণ দিতে পারি।”

“আমার মনে হয়, লোকে তুলনা করে দেখেছে, লুৎফুর রহমানের আমলে আমরা কী পেতাম, আর জন বিগসের আমলে কী পেয়েছি। লোকজন বলেছে, যথেষ্ট হয়েছে, আর না।”

টাওয়ার হ্যামলেটসের একজন বাসিন্দা সালিম হোসেনও লুৎফুর রহমানকে ভোট দিয়েছেন তার অতীতের রেকর্ড দেখে।

“২০১৫ সালের আগে যখন উনি টাওয়ার হ্যামলেটসের মেয়র ছিলেন, তখন উনি হাউজিং বিষয়ে অনেক কাজ করেছেন। সাধারণ মানুষও দেখেছে এই কাজগুলো। আর উনার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগের কথা বলছেন, সেগুলো আমি পত্র-পত্রিকায় পড়েছি। আমরা দেখেছি এখানে অনেকগুলো বিষয় সরকার প্রমাণ করতে পারেনি। আর সাধারণ মানুষ মনে করে এই অভিযোগের অনেকগুলো মিথ্যা।”

টাওয়ার হ্যামলেটসে সাবেক মেয়র জন বিগস এবং তার প্রশাসন যেসব নীতি নিয়েছিলেন, তা যে লেবার পার্টির অনেক সমর্থককে ক্ষুব্ধ করেছে, সেটা এখন দলের অনেক নেতাও খোলাখুলি স্বীকার করছেন। বিবিসির তরফ থেকে জন বিগস এবং লেবার পার্টির আরও ক’জন নেতার সঙ্গে কয়েক বার যোগাযোগ করা হলেও তারা কেউ সাড়া দেননি।

মেয়র লুৎফুর রহমান এখন তার নতুন প্রশাসন গড়ে তোলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তার দলে নারীদের প্রতিনিধিত্ব একেবারেই নেই বলে যে সমালোচনা সেটা পুরোপুরি স্বীকার করতে রাজী নন তিনি। তবে তার প্রশাসনিক টিমে নারীরা বেশ গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে থাকবেন সেরকম প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন তিনি।

স্থানীয় পরিষদের নির্বাচনে চমক লাগানো সাফল্য সত্ত্বেও তাঁর দল অ্যাসপায়ার যে কেবলই একটি স্থানীয় পার্টি, সেটি স্বীকার করছেন তিনি।

তবে অ্যাসপায়ার ভবিষ্যতে স্থানীয় সরকারের রাজনীতির বাইরে জাতীয় রাজনীতিতে গিয়ে আলাদাভাবে প্রার্থী দাঁড় করাবে কিনা, অথবা তিনি নিজে ভবিষ্যতে লেবার পার্টিতে আবার ফিরে যাবেন- এমন সম্ভাবনা দেখেন কিনা- এই দুটি প্রশ্নেরই সরাসরি উত্তর এড়িয়ে গেলেন তিনি।

“লেবার পার্টি দিয়ে আমি রাজনীতি শুরু করি, লেবার পার্টির সঙ্গে আমার কোন শত্রুতা নেই। একটি ক্ষুদ্র চক্র আমাকে দল থেকে বের করার চক্রান্ত করেছিল। কিন্তু সেসব এখন আমি পেছনে ফেলে এসেছি। ভবিষ্যতে কী ঘটবে, সেটা ভবিষ্যতই বলতে পারে।”

লুৎফুর রহমান বলছেন, তিনি এখন বরং তার ভোটারদের কাছে দেয়া অঙ্গীকার বাস্তবায়নেই বেশি মনোযোগ দিতে চান।

“মানুষ আমাকে বিশ্বাস করেছে, তারা আমাকে একটা সুযোগ দিয়েছে তাদের সেবা করার, এবং আমরা বিশ্বস্ত-ভাবেই তাদের সেবা করবো। টাওয়ার হ্যামলেটসকে আবার আমাদের নতুন করে সাজাতে হবে, আমাদের ভবিষ্যৎকে নতুন করে তৈরি করতে হবে”, বলছেন তিনি।

এসএইচ-১৮/২৭/২২ (মোয়াজ্জেম হোসেন, বিবিসি )

গুগল ড্রাইভে আসছে নতুন শর্টকাট সুবিধা

তথ্যপ্রযুক্তির উন্নয়নের যুগে এখন হাতের কাছেই প্রয়োজনীয় তথ্য আমরা পেতে পারি কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই। আর এই সেবা দিচ্ছে জনপ্রিয় সাইড গুগল। সেই সঙ্গে গুগলেরই একটি সেবা কার্যক্রম গুগল ড্রাইভ করে যাচ্ছে যে কোনো ফাইল সুন্দরভাবে সংরক্ষণ করতে।

এই সার্ভিস ২৪ এপ্রিল ২০১২ সালে গুগল শুরু করেছিল। গুগল ড্রাইভকে সোজাভাবে একটি অনলাইন ফাইল স্টোরেজ সার্ভিস বলা যেতে পারে। এখানে আমরা প্রয়োজনীয় ফাইল যেমন ইমেজ, ভিডিও, ডকুমেন্ট, অ্যাপস বা যে কোনো ডিজিটাল ফাইল আপলোড করে স্টোর করে রাখা যায়।

বিভিন্ন ফাইল দ্রুত ও সহজে ম্যানেজ করতে গুগল তাদের ড্রাইভ সেবায় শর্টকাট কমান্ড যোগ করার ঘোষণা দিয়েছিল গত ২৬ মে (বৃহস্পতিবার)।

সম্প্রতি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানায়, এই সেবা চালু হবে আগামী ৪ জুন থেকে। এই সেবা চালু হলে গুগলের এই ক্লাউড সেবায় শর্টকাট অনেক কমান্ড কীবোর্ডে দেওয়া যাবে। এতে করে সহজেই যে কোনো ফাইল কপি, কাট এবং পেস্ট করা যাবে।

গুগলের নিজস্ব ব্লগে জানানো হয়েছে, অন্য যে কোনো ফাইল ম্যানেজারের মতোই গুগল ড্রাইভে কন্ট্রোল/ কমান্ড+ সি, এক্স, অথবা ভি চেপে ফাইল সরাতে পারবে ব্যবহারকারীরা।

এছাড়াও গুগলের নতুন আরও কিছু শর্টকাট ফর্ম আসছে। যার মধ্যে রয়েছে আলাদা ট্যাব হিসেবে ফাইল খোলার কিবোর্ড শর্টকাট সুবিধা। এরজন্য ব্যবহারকারীকে কন্ট্রোল/ কমান্ড+ এন্টার চাপতে হবে।

কোনো ফাইল কপি করে গুগল ডক অথবা ইমেইলে পেস্ট করতে চাইলে সেখানে ফাইলের নামসহ লিংক যোগ হয়ে যাওয়ার সুবিধাও থাকবে।

একই ফাইলের একাধিক কপি ক্লাউড স্টোরেজে রাখতে না চাইলে ফাইলের শর্টকাটও জুড়ে দেওয়া যাবে নতুন শর্টকাট ফর্মে। এরজন্য ব্যবহারকারীকে কন্ট্রোল/ কমান্ড+ শিফট+ ভি বাটন চাপতে হবে। তবে ক্রোম ব্রাউজারেই শুধু কাজ করবে নতুন এই শর্টকাট কমান্ডগুলো।

এসএইচ-১৭/২৭/২২ (প্রযুক্তি ডেস্ক)

বিদিশার ছোট বোনও কি আত্মহত্যা করবে?

জীবনের প্রতি অনীহা নাকি অন্য কিছু জানা নেই। তবুও পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে আত্মহত্যার মতো জঘন্য পথ বেছে নিয়েছেন কলকাতার জনপ্রিয় অভিনেত্রী বিদিশা দে। নাগেরবাজারের রামগড় কলোনির বাড়ি থেকে ২১ বছর বয়সী এ অভিনেত্রীর মরদেহ ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে।

বিভিন্ন গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, হতাশা বিরাজ করছিল সম্ভাবনাময়ী এ মডেলের মনে। এ জন্যই আত্মহত্যা করতে পারেন তিনি। তার মৃত্যু ঘিরে উঠতে শুরু করেছে নানা প্রশ্ন। ইতোমধ্যে অনুভব বেরা নামে এক যুবকের নাম উঠে এসেছে।

এদিকে ক্রমশ ভয় দানা বাঁধছে কাঁকিনাড়ার দে মজুমদার পরিবারে। বুধ আর বৃহস্পতিবার পাল্টে দিয়েছে তাদের জীবন। বড় মেয়ে বিদিশার অস্বাভাবিক মৃত্যুর খবর পেয়েই অসুস্থ মা পম্পা। গুটিয়ে গিয়েছে ছোট বোন। বাবা বিশ্বনাথ শোকে পাথর।

বৃহস্পতিবার ময়নাতদন্তের পরে হাতে পেয়েছেন মেয়ের দেহ। বিদিশার বিকৃত, কাটাছেঁড়া শরীর দেখে আবারও শোক পেয়েছেন। মা ঘন ঘন মূর্ছা যাচ্ছেন। মুখে কুলুপ এঁটেছে ছোট বোন। নাম না প্রকাশের শর্তে বিদিশার এক বন্ধু জানিয়েছে, শোকের পাশাপাশি ভয় জাঁকিয়ে বসেছে কাকু-কাকিমার মনে। তাদের কথায়, বড় মেয়ের অস্বাভাবিক মৃত্যু ছোট মেয়ের জীবনে ছায়া ফেলবে না তো?

যে গিয়েছে সে আর ফিরবে না। কিন্তু যে রয়ে গেল? তাকে নিয়েই যাবতীয় চিন্তা, আশা-নিরাশা বিশ্বনাথ-পম্পার। তাদের ছোট মেয়ে। মাত্র ১২-১৩ বছরের মেয়েটি স্কুলে যায়। আগামীতে কী কী প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হবে তাকে?

পুলিশ জানিয়েছে, গলায় ওড়না দিয়ে ফাঁস দেওয়া অবস্থায় বিদিশার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ঘরের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ ছিল। বিদিশার মরদেহের পাশ থেকে একটি সুইসাইড নোটও পাওয়া গেছে। মডেল পল্লবীর অস্বাভাবিক মৃত্যুর পর ফেসবুকে তা নিয়ে মন্তব্য করেছিলেন বিদিশা। বুধবার (২৫ মে) তার মৃত্যুরহস্য নিয়ে চর্চায় উঠে এলো অভিনেত্রীর সেই ফেসবুক পোস্ট।

ফেসবুক পোস্টে বিদিশা লিখেছিলেন, ‘মানে কী এ সব’। ফেসবুকে পল্লবীর ছবি শেয়ার করে পোস্ট করেছিলেন বিদিশা। তাতে তিনি এও লিখেছিলেন, ‘মেনে নিতে পারলাম না’। ওই ঘটনার ১০ দিনের মধ্যেই নাগেরবাজারের ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হলো বিদিশার ঝুলন্ত মরদেহ। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহটি সাগর দত্ত মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়। এ ঘটনায় অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা করা হয়েছে বলে জানায় পুলিশ।

গত ১৫ মে গড়ফার ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয়েছিল অভিনেত্রী পল্লবী দের ঝুলন্ত মরদেহ।

এসএইচ-১৬/২৭/২২ (বিনোদন ডেস্ক, সূত্র: এবিপি আনন্দ)

হতাশার দিনেও অনন্য কীর্তি সাকিবের

ঢাকা মিরপুর টেস্টে বাংলাদেশের হতাশার পরাজয়ের পরেও উজ্জ্বল সাকিব আল হাসান। অলরাউন্ডিং নৈপূণ্যে আবারো জাত চেনালেন টাইগার ক্রিকেটের এই পোস্টারবয়। দশমবারের মতো একই টেস্টে বল হাতে অন্তত ৫ উইকেট নেয়ার পাশপাশি ব্যাট হাতে হাঁকালেন ফিফটি।

সাদা পোশাকে আবারো হতাশা। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ঘরের মাঠেও সিরিজ হারল বাংলাদেশ। মিরপুরের ফ্ল্যাট উইকেটেও লজ্জার ব্যাটিং টাইগার ব্যাটারদের। দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশ গুটিয়ে যায় মাত্র ১৬৯ রানে। বাংলাদেশের হয়ে দুই সংখ্যার ঘরে পৌঁছাতে পারে মোটে তিনজন। আর সহজ লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে, লঙ্কানরা জয় তুলে নেয় ১০ উইকেটের বড় ব্যবধানে।

অবশ্য টেস্টে বাংলাদেশি টপ অর্ডারদের এমন ব্যর্থতা নতুন কিছু নয়। চলতি বছরেই ষষ্ঠবারের মতো ৬০ রানের আগে সাজঘরে ফেরেন পাঁচ ব্যাটার। এর মধ্যে ডারবানে মাত্র ১৬ ও মিরপুরে মাত্র ২৪ রানেই হারায় দলের অর্ধেক উইকেট । এমন ব্যাটিং ব্যর্থতার মাঝেও দলের হয়ে সর্বোচ্চ রান সাকিব আল হাসানের ব্যাটে। বল হাতে তো আগেই অবদান রেখেছিলেন, কঠিন সময়ে ব্যাট হাতেও ভরসার প্রতীক এ অলরাউন্ডার।

এদিন ক্যারিয়ারের ২৭তম টেস্ট ফিফটি তুলে নেন সাকিব। বল হাতে ৫ উইকেটের পর এমন কীর্তি দশমবারের মতো দেখা গেলো এ অলরাউন্ডারের কাছ থেকে। ক্রিকেটের ইতিহাসে সাকিবের চেয়ে এমন কিছু বেশিবার করার রেকর্ডটা কেবল ইয়ান বোথামের। বোথাম-সাকিব ছাড়া এমন রেকর্ড আছে অন্য ক্রিকেটারদেরও। তবে ব্যবধানটা অনেক বেশি। ৬ বার করে এই রেকর্ড রবি অশ্বিন ও রিচার্ড হ্যাডলির দখলে। ৫ বার করেছেন ভারতীয় অলরাউন্ডার রবীন্দ্র জাদেজা।

সাকিব ছাড়া মিরপুর টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে হাফ সেঞ্চুরি করেছেন লিটন দাসও। দুর্দান্ত ছন্দে থাকা এ ব্যাটার এদিন স্পর্শ করেছেন লাল বলে দুই হাজার রানের মাইলফলক। সব মিলিয়ে অষ্টম বাংলাদেশি হিসেবে এমন নজির লিটনের। তবে দ্রুততার হিসেবে, এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার আছেন তিন নম্বরে। ৫৬ ইনিংসে প্রায় সাড়ে ৩৬ গড়ে এ রান করেছেন তিনি।

এসএইচ-১৫/২৭/২২ (স্পোর্টস ডেস্ক)