বন্ধ্যাত্ব জনিত সমস্যার প্রাকৃতিক সমাধান

বন্ধ্যাত্ব জনিত

প্রত্যেক মানুষ চায় বিয়ে করে নতুন সংসার শুরু করতে। একজনের মধ্যে যে অপূর্ণতা আছে তা আরেকজন সঠিক মানুষকে বেছে নিয়ে জীবনের পথ চলার সঙ্গী করে নিতে। আর এই নতুন সাংসারিক দাম্পত্য জীবন পূর্ণতা পায় যখন স্বামী স্ত্রীর মধ্যে এক নতুন জীবন আসার ইঙ্গিত দেয়। প্রত্যেক বিবাহিত দম্পতি চায় তাদের জীবনে সন্তান আসুক। নিজেদের সমস্ত ভালোবাসা এবং সামর্থ্য উজাড় করে সেই সন্তান বড় করে তোলা যে কোন স্বামী স্ত্রীর প্রধান দায়িত্ব হয়ে পড়ে। নিজেদের সমস্ত চাওয়া পাওয়া, স্বপ্ন সব কিছু তাকে ঘিরেই আবর্তিত হয়।

কিন্তু এই স্বপ্নের অন্তরায় হতে দাঁড়াতে পারে বন্ধ্যাত্ব। হ্যাঁ, এটা এমন এক বিষয় যা একটা সাংসারিক জীবন দুর্বিষহ করে তুলতে পারে। বন্ধ্যাত্ব যেকোনো দম্পতির সন্তান কামনার চাহিদার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। অনেকেই এই ক্ষেত্রে স্ত্রীকে বা বাড়ির বউ কে বেশিরভাগ সময় দায়ী করেন। কিন্তু ঘটনা চক্রে দেখা যায় যে এই সমস্যা শুধুমাত্র মহিলাদের সাথেই হয় না। পুরুষরাও একইভাবে এই সমস্যার স্বীকার। কিন্তু পুরুষতান্ত্রিক সমাজে বেশিরভাগ সময়েই স্ত্রীকে দায়ী করা হয়। কিন্তু ঠিক পথ হলো এই সময় একে অপরকে দোষ না দিয়ে সঠিক নিরাময় বা চিকিৎসার খোঁজ করা। আধুনিক বিজ্ঞানের অগ্রগতির সুফলে বন্ধ্যাত্ব নিরাময় করা সম্ভব।

আজকের আলোচনায় আমরা তুলে ধরার চেষ্টা করবো কীকরে সাধারণ ভাবে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

সমাধান খোঁজার আগে জানা দরকার কী কী কারণে পুরুষ এবং মহিলার বন্ধ্যাত্ব হয়।

মহিলাদের ক্ষেত্রে যে কারণে এই সমস্যা হয় তা নিচে জানানো হলো;

-জনন গ্রন্থির শারীরবৃত্তিয় পথে কোনো বাধা থাকলে,

-শরীরে অতিরিক্ত প্রলাক্টিন থাকলে,

-পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম থাকলে,

-অতিরিক্ত বয়স্ হলে,

-অতিরিক্ত টেনশন বা দুশ্চিন্তা বা অবসাদ থাকলে।

পুরুষদের ক্ষেত্রে যে কারণে সমস্যা হয় তা হলো;

– অতিরিক্ত স্ট্রেস থেকে,

– স্পার্ম কাউন্ট কম থাকলে,

– বয়স বেড়ে যাওয়ার কারণে

এখন সাধারণ ভেবে কীকরে এই বন্ধ্যাত্ব সমস্যার মোকাবিলা করা যায় সেই বিষয়ে এখানে কিছু পথ তুলে ধরার চেষ্টা করা হলো।

১. অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার খান

অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার খেলে শরীরের জনন গ্রন্থি গুলোকে আক্রমণ কারী পদার্থ গুলোকে বিনাশ করে এবং তাদের ক্ষতিকারক হাত থেকে বাঁচায়। একই সাথে গর্ভধারণ করার ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে। এর পাশাপাশি স্পার্ম কাউন্ট বৃদ্ধি করে। যেকোনো ধরনের সবজি, ভিটামিন সি এবং ই সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া এ জন্যে ভালো।

২. সকালের খাবার বড়ো

সকালের খাবার সবসময় চেষ্টা করুন বড়ো করার দিনের অন্যান্য খাওয়া থেকে। সুস্থ্য ডায়েট যদি চান অবশ্যই দিনের প্রথম খাবার ভালো হতে হবে। অনেকে মনে করেন যে সমস্ত মহিলারা পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম থেকে আক্রান্ত, তাদের ক্ষেত্রে হেভী ব্রেকফাস্ট অনেকটাই কাজ দেয়।

৩. ট্রান্স ফ্যাট

এই সময় চেষ্টা করুন ট্রান্স ফ্যাট সমৃদ্ধ খাবার না খেতে। সাধারণত মার্জারিন, প্রসেসড ফুড এবং অন্যান্য খাবার যাতে ফ্যাট বেশি আছে এড়িয়ে যাওয়া দরকারী। এর সাথে কম কার্বোহাইড্রেট খাওয়া শুরু করুন ডায়েটে। এতে শরীরে ইনসুলিনের লেভেল কমবে।

৪. মাল্টিভিতামিন

যেসব মহিলারা শরীরের প্রয়োজন অনুযায়ী মাল্টি ভিটামিন খান, তাদের বন্ধ্যাত্ব জনিত সমস্যা অনেক কম হয় বা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এর সাথে গ্রীন টি, ভিটামিন ই এবং ভিটামিন বি৬ সমৃদ্ধ খাওয়া দরকারী।

৫. নেশা বর্জন করুন

অতিরিক্ত অ্যালকোহল খাওয়া কমান। ধূমপানের নেশা থাকলে তা ক্ষতিকর কারণ পুরুষের স্পার্ম কাউন্ট কমায়। একইসাথে ক্যাফেইন জাতীয় পানীয় খাওয়া বন্ধ করুন বা পরিমিত সেবন করুন।

৬. শরীরচর্চা

প্রয়োজনের অতিরিক্ত বসে থাকলে শরীরে অতিরিক্ত ফ্যাট জমতে থাকে। যা ক্ষতিকর। তাই অবশ্যই নিয়মিত শরীরচর্চা করুন এবং আয়রন সমৃদ্ধ খাবার খান প্রচুর পরিমাণে। সাথে খান সেই সব ফল যা প্রাকৃতিক ভাবে আয়রনের পর্যাপ্ত যোগান হিসাবে পরিচিত।

আরএম-১৪/২৯/০৫ (স্বাস্থ্য ডেস্ক, তথ্যসূত্র: সংবাদপ্রতিদিন)